তৃণা সাহা
জমজমাট যৌথ পরিবার। এ রকম পরিবেশে পুজোর মেজাজটাই অন্য রকম হয়ে যায়। বাড়ির ছোট-বড় সব সদস্যই একসঙ্গে মেতে ওঠে আনন্দে। উৎসবের এমন আমেজেই গোটা ছোটবেলাটা কেটেছে আমার। পর্দার ‘গুনগুন’-এর কাছে তাই ছোটবেলার দুর্গা পুজো তাই সব সময়েই স্পেশাল।
পুজো আসছে, নতুন জামাকাপড় কিনতে হবে- এই ভাবনা থেকেই পুজো শুরু হয়ে যেত আমাদের। তার পরে বেশ কয়েকটা দিন জমিয়ে কেনাকাটা। যৌথ পরিবারে বাড়ির বড়দের সঙ্গে সবাই মিলে হইচই করে নিউ মার্কেটে পুজোর কেনাকাটা, রেস্তরাঁয় খাওয়া।
চারদিনে দু’বেলা দুটো করে আটটা জামা চাই-ই চাই। সালোয়ার কামিজ আমার পছন্দের পোশাক। আটটা নতুন জামার মধ্যে সালোয়ার-কামিজ থাকতেই হবে। ভাই-বোনেরা একই রকম জামা কিনতাম আমরা। একসঙ্গে ঠাকুর দেখতে বেরোলে সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকত। ওই চার দিন এক্কেবারে স্বাধীন! রাত দশটায় বাড়ি ফিরলেও বকুনি খাওয়ার ভয় ছিল না।
আর পুজো প্যান্ডেলে প্রেম? সে যে ক-ত-বার প্রেমে পড়েছি! কেউ হয়তো আমায় দেখছে, আমি আবার অন্য কাউকে! এই লুকিয়ে দেখাদেখির মধ্যেই ভাললাগার শুরু। সেই রেশ কখনও কখনও অনেক দিন থেকে যেত। আবার কেটেও যেত আস্তে আস্তে।
এখন অবশ্য পুজোর মজাটা অন্য রকম। নীলের সঙ্গে বিয়ের পরে এখন আর প্ল্যান করে কিছু হয় না। পুজোর সময়ে অনেক কাজ থাকে। আগে থেকে কিছুই ঠিক করে রাখতে পারি না। এ বারের পুজোয় যেমন বেশ কয়েকটা অনুষ্ঠান রয়েছে। আমার আর নীলের একসঙ্গে শো আছে। পুজোর উদ্বোধন, কলকাতার বাইরে শো- সব কিছু মিলিয়ে এখনও ঠিক করে উঠতে পারিনি দু’জনে একান্তে কতটা সময় কাটাতে পারব! তবে হ্যাঁ, যত টুকু সময় পাব, চুটিয়ে মজা করব।
এই সময়টায় ডায়েট চার্টের ছুটি। পুজোয় আবার ডায়েট কী! আমি খেতে খুব ভালবাসি। চার দিন জমিয়ে সব খাব। তবে এখন আর ছোটবেলার মতো পুজোর ভিড়ে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরে ঠাকুর দেখা হয়ে ওঠে না। তারকা হওয়ার এটা একটা বড় অসুবিধে। তবে সুবিধেও আছে কিন্তু। কোনও পুজোয় গেলে লাইন দিতে হয় না! ফাঁকায় ফাঁকায় দিব্যি ঠাকুর দেখতে পারি। মণ্ডপে ঢোকার আগে শুধু খানকতক সেলফি তুলতে হয়!