গত বছর পুজোতেও কত রমরমা! আর এ বছর পুজোয়? সব উৎসাহে জল। মহালয়ার আগে থেকেই পুজো প্ল্যান কমপ্লিট। মহালয়া হয়ে গেল মানেই পুজো এসে গেল। ২০২০-র সবচেয়ে বড় বিস্ময়, পাঁজিপুঁথিও যেন করোনার গন্ধ পেয়েছিল আগেভাগেই। তাই মহালয়ার এক মাস পরে পুজোর তারিখ ফেলল! এটা কি কেউ ভেবে দেখেছেন এক বারও?
ভিড়ের জন্য মনকেমন...
প্রতি বছরের ঘটনা। গড়িয়াহাটের মোড়ে থাকি। পুজোর আগের দিনগুলোয় রাস্তায় পা ফেলার জো নেই। ফুটপাথের ভিড় উপচে রাস্তায়। ট্র্যাফিক জ্যামে গাড়ির লম্বা লাইন। যতই এসি চলুক, ভিড় দেখতে দেখতে গাড়ির ভিতরে বসেই ঘামতে থাকি। যেখানে যাওয়ার, সেখানে লেট। আমি ক্ষেপে ব্যোম। বড় বড় প্যান্ডেল রাস্তা জুড়ে! মনে হয়, ধুত্তেরি! রাস্তা ছেড়ে বাড়ি ফিরি।
এ বছর সেই ভিড়টাকেই কী ভী-ষ-ণ মিস করছি! সেই হুল্লোড় নেই। উচ্ছ্বাস নেই। গাড়ি ঘুরিয়ে গলিপথে গন্তব্যে যাওয়া নেই। মনে হচ্ছে কোনও ভাবে টাইম মেশিনে চড়ে যদি ফিরিয়ে আনতে পারতাম সময়টাকে! ভিড়ে ঠাসা কলকাতা না হলে পুজোর আমেজ আসবে কোত্থেকে?
আরও পড়ুন: দুর্গা পুজোয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পছন্দ করে শাড়ি পাঠাবেন, অথচ নিজে কিচ্ছু নেবেন না!
বেজেছে পুজোর ঘণ্টা...
তবু তার মধ্যেও কাশ ফুল ফুটেছে। আকাশের গায়ে জরি বোনা সোনা রোদ্দুর! প্রকৃতি যদি এমন ক্যানভাস সাজিয়ে রাখে পুজো থেকে দূরে থাকা যায়? মন খারাপ সরে মনের ঘরে কিন্তু পুজোর ঘণ্টা বেজেই গিয়েছে। দেবীপক্ষ পড়ে গিয়েছে। বাঙালি মাত্রেই মন উশখুশ এই চারটে দিনের জন্য।
আমিও তৈরি ষষ্ঠী টু দশমীর জন্য। মাস্ক পরেই নীচে নামব। বিল্ডিংয়ের নীচে যে পুজো হয়, তাতে অঞ্জলি দেব। অন্তত দুটো ঠাকুর তো দেখবই। বাকিটা না হয় বাড়িতে টিভিতে দেখে নেব। তবে নিজেকেও সুস্থ রাখতে হবে পাশাপাশি। তাই বেরোব না এ বার, ঘরে বসেই এনজয় করব।
যতই এসি চলুক, ভিড় দেখতে দেখতে গাড়ির ভিতরে বসেই ঘামতে থাকি।
ফি-বছর হেব্বি বিজি... এ বছর
প্রায় ফাঁকাই এখনও পর্যন্ত। অন্য বার অষ্টমী পর্যন্ত দম ফেলার ফুরসত পাই না! এত্ত ইভেন্ট থাকে! এ বছর আছে টুকটাক। কিন্তু অন্য বছরের মতো না। তবে বোর হব না, গ্যারান্টি। বাড়িভর্তি আত্মীয়স্বজন আসবেন। তুতো ভাই-বোনদের সঙ্গে এক দিন। এক দিন মামা-মামীদের সঙ্গে। আর এক দিন মাসিরা আসবেন। দিন কেটে যাবে হইচই করেই।
প্রতি বছর পরিবারের সঙ্গেই পুজো কাটাই। এ বছরও সেটাই হবে। শুধু একটু বদল আসবে রুটিনে। প্রতি বছর ভাই-বোনদের নিয়ে খেতে বেরোই। হয় দুপুর, নয় রাতের খাওয়া। লাঞ্চটাই বেশি হয়। এ বছর সে সব বন্ধ থাকবে। কারণ, রিস্ক নিয়ে খাওয়াদাওয়া করলে সে খাবার একটুও হজম হবে না! তার উপর ডাক্তারের মেয়ে। ফলে, বাবার বাধা-নিষেধ তো আছেই। আমিও ভীষণ খুঁতখুঁতে।
আরও পড়ুন: ভয় উড়িয়ে বাড়ির পুজোতেই ডবল মজা!
বিয়ে করে সিঁদুর খেলব
সেই সতেরো বছর বয়স থেকে শুটিংয়ের দৌলতে বিয়ে না করেই প্রচুর সিঁদুর খেলেছি। সন্দীপ ভুতোরিয়ার পুজোয় গিয়েছি সিঁদুর খেলতে। এ বছর আর সে সবে নেই। দূরে দূরে থাকব সবার থেকে। সব কিছু থেকে। উল্টে মা দুর্গাকে মনে মনে জানিয়েই রেখেছি, দোষ নিও না। আশীর্বাদ কর, বিয়ে-থা করে সত্যিকারের এয়ো হয়ে যেন আগামী দিনে সিঁদুর খেলতে পারি!