উন্মেষ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভৌতিক অভিজ্ঞতা
আমার হিসেবটা সহজ। ভয় যদি না পেতে চাও, তা হলে ভৌতিক জায়গার মুখোমুখিই হয়োই না! ছোট থেকেই এ বিষয়টা মেনে চলি আমি। এমনিতে খুব যুক্তিবাদী ছেলে বলে সুনাম আছে কিন্তু আমার। তবে তেনাদের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলি না! তার কারণ, কোনও ভৌতিক জায়গায় গেলে আমার ভিতরকার সত্তাই আমায় বলে দেয়, সেখানে কিছু তো রয়েছে! জানি না, হয়তো নিজে গল্প লিখি বলে আমার মধ্যে এই সত্ত্বাটা কাজ করে। যাই হোক, মূল ঘটনাটা বলি। আমার বাড়ি বাঁকুড়ায়। বহু বছর আগে কলকাতায় পড়াশোনার জন্য এসে কসবায় এক বন্ধুর সঙ্গে একটা ফ্ল্যাটে থাকতাম।
একদিন রাতে আমরা নিজেদের ঘরে রয়েছি। এমন সময়ে ঘরের দেওয়ালে ‘দুম দুম’ করে আঘাত করার মতো আওয়াজ! যেন কেউ কিছু একটা ঠুকছে দেওয়ালে। আমাদের ফ্ল্যাটের দেওয়ালে কিন্তু খুব বেশি চওড়া গাঁথনিও ছিল না। ঘরে আমি আর আমার দুই বন্ধু, আওয়াজ শুনে তিন জনেরই অবস্থা কাহিল। তার পরেই শুরু হল দরজায় ধাক্কা। আমরা ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে গিয়েছিলাম। এই পর্যন্ত পড়ে যাঁরা ভয় পেয়েছেন, তাঁদের হয়তো একটু হতাশ করব। আসলে জানেন কি, সে রাতে আমাদের ঘরের চার পাশে এমন তাণ্ডব কে চালিয়েছিল?
আমাদেরই এক প্রতিবেশী মহিলা। পাশের ফ্ল্যাটেই থাকতেন তিনি। বেশ বয়স্ক মানুষ। তবে একাই থাকতেন তিনি। স্বামী মারা গিয়েছেন বহু আগেই। ছেলে-মেয়েরা কর্মসূত্রে বাইরে। আমরা শুনেছিলাম তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। অনেক সময়ে কসবা থানায় চলে যেতেন প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে। আর এক বার তো আমাদেরই পরিচারিকাকে তাড়া করেছিলেন বঁটি নিয়ে। হয়তো কিছুটা ভয়েই, আমরাও এড়িয়ে চলতাম তাঁকে। তিনিই দরজায় ধাক্কা দিচ্ছিলেন। আমরা সেটা পরে জানতে পারি। মিথ্যে বলব না, সেই রাতে খুব ভয় পেয়েছিলাম আমরা তিন জনেই।