দিতিপ্রিয়া রায়
পুজো বলতেই প্রথমে যেটা মনে আসে সেটা হল ছুটি। ওই পাঁচটা দিন সব কিছু থেকে ছুটি। একেবারে নিজের মতো করে কাটানো। আর আছে ঢাকের শব্দ। আমার ফ্ল্যাটের একদম নীচেই হয় পাড়ার পুজো। ঢাকের আওয়াজে আমার ঘুম ভাঙে। আর চারিদিক থেকে ভেসে আসে মন্ত্রপাঠ। এ সব আমার প্রচণ্ড ভাললাগে, প্রচণ্ড!
আপাতত পুজোর প্ল্যানিং কিছু করে উঠতে পারিনি। তবে ম্যান্ডেটরি কিছু পুজো প্যান্ডেলে ঘোরা থাকবেই। প্যান্ডেল ভিজিট করতে করতেই পুজোর দিনগুলো কেটে যাবে। তবে বিজয়ার পর একটা দিন রেখেছি ঘোরাঘুরির জন্য। বন্ধুদের সঙ্গে সে দিন ঘুরতে বেরবো। বন্ধুদের বাড়িতে ডাকব। খাওয়াদাওয়া হবে। এখনও পুরোটাই আনপ্ল্যানড। বন্ধুদের সঙ্গে প্ল্যান করতে হবে। দেখি কদ্দুর কী হয়।
নরম্যালি আমি সব খেতেই ভালবাসি। আলাদা করে স্পেসিফিক কিছু নেই। তবে মেক্সিকান খেতে বেশি ভালবাসি। ‘চিলিজ’-এ খাওয়া ফেভারিট। কিন্তু পুজোর সময় আলাদা করে ‘চিলিজ’-এ গিয়ে খাওয়াটা হবে কি না এখনও জানি না। কারণ ওখানে প্রচুর ভিড় হয়। আর পুজোর কটা দিন মস্ত্ হচ্ছে খাসির মাংস-ভাত। তার পর পুজোর ভোগ তো আছেই। এটা মাস্ট। সাজগোজের বিষয়ে এখনও কিছু ঠিক করিনি। ওটা মুডের ওপর নির্ভর করবে। পুজো প্যান্ডেল ভিজিটের সময় মা বা বাবা এমনিতেই আমার সঙ্গে থাকবে। ফলে বাড়ির লোকেদের সঙ্গে আলাদা করে সময় কাটানো হয়েই যাবে। পাড়ার পুজোগুলোয় থাকার চেষ্টা করব। কতটা থাকতে পারবো জানি না। তবে চেষ্টা করব।
আরও পড়ুন: মহালয়ার ইছামতী, শিউলি ফুল খুব মিস করি: মনামি ঘোষ
যেহেতু পিসির বাড়ি আমার বাড়ির কাছেই ছোটবেলায় আমার পিসির বাড়ির পুজো আর পাড়ার প্যান্ডেলে থাকতাম। এখনও থাকি। তো আলাদা করে পুজোর বিষয়ে কিছু মিস করি না। কিছু কিছু শপিং করে ফেলেছি। তবে কবে কী পরবো এখনও জানি না। আমাকে পুজো প্যান্ডেলে ফিতে কাটতে বা গেস্ট হিসেবে যেতেই হবে। পোশাকও সে রকমই হবে। শাড়ি বা লেহেঙ্গা পরে সারা দিন প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরতে হবে। যা যা পোশাক কিনেছি, পুজোর সময় সব পরা হবে কি না জানি না। জিনস, টপ এই সব কিনেছি। এগুলো কবে পরব নিজেও জানি না। শাড়িই বেশি পরতে হবে পুজোর ক’টা দিন। শাড়ি কেনা হয়ে গেছে। আর মায়ের ওয়ারড্রোব তো ফ্রি-তে আছেই!
ছোট থেকেই আমি প্যান্ডেল হপিং ব্যাপারটা কোনও দিন করিনি। অত ভিড় পেরিয়ে ঠাকুর দেখা একেবারেই হয় না। ঠাকুরের মুখই দেখা যায় না। তবে ছোট থেকে একটা জায়গায় অবশ্যই যাই। ম্যাডক্স স্কোয়ারের পুজো। ওটা প্রতি বার দেখবোই, ম্যান্ডেটরি। এখন যেহেতু সিরিয়ালে অভিনয় করি, রাসমণি হিসেবে লোকে ঠিক চিনতে পারে। তাও আমি প্রতি বছর যাবই। শুধুই ঠাকুর দেখব বলে ম্যাডক্স স্কোয়ার ছাড়া আর অন্য কোথাও যাওয়া হয় না। সারা দিন কাজের জন্যই নানান প্যান্ডেলে ঘুরতে হয়। পুজোর সময় যেটুকু সময় হাতে থাকে রেস্ট নিই। সারা বছর তো কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকি তাই ওই সময় রেস্ট নেওয়াটা একটা বড় ব্যাপার আমার কাছে।
আরও পড়ুন: বন্ধুরাই আমার এ বারের পুজো মাতিয়ে রাখবে: মধুমিতা
আগে আমাদের জয়েন্ট ফ্যামিলি ছিল। এখন সবাই আলাদা হয়ে গেছে। সে জন্য আগের মতো বন্ডিং নেই। তবে আমার পিসির মেয়ে দু’মাস আগে থেকেই আমাকে উপহার দিতে আরম্ভ করেছে। ও আমাকে যা দিয়েছে আমার আর শপিং করার দরকার ছিল না। ও দিল্লি যাচ্ছে, এখানে যাচ্ছে, সেখানে যাচ্ছে আর সব জায়গা থেকে আমার জন্য গিফট কিনবেই। তা ছাড়া মাসিরা, এক কাকা এখন গিফটের বদলে টাকা দিয়ে দেয়। যেহেতু বড় হয়ে গেছি ওঁরা টাকা দিয়ে নিজের পছন্দমতো পোশাক কিনে নিতে বলেন। আগে ছোট ছিলাম। যা দিত পরে নিতাম। এখন বড় হয়েছি। ফ্যাশনের ধারণা পাল্টেছে। পছন্দ হবে কি হবে না। এত সব চাপের মধ্যে কেউ যেতে চায় না। তবে আমাকে পোশাক কিনে দিলে খুশিই হই।
আমিও গিফট দিই। নরম্যালি দুই দিদি, পিপি (পিসি), আর আমার দুই ভাই আছে কাকার ছেলেরা, তাদের জন্য জামাকাপড় কিনি। জেঠুর জন্য কিনি। আর মা-বাবার জন্য তো অবশ্যই কিনি। তা ছাড়া আমার এক্সটেন্ডেড ফ্যামিলি, মানে আমার সিরিয়ালের মানুষজন সবার জন্য জিনিসপত্র কেনাকাটা করেছি। এটা মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট। প্রতি বছর এটা করি। তবে কেনা হয়ে গেলেও সবাইকে এখনও দেওয়া হয়নি। শিগ্গিরই গিফটগুলো দিয়ে দেব।
পুজোতে কলকাতা ছেড়ে বাইরে যাওয়ার কথা ভাবতেই পারি না। ওই সময় কলকাতা ছেড়ে কেউ যায় নাকি!