কখনও সত্যি, কখনও নিছক মস্করা! অভিনেতাদের অভিজ্ঞতার কথা শুনে হাড় হিম হবে আপনাদেরও!
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়- স্বয়ং ইন্ডাস্ট্রি! তবু রেহাই পাননি ভূতেদের থেকে। কেরিয়ারের প্রথম দিকে অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় কাজের চাপে বাড়ি ফিরতে পাড়তেন না প্রায়শই। ভোর ৩টেয় কাজ শেষ করে আবার পরের দিনের শিফট থাকত ভোর ৫ টায়। অগত্যা ইন্দ্রপুরী স্টুডিয়োতেই রাত কাটাতে হত বুম্বাদাকে।
কর্তৃপক্ষের তরফে স্টুডিয়োর ২ নং ঘরে থাকতে নিষেধ করা হয়েছিল সকলকেই। কিন্তু স্টুডিয়োয় রাত কাটাতে গিয়ে বুম্বাদা নাকি স্পষ্ট শুনতে পেতেন হাসি, কান্না, দেওয়ালে আঁচড়ানোর শব্দ। ভয়ে কান চাপা দিতেন, ঘুম আসত না অনেক রাতেই!
পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়- বর্ষীয়ান অভিনেতা পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আবার মনে করেন ভয়ের মধ্যেও একটা রোমাঞ্চ আছে। তিনি ভীতু নন মোটেও। তবে ভয় পেয়েছিলেন একবার যুবক কালে।
অভিনেতা এক বার নিজের পিসির বাড়ি গিয়েছিলেন ছুটিতে। হঠাৎ রাতের বেলায় পিয়ানোর শব্দে ঘুম ভেঙে যায় তাঁর। এ দিকে তাঁর পিসি কানে কম শোনেন। ফলে সাহস জড়ো করে পিয়ানোর ঘরে যান অভিনেতা। বাক্স খুলে দেখেন একটি ধেড়ে মা ইঁদুর বাচ্চাদের কাগজের টুকরো খাওয়াচ্ছে। আর তাতেই বেজে উঠছে পিয়ানো! আদতে ভয় হল মনের অন্ধকার, এমনটাই মনে করেন প্রবীণ অভিনেতা।
ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় – ‘যেখানে ভূতের ভয়’ ছবিতে কাজ করার সময় গায়ে কাঁটা দেওয়া এক অভিজ্ঞতা হয় অভিনেতা ভাস্বরের। ছবির এক দৃশ্যে স্বয়ং সত্যজিৎ রায়ের ব্যবহার করা জামা ও ঘড়ি পড়েছিলেন অভিনেতা। যদিও ঘড়িটি বন্ধ ছিল, সময় দেখাচ্ছিল ১০টা।
ক্যামেরা চলছে। অন্ধকার চারদিক। অভিনেতা আবীর চট্টোপাধ্যায় ভাস্বরের উদ্দেশে সংলাপ বলছেন- ‘‘অনিল বাবু, দেখুন তো আপনার ঘড়িতে কটা বাজে?’’ ভাস্বর ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখেন ৫.১৫। বিস্ময়ের ঘোর কাটতে বেশ কিছুটা সময় লেগেছিল ভাস্বরের।
বিরসা দাশগুপ্ত- অবসরে পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে ইউরোপ গিয়েছিলেন পরিচালক। সেখানে ঐতিহ্যময় শহর ফ্লোরেন্সের রাস্তায় হাঁটছিলেন সকলে।
সরু রাস্তা ধরে একে একে এগোচ্ছেন সকলে। হঠাৎ বিরসা খেয়াল করেন, লাইনের প্রথম জন থেমে গিয়ে ফিরে তাকিয়ে আছেন। সেই মতো লাইনের দ্বিতীয়, তৃতীয় সকলেই। এ বার বিরসার পালা। তিনি বুঝলেন, কিছু একটা চলে গেল। অস্তিত্ব আছে, কিন্তু অদৃশ্য। কিছু ক্ষণের জন্য হতবাক হয়ে যান প্রত্যেকেই!
সোহম চক্রবর্তী – তখন সবে মাত্র বিয়ে করেছেন অভিনেতা সোহম। বেহালায় নতুন ফ্ল্যাটে থাকার পরিকল্পনা করেছেন। কিন্তু সারাক্ষণ যেন কোনও মহিলার চাপা কান্নার আওয়াজ। পরিবারের সকলে একটু ভয় পেলেন।
ভৌতিক বিষয়ে জানেন, এমন মানুষকে ডেকে পাঠানো হল শেষে। তিনি বললেন, ওই জায়গায় ফ্ল্যাট তৈরি হওয়ার আগে নাকি এক মহিলা গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন সেখানেই। শুনে শিউরে ওঠে অভিনেতার গোটা পরিবার।
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় – সিনেমার সমারোহতে যোগদান করতে অভিনেতা পরম ব্রত এক বার জামশেদপুর গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন অভিনেতার মা-ও।
হোটেলের ঘরে এক জনের উপস্থিতি খেয়াল করে সে কথা অভিনেতা জানান নিজের মাকে। তবে ভয় পেয়েছিলেন, যখন শোনেন একই অনুভুতি হয়েছে তাঁর মায়েরও!