পুজোর সময় ঠিক কী হয়েছিল অভিনেতা বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের?
জানেন কি? পর্দার মহানায়কের জন্মদিন আর ময়দানের মহানায়কের জন্মদিন একই তারিখে! সেপ্টেম্বরের ৩। মাত্র দিন চারেক আগে এ বছর তো উত্তমকুমার আর ব্যারেটোর সেই যুগ্ম জন্মদিনে মোহনবাগান ডুরান্ড চ্যাম্পিয়নও হয়েছে যুবভারতীতে ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে।
ব্যারেটোর এক যুগেরও বেশি খেলা সেই প্রিয় মোহনবাগান। আর উত্তমকুমার তো বরাবর মোহনবাগান সমর্থক ছিলেন। টলিউডের এক সময়কার দাপুটে ভিলেন বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ও সবুজ-মেরুন জার্সির ভক্ত। বিপ্লবের দুর্গাপুজো বলে প্রসিদ্ধ দেশপ্রিয় পার্ক লাগোয়া প্রায় শতবর্ষ ছুঁইছুঁই মাতৃ-মন্দিরের বারোয়ারি পুজো।
স্বভাবতই চিত্রতারকার পুজোয় নানান জগতের সেলিব্রিটিদের প্রধান অতিথি হয়ে উপস্থিত থাকাটা খুব সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু ব্যারেটোকে একবার বিপ্লব তাঁর দুগ্গাপুজোর প্যান্ডেলে এনে যা ফ্যাসাদে পড়েছিলেন!
হয়েছিল কী, মাঠের দাপুটে ব্যারেটো এমনিতে খুব ধর্মভীরু। নিয়মিত বাইবেল পড়েন। বিপ্লবের পুজোয় এসে ব্যারেটো ফস করে জানতে চান, ‘ডুগগা গডেসের দশ হাতে ওগুলো কি? দশটাই ওয়েপন? কোনটাকে কী বলে?’
ব্যারেটোর প্রশ্নের মুখে পড়ে তখন বিপ্লবের টেনশনে গায়ে ঘাম দেওয়ার জোগাড়। মনে মনে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের শরণ নিচ্ছেন। মহালয়ার পূণ্য ভোরে রেডিয়োয় 'দুগর্তিনাশিণী'তে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের সেই অমর স্তোত্রপাঠের শরণাপন্ন ব্যারেটোর সামনে সেই মুহূর্তে বিপ্লব। প্রাণপণ মনে করার চেষ্টা চালাচ্ছেন, 'দুর্গতিনাশিণী'র ঠিক সেই জায়গাটার। যেখানে ভদ্রবাবু দেবী দুর্গার দশ হাতের দশ অস্ত্রের ব্যাখ্যা করেছেন।
আর সেই তার থেকে খামচেখুমচে কিছুটা, কিছুটা নিজের মতো করে বানিয়ে ব্যারেটোর প্রশ্নবাণ সেদিন পুজো প্যান্ডেলে দাঁড়িয়ে বিপ্লব দেবী দুর্গার দশ অস্ত্রের কোনটা কী-কেন ব্যাখ্যা করে রেহাই পেয়েছিলেন!
বাগানের সবুজ তোতা খুশি। তার চেয়েও বেশি নিশ্চিন্ত টলিউডের এককালের ডাকসাইটে ভিলেন। ব্যারেটোর প্রশ্নের শটের সামনে 'গোল' বাঁচাতে সেদিন বিপ্লবের কাছে পিকে-অমল-সুভাষ-সুব্রত সব কোচের চেয়েও বড় কোচ হয়ে পরিত্রাতা ছিলেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র!
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।