বঙ্গ পরিবারের দুর্গোৎসব টরন্টোবাসীদের কাছে আজ আর অজানা নয়| শুধু টরন্টোবাসী বললে হয়তো ঠিক হবে না, কারণ কানাডার অন্যান্য শহর থেকে এবং আমেরিকা থেকেও লোক এই পুজো দেখতে আসেন| এবার নিয়ে পাঁচ বছর| অন্যান্য বছরের মতো এবছরও হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শঙ্খ প্রতিযোগিতা, ধুনুচি নাচ, ভোগ খাওয়া, আড্ডা, কলকাতার বিশিষ্ট শিল্পীদের গান শোনা ও আরও অনেক কিছু| ও, এটা তো বলাই হয়নি যে আমাদের ঠাকুর কিন্তু বিখ্যাত শিল্পী শুভমিতা ডিন্ডার বানানো কালো দুর্গা| পুজো হচ্ছে সেন্ট ভ্লাদিমির কালচারাল সেন্টারে|
মার্চ মাসের ঠান্ডা তখনও বরফের আস্তরণ ঘিরে আছে আশেপাশে| ঠান্ডা উপেক্ষা করে সব মেম্বার হাজির পুজোর মিটিংয়ে। সঙ্গে সবক’টা সেকেন্ড জেনারেশন| ইংরেজিতে কথা বললেও ওদের পুজোর উৎসাহ বিন্দুমাত্র কম নয়| কে কী পরবে আর কী কীসাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভাগ নেবে সে ব্যাপারে তাদের মতামত জানিয়ে দেয়| দু’দিন কিন্তু বাড়িতে রান্না নেই, পূজামণ্ডপে খাওয়াদাওয়া সব| দুপুরে নিরামিষ। তাতে কী? সবাই রাজি| এমনকি সদ্য ইউনিভার্সিটি যাওয়া ছেলেমেরাও| রাতে তো রকমারি খাবারের কাউন্টার থাকবেই|
এবারের পুজোতে কিন্তু স্পেশাল কলকাতার আর্টিস্টের গান শুনতেই হবে| ডাক পড়ল জি সারেগামা আর্টিস্টের| কিন্তু ভিসা ভীষণবস্তু| সাহেব-মেম ভিসা অফিসার পুজো বোঝে না| তাদের সামলে ভিসা পাওয়া এক দুরূহ ব্যাপার| কিন্তু কোনও পরোয়া নেই| ভিসা আছে এমন কাউকে ডাক|
পাওয়া গিয়েছে, পাওয়া গিয়েছে| ভিসা অফিসারকে বশ করেছে এমন ক’জন পাওয়া গিয়েছে| অতএব তাদের ডাকা হোক| এবার ভোগ| ভোগের মেনু চটপট ঠিক হয়ে গেল| খাবারে থাকবে পাঁচমেশালি তরকারি, খিচুড়ি, চাটনি, পাপড় এবং মিষ্টি| নামকরা রাঁধুনি কে কে আছো? যাক বাবা, আমাদের দলে নামজাদা রাঁধুনি আছে| এইবার মণ্ডপ সাজানো| মণ্ডপ সাজাতে হবে চোখধাঁধানো| আর্টিস্ট কে কে আছো? বলতে নেই,আমাদের দলে বেশ কয়েকটি খুব ভাল আর্টিস্ট আছে| তারা তো এক কথায় রাজি| হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম| ঠাকুরমশাই তো ঠিক করাই আছে, সবচেয়ে জনপ্রিয় পূজারী সমীর বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের পুজো করবেন|
এবার তাহলে পুজো দাঁড়িয়ে গেল, কি বলেন?