ফ্রাঙ্কফুর্ট। বিদেশ-বিভুঁই ইউরোপের জার্মানির এক শহর। কলকাতা, বাঙালিয়ানা আর দুর্গাপুজোর এক সপ্তাহব্যপি আনন্দ থেকে কতই না দূরে। তবে তাতে বাদ যায়নি কোনও পুজোর রেশ, আজও একই ভাবে হয়ে চলেছে সেখানে পুজোর আয়োজন।
বি এইচ আর এম-এর দুর্গোৎসব উদ্যাপন শুরু হয় ২০২০ সালে। কিন্তু অতিমারির প্রকোপে ২০২০ ও ২০২১ সালের পুজোর আনন্দ সীমাবদ্ধ থেকে যায় কম্পিউটারের পর্দায়, ভার্চুয়াল শৈলীতে। ২০২২-এ প্রথম বার ফ্রাঙ্কফুর্টের বুকে সর্বজনীন দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হয়। মায়ের আরাধনার সাথে নাচ-গান, হাসি, ঠাট্টায় কেটে যায় পাঁচ দিন। এ বছর দূর্গা প্রতিমা সাবেকি ছাঁচে তৈরি।
চলতি মাসের ৫ তারিখ সুদূর কুমোরটুলি থেকে পুজো-পুজো গন্ধ নিয়ে ফ্রাঙ্কফুর্টের মাটিতে পদার্পন করলেন মা দুর্গা এবং তাঁর ছেলেমেয়েরা। ‘বেঙ্গলিজ উন্ড ভারতীয়স ইন হেসেন ঋাইন্-মাইন্ এরিয়া’ (বি এইচ আর এম) ই.ভি.-র উদ্যোগে এ বার কলকাতার দূর্গা পুজোর স্বাদ পাবে ফ্রাঙ্কফুর্টবাসী বাঙালি।
এই বারের অন্যান্য অনুষ্ঠানের মতো এ বারেও উৎসবের আনন্দে একত্রিত হবে ভারতীয় ও জার্মানরা। ষষ্ঠীর আগমনী থেকে দশমীর ধুনুচি নাচ ও সিঁদুর খেলা, পাঁচ দিনের মহা সমারোহে মেতে উঠবে জার্মানির 'বাণিজ্যিক রাজধানী'। থাকবে নাচ, গান, নাটক, নৃত্য-নাট্য প্রভৃতি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সম্ভার এবং শঙ্খ-বাজানো, প্রদীপ-জ্বালানো ইত্যাদি প্রতিযোগিতা। খুদে সদস্যদের জন্য থাকছে বসে আঁকো প্রতিযোগিতা। সঙ্গে পেটপুজো। দু’বেলা করে থাকবে সুস্বাদু বাঙালি খাবারের আয়োজন; লুচি-আলুরদম থেকে পোলাও-মাংস, বাদ যাবে না কিছুই।
দৈনন্দিন ব্যস্ততার মাঝে এই পাঁচ দিন পুজোর কাজে হাত মেলাতে প্রস্তুত এখানকার সদস্যরা। বেশ আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল নাচ ও নাটকের মহড়া। বাড়ি ও অফিসের কাজ সামলে আলপনা দেওয়া, ভোগ রান্না করা এবং পুজোর যাবতীয় খুঁটিনাটি কাজে যোগদান করতে কোমর বাঁধছেন ‘দশভূজারা’।
তাঁরা নিশ্চিত যে, এই বিদেশ-বিভূঁইয়ে বসেই তাঁরা সবাই দেখতে পাবেন উত্তর-কলকাতার উচ্ছ্বাস ও দক্ষিণ-কলকাতার জনসমাবেশ।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।