ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে মধুবনী কাজ। ছবি: প্রতিবেদক।
শরৎ মানেই উৎসবের আমেজ। প্রবাসের আকাশ-বাতাসও তার থেকে বঞ্চিত নয়। আমেরিকার উটা স্টেটের সল্টলেক সিটিতে বাঙালির এই শারদোৎসবকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় এক জমজমাট আয়োজন। গুটিকয়েক বাঙালির হাত ধরে আমাদের বাঙালি অ্যসোসিয়েশন ‘উল্লাস’ এর জন্ম। ছোট্ট ছোট্ট পায়ে চলতে চলতে উল্লাসে আজ বাঙালি-অবাঙালি নির্বিশেষে সংস্কৃতির এক অপরূপ মেলবন্ধন।
গ্রীষ্মকালেই শুরু হয়ে যায় আমাদের পুজো-প্যান্ডেল পরিকল্পনা, মণ্ডপ সাজসজ্জা এবং যাবতীয় কাজের প্রস্তুতি। নিজেদের ব্যস্ত কর্মজীবনের ফাঁকে সবাই মা দুর্গাকে বরণ করার আয়োজনে মেতে ওঠে। প্রতি বছরই মণ্ডপসজ্জার একটা ‘থিম’ বেছে নেওয়া হয়। কখনও শোলার সূক্ষ্ম কাজ, কখনও বা উল, রঙিন কাগজের অভিনব কারুকৃতি। এ বারের থিম মধুবনী চিত্র। সূক্ষ্ম মধুবনী কাজের ক্যানভাস দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হবে প্যান্ডেলের অবয়ব। আর সেই কাজ সফল করতে ছোট থেকে বড়, বাঙালি থেকে অবাঙালি সকলেই হাত লাগান।
শুধু উটা-ই নয়, আমাদের কাছেপিঠের বিভিন্ন রাজ্য, যেমন মন্টানা, ক্যালিফর্নিয়া, আরিজ়োনা, ইডাহো, উইসকনসিন এবং নেব্রাস্কা থেকে সল্টলেক সিটির এই দুর্গাপুজো দেখতে উৎসাহী বাঙালির ভিড় জমে। এর পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মহড়া চলে দু’মাস ধরে।
আরও পড়ুন: সাগর পারের আটলান্টা উইক এন্ডেই খুঁজছে শিউলির সুবাস
আরও পড়ুন: ‘টরন্টো উৎসব কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন’-এ নিষ্ঠা এবং নস্ট্যালজিয়ার মিশেল
ভোরবেলা থেকেই শুরু হয়ে যায় পুজোর আয়োজন। অর্চনা, পুষ্পাঞ্জলি, ভোদ বিতরণ, সন্ধি পুজো, কুমারী পুজো, সব কিছুই হয় পঞ্জিকা মেনে। তার সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া তো রয়েছেই। প্রতিদিন সন্ধেবেলা সমারোহ করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। কলকাতা থেকে অতিথি শিল্পীরা আসেন। তা ছাড়া, ছোট-বড় সকলে মিলে নাচ-গান-আবৃত্তি-নাটক করে পুজোর সন্ধেগুলো মাতিয়ে রাখে।
এ বছরের বিশেষ আকর্ষণ নতুন প্রতিমা। সুদূর কলকাতা থেকে আসছেন মোহনবাঁশি রুদ্র পালের পাঁচ চালার নতুন মা দুর্গা। সঙ্গে চার ছানাপোনা। সকলকে বরণ করে নেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে রয়েছি আমরা।