পাহাড়ি উপত্যকায় বড়সড় বিস্ময়ের সম্মুখিন হলেন ভাস্বর।
পুজোয় এই প্রথম কলকাতা ছেড়ে কাশ্মীরে ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। এক যাত্রায় দুই সাধপূরণের স্বপ্ন নিয়ে। এক, কাশ্মীরি বন্ধুর কাকার বিয়েতে বাঙালি হয়েও শোনাবেন কাশ্মীরি গান। দুই, এই সুযোগে অষ্টমীর অঞ্জলি দেবেন ভূস্বর্গের বিখ্যাত ক্ষীর ভবানী মন্দিরে। তখনও জানা ছিল না, পাহাড়ি উপত্যকায় বড়সড় বিস্ময় অপেক্ষা করছে তাঁর জন্য। নবমীর সকালে কাশ্মীর থেকে ভাস্বর আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘আমার সঙ্গে আমার মামারাও গিয়েছিলেন। দলে ছিল ছোট্ট একটি মেয়ে। অষ্টমী মানেই কুমারী পুজো। কাশ্মীরি হিন্দু পণ্ডিতদের সৌজন্যে দেখলাম ওখানেও এই বিশেষ আরাধনা হয়।’’ অভিনেতার সঙ্গী বাচ্চা মেয়েটিকেও একই সম্মান জানিয়েছেন কাশ্মীরি পণ্ডিতেরা! নিজেরা উঠে এসে মেয়েটির পা ছুঁয়ে প্রণাম করেছেন। হাতে দিয়েছেন প্রসাদ। এমনটাও যে হতে পারে, ধারণার বাইরে ছিল ভাস্বরের।
রিয়ানকে সঙ্গে ক্ষীর ভবানী মন্দিরে গিয়েছিলেন ভাস্বর।
স্মরণীয় ঘটনা শুধু একটিমাত্র নয়। ভাস্বরের কাশ্মীর সফরে মনে রাখার মতো ঘটনা ঘটেছে আরও। এ বছর রোজা রেখেছিলেন অভিনেতা। তাই নিয়ে তাঁকে প্রচুর কটাক্ষ শুনতে হয়েছিল। অনেকেই বলেছিলেন, ধর্ম বদলাতে চলেছেন ভাস্বর। অষ্টমীর দিন অভিনেতার দেখানো পথেই হাঁটলেন তাঁর কাশ্মীরি বন্ধু রিয়ান মঞ্জুরও। ভাস্বরের কথায়, ‘‘রিয়ান আমার সঙ্গে ক্ষীর ভবানী মন্দিরে গিয়েছিলেন। নিজের ইচ্ছেয় অঞ্জলি দিয়ে ক্ষীর প্রসাদ খেয়েছেন!’’
অষ্টমীর অঞ্জলি দিতে গিয়ে ক্ষীর ভবানী মন্দির ঘুরে দেখেছেন ভাস্বর।
কাশ্মীরে যাওয়ার আগেই এই মন্দিরের মহিমার কথা বলেছিলেন ভাস্বর। জানিয়েছিলেন, মা রাগিণীর এই মন্দিরে এক আশ্চর্য ঝর্না আছে। সেই জলের রং বদলে যায়। কখনও লাল। কখনও বা নীল। স্বয়ং স্বামী বিবেকানন্দ নাকি এই ঝর্না দেখে গিয়েছেন। পুরাণ মতে, রাবণের প্রতিষ্ঠা করা মা ভবানীকে শ্রীলঙ্কা থেকে এ দেশে নিয়ে এসেছিলেন স্বয়ং হনুমান। দেবী তাঁকে তেমনই নির্দেশ দিয়েছিলেন।
অষ্টমীর অঞ্জলি দিতে গিয়ে সেই বিশাল মন্দির ঘুরে দেখেছেন ভাস্বর। তাঁর দাবি, পাণ্ডার ঝামেলা নেই। খরচেরও ব্যাপার নেই। মন্দিরে গেলে ফুল আর দুধের একটি পাত্র দেওয়া হয়। সেগুলি নিয়ে ঝর্নায় দিয়ে দিতে হয়। তার পর দেবীর প্রসাদ এক পাত্র ক্ষীর খেয়ে নিজেদের সেই বাসন ধুয়ে দিতে হয়। নিজে থেকেই সকলে তাঁদের হাতে প্রসাদ তুলে দিয়েছেন বলে জানালেন ভাস্বর। তাঁর কথায়, ‘‘অষ্টমীর দুপুরে নানা ধরনের ভোগ খেতে খেতেই পেট ভরে গেল।’’