Sohini Sengupta

Sohini Sengupta: ‘আগে মহালয়ার ভোরে মা উঠতে বললে রাগ করতাম, এ বার নিজেই উঠলাম’: সোহিনী

গত ১৬ জুন মা, স্বাতীলেখা সেনগুপ্তের মৃত্যুর পর বদলে গিয়েছে তাঁদের সকলের জীবন। মহালয়ার সন্ধ্যায় অনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে সে সব কথাই ভাগ করে নিলেন অভিনেত্রী সোহিনী সেনগুপ্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২১ ২০:২৪
Share:

‘‘আগে মহালয়ার ভোরে মা উঠতে বললে রাগ করতাম। এ বার নিজেই উঠলাম। কেমন ফাঁকা লাগছিল চারপাশ।’’

মাকে ছাড়া এ বারই তাঁর প্রথম পুজো। সব যেন অন্য রকম মনে হচ্ছে। গত ১৬ জুন মা, স্বাতীলেখা সেনগুপ্তের মৃত্যুর পর বদলে গিয়েছে তাঁদের সকলের জীবন। মহালয়ার সন্ধ্যায় অনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে সে সব কথাই ভাগ করে নিলেন অভিনেত্রী সোহিনী সেনগুপ্ত।

বাবা রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তের বাড়িতেই ছিলেন মঙ্গলবার রাত থেকে। বুধবার মহালয়া। সকলে একসঙ্গে ভোরে উঠে গান শুনতেন। এ বারও সে নিয়মে বদল আসেনি। শুধু স্বাতীলেখা ছিলেন না। সোহিনী বলেন, ‘‘কেমন ফাঁকা লাগছিল চারপাশ। মায়ের ঘরেই ঘুমিয়েছিলাম কাল রাতে। আগে মহালয়ার ভোরে মা উঠতে বললে রাগ করতাম। বলতাম পরে শুনে নেব। আর মা জোর করে তুলে দিত। এ বার নিজেই উঠলাম।’’

Advertisement

‘‘মায়েরই ছিল পুজো। বাবা আর আমি তো শুধু সঙ্গ দিতাম,’’ বললেন সোহিনী।

তবে মায়ের নিয়মেই পরিবার চলছে। প্রতি বার মহালয়ায় লুচি হয় বাড়িতে। বুধবারও কাজে বেরোনোর আগে বাড়িতে লুচির ব্যবস্থা করে রেখেছেন সোহিনী। বলেন, ‘‘বাবা আর আমি তো শুধু সঙ্গ দিতাম। মায়েরই ছিল পুজো। মহলয়ায় লুচি হবে। অষ্টমীতে নিরামিষ খাওয়া। নবমীতে আবার মাছ না খেলে চলবে না। পুজোয় নতুন শাড়ি না পরলে আবার হয় না কি! কত কী যে বলত মা।’’ মায়ের নিয়মেই একসঙ্গে সে ভাবে বেঁধে থাকার অভ্যাস হয়েছে তাঁদের। সে কথাই বার বার মনে পড়ছে সোহিনীর।

সকলকে নিয়ে আনন্দে মাততে পছন্দ করতেন স্বাতীলেখা। ওই ক’টি দিন বিকেল চারটের মধ্যে সপরিবার বেরিয়ে পড়তেন ঠাকুর দেখতে। সোহিনী বলেন, ‘‘শুধু যে দিন দলের নাটকের শো থাকত, সে দিন ছিল আমাদের পুজো দেখা থেকে ছুটি।’’ এ বার মা নেই, তাই কলকাতায় থাকতে ইচ্ছা করছে না রুদ্রপ্রসাদ-সোহিনী-সপ্তর্ষির (মৌলিক)। তিন জন চলে যাচ্ছেন পাহাড়ে। পুজোর ক’টি দিন মুসৌরিতে কাটাবেন। এ বছর নান্দীকারের পুজোর নাটকও বাতিল হয়েছে। মন ভাল নেই কারও।

সোহিনীর পুজো মানেই ছিল সবটা তাঁর মাকে ঘিরেই।

তবে এ ভাবে মন খারাপ করে মোটেই সব পজো কাটাবেন না সোহিনীরা। ঠিক সামলে উঠবে স্বাতীলেখার পরিবার। সোহিনী বলেন, ‘‘মা সকলকে নিয়ে আনন্দে বাঁচতে পছন্দ করত। আমরাও সে ভাবেই থাকার চেষ্টা করব। পরের বার থেকে যেন পুজোর শো হয়, সে চেষ্টাও থাকবে। অনেক সাজব, ঠাকুর দেখব। মায়ের মতো করেই পুজো কাটানোর চেষ্টা করব। তবে বড়ই কষ্ট। সে কাজ যে সহজ নয়।’’

মায়ের কথা বলেই চলেন সোহিনী। মন খারাপ করে থাকতে চান না। তবু মন ভালও যে হচ্ছে না। পুজো মানেই ছিল সবটা তাঁর মাকে ঘিরেই। পুজোর নতুন পোশাক স্বাতীলেখা পছন্দ করে দিতেন। তা পরার জন্য তাড়াও দিতেন তিনি। এ বছর নতুন পোশাক কেনেননি সোহিনী। বলেন, ‘‘আগের বছর পুজোয় মা এত উপহার দিয়েছে, আমার আগে কী বা লাগবে!’’

দশমীর দিন অনেক ব্যস্ততা থাকত সোহিনীর। স্বাতীলেখা ঘুগনি বানাতেন। দলের সকলে দেখা করতে আসতেন যে। সোহিনীর দায়িত্ব পড়ত মটর ডাল বেছে রাখার। বলেন, ‘‘নাড়ু পাকানোও ছিল আর এক কাজ। সেই ছোট থেকে করে আসছি। যে প্রণাম করতে আসবে, তাকেই মা নারকেলের নাড়ু দিত। অনেক নাড়ু বানানো হত বাড়িতে।’’

সময় বদলেছে। দশমীর দায়িত্বও এ বার আর নেই। তবু মায়ের পছন্দ-অপছন্দের কথা মনে রাখেন সোহিনী। মায়ের স্মৃতি আগলে সকলকে নিয়ে এগিয়ে চলাই এখন তাঁর লক্ষ্য। বলেন, ‘‘বাবাকে ভাল রাখতে হবে তো!’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement