২০১৯, পুণের ‘মিনি ম্যাডক্স স্কোয়্যার’ অগ্রদূত বঙ্গ সমাজের পুজোর দ্বিতীয়তে পা। অগ্রদূত বড় হল, হল আরও নতুন সদস্যের সমাহার, আরও নতুন ভাবনা। এ বারের পুজো-থিম হল গ্রাম বাংলা। ক্লাবেরই কয়েক জন সদস্যের ভাবনা-চিন্তা ফুটে উঠেছে কাগজের পাতায়, যা রূপান্তরিত হচ্ছে বাঁশের আর খড়ের চালা ঘরে। মাটির দেওয়ালে যত্নের সঙ্গে খড়ি দিয়ে আঁকা আলপনা। ঠাকুর দালানের সিঁড়িতে আলপনা আর প্রদীপের সম্ভার। খুঁটিতে ঝোলানো লণ্ঠন আর হাত পাখা। দূরে তুলসি মঞ্চে সন্ধ্যা মাসির দৈনিক সান্ধ্য আরাধনা, সঙ্গে গরুর গাড়ি ও গ্রাম বাংলার আরও চমক।
অগ্রদূত বঙ্গ সমাজের পুজো নিছকই পুজো নয়, থাকে সমাজের জন্য কিছু করার তাগিদ। এই বছর সদস্যরা অগ্রসর হয়েছেন ধরিত্রী রক্ষার্থে বৃক্ষ রোপনে, রক্ত দান শিবিরে, অঙ্গ প্রদানের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে।
পঞ্চমীতে আনন্দ মেলা- বাঙালির ভূরিভোজ। ষষ্ঠী থেকে ভক্তিভরে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে মায়ের আরাধনা, পুষ্পার্ঘ, আরতি, মন্ত্রপাঠ, হোম, কুমারী পুজোর মাধ্যমে চিন্ময়ী মায়ের মৃণ্ময়ী রূপের বন্দনা, নিষ্ঠা সহকারে প্রতিনিয়ত মাকে ভোগ উদযাপন এবং ভক্তদের সপ্তমী থেকে নবমী ভোগ বিতরণ ।
পুণের একমাত্র কচিকাচাদের নিয়ে ব্যান্ড অগ্রদূতের গড়া ‘হযবরল’। সেই দল তাদের পড়াশোনা ও পরীক্ষার মাঝেও মহড়ায় ব্যস্ত, প্রস্তুত মঞ্চ কাঁপাতে। বাংলার লোকসঙ্গীতের তালে বড়দের নৃত্য পরিবেশন হবে। পরিবেশিত হবে একশো জন সদস্যের সমবেত ঢাকের তালে তাল মিলিয়ে। ধুনোর ধোঁয়ায় মেতে হবে ধুনুচি নাচ। নামী শিল্পীদের নিয়ে জমজমাট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আরও পড়ুন: গত বছরের পুজোয় ফুচকার স্টল দিয়েছিলেন এক সুইডিশ ভদ্রলোক
দুর্গোৎসব সাফল্যমণ্ডিত করতে দিবারাত্রি চলছে অক্লান্ত পরিশ্রম। আর সেই পরিশ্রমকে ভুলে থাকার অন্যতম চাবিকাঠি, অগ্রদূতের সৃষ্টি ‘থিম সঙ্গীত’। থাকছে কব্জি ডুবিয়ে রসনা তৃপ্তি করার স্বাদ, রাত জাগা আড্ডা আর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় সিঁদুরে রাঙিয়ে মায়ের প্রস্থানের প্রস্তুতি। তার পর তো আবার এক বছরের অপেক্ষা।
আরও পড়ুন: ন্যাশভিলের পুজোয় দুই ‘বেণী’
প্রবাসের পুজোয় হয়ত নেই সেই আলোকসজ্জার জাঁকজমক, হয়ত নেই সেই মণ্ডপের চমক, কিন্ত অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও রয়েছে সুষ্ঠু ভাবে আয়োজন করার চেষ্টা, রয়েছে আন্তরিকতা, রয়েছে একটুকরো বাংলা উপহার দেওয়ার চেষ্টা। অগ্রদূত বঙ্গ সমাজ সত্যিই এই বিষয়ে এগিয়ে।