অভিনয়টা পেশা হলে ঘুরে বেড়ানোটা আমার নেশা। কর্মসূত্রেই হোক বা ব্যক্তিগত সময় কাটানোর জন্য, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছি বলে আমার কাছে ভূতুড়ে অভিজ্ঞতার অভাব নেই। ৫-৬ বছর আগের কথা বলছি। তখন আমার ঠিকানা মুম্বই। ওই সময়ে পরিচালক বিক্রম ভট্টের একটা ওয়েব সিরিজ়েরও শুটিং চলছিল আমার।
আমার মনে আছে আমি আমার রুমমেটের সঙ্গে সেখানে ভাড়া করা একটা ফ্ল্যাটে থাকতাম। আর সেই ফ্ল্যাটেরই পিছন দিকেই ছিল কবরস্থান। যদিও আমি এত কিছু জানতাম না শুরুতে। সত্যিই বলতে জানার আগ্রহও দেখাইনি কোনওদিন। কিছু কিছু প্রচলিত কথা কানে এলেও এড়িয়ে গিয়েছি। কারণ আমার একটা দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে ভূত আমার কিছু করতে পারবে না। তার কারণ ওই যে বললাম আমি বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছি। এই আত্মবিশ্বাসটা সেখান থেকেই জন্মেছিল।
আমরা যেখানে থাকতাম, সেটা ছিল মারাঠিদের বাসস্থান। এক দিন আমার রুমমেট আমার সঙ্গে ছিলেন না। ওড়িশা গিয়েছিলেন নিজের বাড়িতে। রাতে আমি একা ঘরে শুয়ে আছি। হঠাৎ করে আমি অনুভব করতে পারি আমার বুকের উপর কেউ বসে আমার কাঁধ বলপূর্বক চেপে ধরে আছে। এতটাই শক্তিশালী হাত যে আমি একচুলও নড়তে পারছিলাম না। আমি চেষ্টা করছিলাম কথা বলতে কিন্তু তাতেও আমি ব্যর্থ! শুধু শূন্যের দিকে আমার চোখটা খোলা। সবটাই স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি কিন্তু চুপচাপ শুয়ে থাকা ছাড়া কোনও উপায় নেই তখন। আমার দম বন্ধ হয়ে আসবে প্রায় এমন সময় সজোরে চিৎকার করে উঠি আমি। “মা…মা…মা…না…” করতে করতে ধীরে ধীরে চিৎকারটা আরও জোরে হয়। এতটাই জোরে যে উপরে ফ্ল্যাট থেকেও প্রতিবেশিরা নেমে আসেন।
আমি পুরো বিষয়টা খুলে বলি তাঁদের। তখন জানতে পারি এমন ঘটনা এর আগেও হয়েছে ওই অ্যাপার্টমেন্টের আশেপাশে। শুনেছিলাম কেউ আত্মহত্যা করেছিল সেখানে। খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম সেই দিন। আমি এমন একজন মানুষ যার চোখে সামান্য আলো পড়লেও ঘুম আসে না। ওই রাতের পর থেকে যখনই একা থাকতাম, সবসময় একটা ঠাকুরের ছবি পাশে নিয়ে সারারাত আলো জ্বালিয়ে রাখতাম ঘরে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।