বার্লিনে দুর্গাপুজো
বিগত দু বছরের অতিমারি কাটিয়ে যখন সমগ্র ভারতবাসী মেতে উঠেছে মাকে বরণ করে নেওয়ার জন্য, তখন সুদূর প্রবাসে থাকা বাঙালি তথা ভারতীয়রাও পিছিয়ে নেই সেই আয়োজনে। বাঙালি এবং দুর্গাপুজো, এক অটুট বন্ধন, যা বাংলা তথা সারা বিশ্বে লক্ষণীয়। বাঙালিয়ানা এবং সুদূর প্রবাসে উৎসবের এই মরশুমকে উপভোগ করতে ২০২১ সালে এই পুজোর শুভারাম্ভ করা হয়। উৎসবের সেই আমেজকে বজায় রাখতে, গত বছরের মতো এই বছরও জার্মানির রাজধানী বার্লিন শহরের বুকে টুরিসম অফ বেঙ্গলের পৃষ্টপোষকতায় বার্লিন ইগ্ননাইট ই.ভি দ্বারা বার্লিন শ্রী হিন্দু গণেশ মন্দিরে ১-৫ অক্টোবর সর্বজনীন দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয়েছে। কুমারী পুজো থেকে চণ্ডীপাঠ, সন্ধি পুজো থেকে মায়ের দর্পণ বিসর্জন, পাঁচ দিনের এই পুজো পালিত হচ্ছে কলকাতা থেকে আশা পুরোহিত মশাইয়ের তত্ত্বাবধানে সমস্ত বিধি এবং নিয়মাবলী অনুসরণ করেই।
বার্লিনে দুর্গাপুজো
বার্লিন ইগ্ননাইট ই.ভি-এর এই প্রচেষ্টায় কাধে কাধ মিলিয়ে সামিল হয়েছেন সংগঠনের ১০০ জন সদস্য, অফিস ও অন্যান্য কাজকে সামলে নিয়ে তার মাঝেই চলছে পূজা আয়োজনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। বিগত বছর প্রায় ৪ মাস যাত্রা করে কুমারটুলি থেকে আসা মা দুর্গার মূর্তিতেই এই বছরের পুজো আয়োজিত হচ্ছে। পাঁচ দিনের বিভিন্ন রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নির্ভেজাল আড্ডা হয় থাকে। এই বছরের পুজোর অন্যতম বিশেষ আকর্ষণ হলো রবি ঠাকুরের নৃত্যনাট্য চিত্রাঙ্গদা, যা অষ্টমীর দিন সন্ধেবেলা মঞ্চিত হবে এবং সেই উপলক্ষে উপস্থিত থাকবেন বার্লিনের বিশিষ্ট কিছু গণ্য মান্য অতিথি।
পেটপুজো বাদে বাঙালির পুজো অসম্পূর্ণ, তাই পুজোর পাঁচ দিনই খাবারের তালিকাকে ঢেলে সাজানো হয়েছে সমস্ত দর্শনার্থীদের জন্য, থাকছে খিচুড়ি থেকে লাবড়া, চাটনি থেকে পায়েস, বাদ থাকছে না কিছুই, যার সমস্ত ভার বহন করছে বার্লিনে উপস্থিত প্রায় ১২ টি ভারতীয় রেস্টুরেন্টের কর্ণধারেরা। বাংলা তথা ভারত থেকে বহু ক্রোশ দূরে থাকলেও, মহামারী পর আশা করি গল্প ও আড্ডার মাধ্যমে এবং এই দেশের সমস্ত নিয়মাবলী অনুসরণ করে আমরা দূর্গাপুজোর সেই পুরোনো মজা জার্মানির রাজধানীতে বসে উপভোগ করতে পারবো।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের অংশ।