হেলসিনবোর্গের দুর্গা প্রতিমা।
বছরের অর্ধেকটা গড় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের কাছাকাছি৷ তাতে কী! একশো জন বাঙালি৷ অতএব পুজোকে কেন্দ্র করে আনলিমিটেড হইচইয়ের ব্যবস্থা হবে না, তা-ও কি হয়! আমরা যে জায়গাটায় থাকি অর্থাৎ দক্ষিণ সুইডেনের হেলসিনবোর্গে এই ভাবনা থেকেই এক দিন অফিসে লাঞ্চ ব্রেকে দুর্গাপুজোর পরিকল্পনা৷
খাবার টেবিলে ভাবনাটা বেশ সুস্বাদু হলেও পুরো ব্যাপারটাকে বাস্তবে রূপ দিতে যে রীতিমতো বেগ পেতে হবে সেটা ভেবে প্রথমে অবিশ্যি একটু দমেই গিয়েছিলাম আমরা৷ কিন্তু মাথার মধ্যে পোকাটা ছিলই। একটা হোয়াটস্যাপ গ্রুপ বানালাম। সামনে ছিল অনেক কাজ। একটা বড় হল ঘর ভাড়া নেওয়া হল৷ কিন্তু ঠাকুর? এই সুদূর সুইডেনে কে আমাদের ঠাকুর বানিয়ে দেবে?
প্রথমে ঠিক হয়েছিল ছবি কেটে ঠাকুর বানানো হবে। কিন্তু দুধের সাধ ঘোলে মেটে না। অবশেষে ঠিক হল কলকাতা থেকেই ঠাকুর নিয়ে আসা হবে। এ বার বাগড়া দিল সময়। দুমাসের মধ্যে ঠাকুরের অর্ডার নিয়ে ডেলিভারি করবে কে!
আরও পড়ুন: জার্সি বিদেশি, মনটা বাঙালি
আরও পড়ুন: ছানাপোনা নিয়ে আসছেন ‘নতুন’ মা
শেষ পর্যন্ত নিয়ে আসা হল ফাইবারের ঠাকুর। এ বার দেবী ফাইবার-রূপেই সংস্থিতা৷ আমাদের বেঙ্গলি কালচার অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথ সুইডেনের দ্বিতীয় বর্ষের এই পুজোয় সন্ধিপুজো থেকে সিঁদুরখেলা, দুপুরে জমিয়ে আড্ডা, রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান তো থাকছেই, পেটপুজোও বাদ যায়নি৷ নাচ, গান, নাটকের মহলা এখন চূড়ান্ত পর্বে৷
অবশ্য শুধু বাঙালি নয়৷ আমাদের প্রাণের এই উৎসবে সুইডিশরাও যোগ দেবেন৷ হেলসিনবোর্গের মাটিতে ছোটবেলার স্মৃতি উসকে দুদিন কাটিয়ে মা আবার ফিরে যাবেন কৈলাসে। আমরাও শুরু করে দেব পরের বছরের পরিকল্পনা৷
ছবি: পুজো উদ্যোক্তাদের সৌজন্যে।