এই কিছু দিন হল, আমি শ্বশুরবাড়ি শিফট করেছি। এরই মধ্যে পুজো এসে গেল। তাই কেনাকাটা,ওই টুকটাক চলছে। দুই বাড়ির বড়দের জন্য...নিজেদের জন্য...।
অভিমন্যুর সঙ্গে এর আগেও অনেক পুজো কাটিয়েছি। তবে এ বার একটু আলাদা। বিয়ের পর প্রথম পুজো। অনেকেই জিজ্ঞাসা করছেন, “শ্বশুর বাড়ি এলি, রান্না করছিস নিশ্চয়ই? আর কাজ?”...
সত্যি কথা বলব, ভাগ্য করে এমন একটা শ্বশুরবাড়ি পেয়েছি। নিজের বাড়িতে যেমন থাকতাম, এখানেও ঠিক তেমনই। এই যে আমরা শ্বশুরবাড়ি-বাপের বাড়ি ভাগ করে নিই আমার মনে হয় তাতেই সমস্যাটা তৈরি হয়। দু’টোই বাড়ি। আমাদের বাড়ি। ছুটির দিনে বাড়িতে ১১টায় ঘুম থেকে উঠতাম আমি। এখানেও তেমনি। আর রান্নাবান্না! করতে দিলে তো। কোনও দিন একটু ইচ্ছে হল রান্না করব, স্পেশাল কিছু, গিয়ে বানালাম...এ টুকুই। তার মানে এই না যে আমি রান্না করতে পারি না। পারি সবই, কিন্তু ওই যে বললাম, এতটা আদরে রাখে ওরা।
আরও পড়ুন: অষ্টমীর সন্ধ্যায় ধুনুচি নাচে ফার্স্ট প্রাইজ বাঁধা ছিল
যাক গে, কী বেশ বলছিলাম, পুজোর কথা। হ্যাঁ, এ বার মনটা একটু খারাপ। অন্যান্য বার আড্ডা-মজার পাশাপাশি ‘ওপেনিং’ ও থাকে। এ বার করোনার কারণে সে সব নেই। শুধু আমার কথাই বলছি না, অনেক মানুষ রয়েছেন যাঁদের কাছে এই পুজোর সময়টুকুই রোজগারের সময়। পড়ছিলাম, ঢাকিরা এ বার বায়না পাচ্ছেন না। এ রকম আরও কত মানুষ রয়েছেন। খারাপ লাগছে খুব।
অভিমন্যুর সঙ্গে এর আগেও অনেক পুজো কাটিয়েছি।
যাই হোক, কী করা যাবে! নিউ নর্মাল। আমার দুই বাড়ির মধ্যে দশ মিনিটের ফারাক।যাতায়াত লেগেই আছে। পুজোর সময়েও ব্যাপারটা একই থাকবে। অভিমন্যু তো রয়েছেই এ ছাড়া আমার ওই বাড়ির নতুন আত্মীয়েরা। ইচ্ছে আছে যা সেলিব্রেশন করব দুই বাড়ি মিলেই। আর সেলিব্রেশন বলতে ওই বাড়িতেই খাওয়া দাওয়া আর পাড়ার ঠাকুর।
পাড়ার ঠাকুরের প্রসঙ্গ আসতেই এই দেখুন কেমন নস্টালজিক হয়ে পড়ছি। আমার পাড়া কিন্তু আমার কাছে খুব স্পেশাল। পাড়ার মানুষগুলোও। কত বার ভেবেছি অন্য কোথাও শিফট করব। পারিনি জানেন। আমার ছোটবেলাটা জড়িয়ে আছে ওখানে। মনে পড়ে, সেই ছোটবেলায় পুজোর শপিংয়ের উন্মাদনা। কার কটা জামা হল, কে কবে কোনটা পরবে...সব চেয়ে ভাল জামাটা রেখে দিতাম অষ্টমীর জন্য। সেজেগুজে বেরিয়ে পড়তাম। এখন সারা বছরই শপিং করতে হয়, পুজোর কেনাকাটার সেই থ্রিলটা নেই।
আরও পড়ুন: পুজোর আগেই বন্ধ হয়ে যাবে 'কাদম্বিনী' ধারাবাহিক ভাবিনি!
চারিদিকে কত কিছু বদলে গিয়েছে, আমাদের পাড়া কিন্তু আজও একই রকম। পুজোর ওই কয় দিন যে যেখানে থাকে চলে আসার চেষ্টা করে। তার পর সারা রাত আড্ডা, গল্প। এ বার কী হবে জানি না। দেখা যাক।
এই হলো আপাতত আমার পুজোর প্ল্যান। দুই পরিবার, অভিমন্যুকে নিয়ে দিব্বি কাটিয়ে দিতে চাই এই পুজোটা...