অভিনেতা অনির্বাণ চক্রবর্তী
পুজো মানেই আমি কলকাতা আর ভিড়ভাট্টা ছেড়ে সোজা পাহাড়ে, লিখলেন অনির্বাণ চক্রবর্তী
বজবজ এর মতো মফস্সলে বড় হয়েছি আমি। সেখানকার ঠাকুর বা প্যান্ডেল সবই ছিল আড়ম্বরবিহীন, অথচ আনন্দে পূর্ণ। মফস্সলের পুজোর আয়োজন আলাদা। চাকচিক্যও আলাদা রকম হয়। আমি তাতেই অভ্যস্ত। তবে কলকাতার পুজোর প্যান্ডেল কেমন হয়, তা দেখার জন্য আসতাম কলকাতায়।
ভিড় বা সারারাত হুল্লোড় করার পক্ষপাতী খুব একটা নই। বাকিরা আনন্দ করছে, সেটা দেখতে ভাল লাগে। তবে ভিড়ের স্রোতে গা ভাসাতে পারি না। কলকাতার পুজোয় এত লোকের সমাগম হয় যে, সেই ভিড় এড়াতে সমুদ্র বা পাহাড়ে চলে যাই। বছরের এই একটা সময়– সপ্তমী থেকে লক্ষ্মী পুজো অবধি শুটিং থেকে ছুটি পাওয়া যায় অনায়াসেই। তাই কলকাতার ভিড়ের আতঙ্ক থেকে বাঁচতে আমি সোজা পাহাড়ে। কলকাতায় একেবারেই থাকি না পুজোতে। সমুদ্র একেবারেই পছন্দ নয় বলে পাহাড়ই আমার একমাত্র আশ্রয়।
তবে এ বছর দুর্গোৎসব বেশ অন্য রকম। এ বছর পুজোয় চাই, যার ইচ্ছে আনন্দ করুক। কিন্তু উৎসবে ফেরার জন্য কাউকে বাধ্য না করলেই হয়তো ভাল। সম্প্রতি ঘটে চলা ঘটনার অভিঘাত মন ও মাথায় এতটাই তীব্র যে, কেউই খুব একটা দ্রুত এই ঘটনা থেকে বেরিয়ে উৎসবে ফিরতে পারবেন বলে আমার মনে হয় না। কেউ কাউকে উৎসবে ঠেলে দিতে পারে না। আবার কেউ কাউকে আটকেও রাখতে পারে না উৎসব থেকে। যারা উৎসবকে কেন্দ্র করে বাঁচেন, যেমন প্যান্ডেলশিল্পী, ছোট ব্যবসায়ী বা ঢাকি, আলোকশিল্পী– এদের উপার্জনের দিকটাও দেখা হোক উৎসবের পরিসরে। তবে মায়ের আগমনে খুশিতে ভেসে যাওয়ার ইচ্ছে যার থাকবে, সে অবশ্যই আনন্দ করুক। উৎসব আমাদের জীবনের একটি অঙ্গ। কিন্তু মানুষকে সেই পরিসরটা দেওয়া হোক নিজের মতো করে শারদীয়া কাটানোর।
এই প্রতিবেদনটি আনন্দ উৎসব ফিচারের একটি অংশ।