Durga Puja 2019 Ananda Utsav 2019 International Durga Puja Durga Puja Celebration

ভক্তিভরে পুজো দেব, পেটপুজোতেও খামতি নেই আমাদের সান দিয়েগোয়

আমেরিকায় অগ্নিবিধির জন্য আগুন জ্বালা মানা, তাই প্রদীপের জায়গা নেয় বৈদ্যুতিন আলো।

Advertisement

সুমনা চক্রবর্তী

সান দিয়েগো (আমেরিকা) শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৯ ১৬:৫১
Share:

মায়েদের কখনও বিসর্জন হয়? হয় না। আমাদের সান দিয়েগোর দুর্গা মা আমাদের সঙ্গে থাকে সারা বছর। শুধু মণ্ডপ থেকে গ্যারাজবন্দি হয়। যখন আশ্বিন মাস আসে, স্থলপদ্মের কুঁড়িগুলো ফুটতে শুরু করে, নীল আকাশে সাদা মেঘ খেলা করে, ঝাড়ঝাড় সাদা কাশফুল মাথা উঁচু করে দুলতে থাকে, গরমের আভাটা কেটে গিয়ে সন্ধের হাওয়ায় শিরশিরানি অনুভূত হয়, মা তখনই চুপিসাড়ে আমাদের মধ্যে উপস্থিত হন। আকাশে বাতাসে আন্দোলিত হয় ‘জাগো তুমি জাগো সুর।’এই সুর বাঙালির কাছে অমলিন। পার্থিব কিছু থাকা বা না থাকার সঙ্গে সে আবেগের মোটেই কোনও সম্পর্ক নেই।

Advertisement

সান দিয়াগোতে ‘সৈকত’-এর পুজো এ বার ১৬তম বছরে পা দিল। অক্টোবর মাসের চার ও পাঁচ তারিখে পুজো। পুজো হয় নিষ্ঠার সঙ্গে। প্রথম দিন শুরু হয় প্রতিমা বরণ ও কলা বউকে স্নান করিয়ে। ক্রমে মায়ের বোধন, মহাস্নান, সপ্তমী ও অষ্টমী পুজো। ১০৮টি প্রদীপ জ্বেলে হয় সন্ধিপুজো। আমেরিকায় অগ্নিবিধির জন্য আগুন জ্বালা মানা, তাই প্রদীপের জায়গা নেয় বৈদ্যুতিন আলো। পুজো শেষে চলে সিঁদুর খেলা ও মিষ্টিমুখ। তবে এই দুটো দিন জমিয়ে চলে খাওয়াদাওয়া। প্রত্যেক বছর হয়ে চলেছে সৈকতের সদস্য সংখ্যার শ্রীবৃদ্ধি। এটি এখন কার্যত আমাদের সকলের পাড়ার পুজো। বাঙালির এই বিপুল সমষ্টিগত আবেগের উৎসরণ মনে হয় এই সময়ই দেখা যায়।

পুজো আসতে আর কয়েকটা দিন বাকি। তবুও অন্তরে বাইরে ছুটি-ছুটি রব। আমজনতার হৃদয়ে পৌঁছে গিয়েছে শরতের চিঠি। আর এই চিঠির নীলরং আকাশে পূর্ণ বিভায় প্রস্ফুটিত হয়ে সব মলিনতা মুছে ফেলে আহ্বান জানাচ্ছে উদার হওয়ার। এখানে শিউলি ফুল না ফুটলেও, নরম সোনালি রোদ্দুর আর বাতাসে ঠান্ডার আমেজে উদাস হয় মনটা। চলছে জোরকদমে পুজোর প্রস্তুতি। তাই ব্যস্ততা একদম মধ্য গগনে। হবে শ্রী গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় বড়দের নাটক ‘ক্যাসান্দ্রা’। গান ও নাচ জানা কিছু লোকাল ট্যালেন্টকে নিয়ে থাকছে বিভিন্ন সংগীত ও নৃত্যানুষ্ঠান। আসছেন সারেগামাপা খ্যাত মন মাতানো লোকসংগীত শিল্পী পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবারের সন্ধ্যা মাতাতে আসছেন সারেগামাপাখ্যাত গৌরব ও স্নিগ্ধজিৎ। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে সমৃদ্ধ হবে আমাদের পুজো।

Advertisement

আরও পড়ুন: গত বছরের পুজোয় ফুচকার স্টল দিয়েছিলেন এক সুইডিশ ভদ্রলোক

দুর্গতিনাশিনীর আরাধনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে সাহিত্য আরাধনা। তাই বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্যের এক ঐতিহ্যময় প্রয়াস হল ‘সৈকত’ পত্রিকা। ছোট থেকে বড়, লিখতে ভালবাসে এমন সবাই নিজের মনের কথা বলে ফেলে নিজের অজান্তেই, তা সে ছবিতেই হোক বা লেখাতে। আর তার পূর্ণতার প্রকাশ পায় সাদা পাতার কালো কালিতে।

আরও পড়ুন: মণিকোন্ডায় গত বছরই আমরা দুর্গাপুজো শুরু করলাম

পূর্ণিমার চাঁদের পাশে ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা মেঘে মায়ের মুখ। কোথা থেকে যেন চণ্ডীপাঠের সুর শোনা যাচ্ছে। হৃদয়ের ব্যাকুলতা নিয়ে সান দিয়াগোর বাঙালিরা মঙ্গল শঙ্খ হাতে দিন গুনছে উমা মায়ের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement