প্রতিবাদ, সাহসী কাজ, বিতর্ক- এ সব যেন তাঁর কাছে একই বইয়ের বিভিন্ন অধ্যায়। এক সময়ে চুটিয়ে অভিনয় করেছেন প্রসেনজিৎ থেকে চিরঞ্জিত, সবার সঙ্গেই। রূপ ও অভিনয়ের বলিষ্ঠতায় জয় করেছেন আপামর বাঙালির মন। পরিচিতি রয়েছে পশুপ্রেমী রপেও। সেই শ্রীলেখা মিত্র কথা বলা মানেই যেন বির্তক! ক’দিন আগেই পিঠে মেহেন্দি করে ট্রোলের শিকার হয়েছেন। তবে এ বারে ছোটবেলার পুজোর স্মৃতি থেকে কলেজের প্রেম নিয়ে অকপট অভিনেত্রী। একদম অন্য মেজাজে ধরা দিলেন টিম আনন্দ উৎসবের কাছে। এ বার পুজোয় কলকাতায় থাকতে চান না তিনি। বরং ইচ্ছে কোনও এক গ্রামে নিরিবিলিতে পুজো কাটানোর। এখনকার থিম পুজোর জাঁকজমক আর ভাল লাগে না শ্রীলেখার। তাঁর মতে, আজকালকার পুজোয় আগের মতো আন্তরিকতা আর তিনি খুঁজে পান না। বাবা-মায়ের মৃত্যুর পরে অভিভাবকহীন পুজোয় এক মন খারাপ ঘিরে থাকে। তাই আন্তরিকতার ছোঁয়া পেতে কলকাতার বাইরেই পুজোর দিনগুলো কাটাতে চান শ্রীলেখা। ছোটবেলার পুজো বলতেই তাঁর কাছে তাঁর পাড়া। বন্ধুরা মিলে আড্ডা, মায়ের সঙ্গে অঞ্জলি দেওয়া-সহ আরও অনেক স্মৃতি। সকাল থেকে দিনভর প্যান্ডেলে, তার পর ভোগ খেয়ে দুপুরের একটা ছোট্ট ঘুম দিয়ে আবার সন্ধে হতে না হতেই প্যান্ডেলে ফেরা। ছিল আশপাশের ঠাকুর দেখতে যাওয়ার মজাও। আর ছিল দু’বেলা নতুন জামা পরার আনন্দ। অভিনেত্রীর কথায়, কলেজ জীবনেও এই মজা ছিল পুজোতে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে সব কিছুই। পেশাগত জীবনে পা রাখার পরেই বদলে গেছে পুজো কাটানোর ধরন। অভিনেত্রীর কথায় মাতৃ প্রতিমার মুখের মধ্যে তিনি খুঁজে পান নিজের মায়ের মুখ। সেটা না পেলে তাঁর কাছে পুজোটাই খুব অসম্পূর্ণ। তাই বিসর্জনের সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ঘিরে ধরে মাতৃবিচ্ছেদের যন্ত্রণাও।
পুজোর প্রেমের কথা উঠতেই শ্রীলেখার গলায় আক্ষেপের সুর। অভিনেত্রীর কথায়, “দূর! আমার এখন প্রেমই হয় না। আর পুজোর প্রেম! আমি তো চাই আমার একটা জমজমাট প্রেম হোক।” তিনি নাকি এখন আর প্রেমিকই খুঁজে পান না। পুজোর প্রেম হয়েছিল সেই কিশোরীবেলায়। চোখে চোখে কথা, সেই ছেলের জন্য একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা, উৎসবের দিনগুলো পেরিয়ে আর যোগাযোগ না হওয়ার আক্ষেপ- এই ছিল তাঁর পুজোর প্রেম। কলেজ জীবনে ভালবাসা এসেছে। সময় কেটেছে প্রিয় মানুষটার সঙ্গে। তবে অভিনেত্রীর কথায়, “প্রেমটা ভীষণ গদগদ ছিল না। বোধহয় এক বার চুমুই হয়েছিল শুধু, আর কিছুই হয়নি।” মায়ের কাছে বর চাইতে বললে অভিনেত্রীর উত্তর- তিনি মায়ের কাছে চান শান্তি। যত দিন বাঁচবেন যেন সুস্থ ভাবে বাঁচতে পারেন। এবং প্রিয়জনের বিয়োগ যন্ত্রণা পাওয়ার আগেই যেন তাঁর মৃত্যু হয়।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।