পুজোর মরসুমে ভাল তিথি দেখে বাড়িতে চার চাকা গাড়ি নিয়ে আসবেন ভাবছেন? নতুন নয় 'সেকেন্ড হ্যান্ড' গাড়ির কথা ভাবছেন কি? ভাল। সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কেনাতে খারাপ কিছু নেই। কিন্তু সেই গাড়ি ঠিক করে দেখে পরখ না করে কিনলে ভুগতে হবে আপনাকেই।
সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কেনার সময় কিছু জিনিস, যেমন কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা, গাড়ির বিমা, গাড়িটির সামগ্রিক অবস্থা কেমন? কত কিলো মিটার চলেছে, এই সাধারণ বিষয়গুলি তো দেখে নিতে হবেই, সঙ্গে কিছু জিনিস আছে যা অবশ্যই পরখ করে নেওয়া দরকার।
গাড়ির অবস্থা কেমন: সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কেনার সময় সবার আগে মাথায় রাখা উচিত গাড়িটির স্বাস্থ্য কেমন রয়েছে। গাড়ির ভিতরের অংশ, যেমন সিট, স্টিয়ারিং থেক চাকা, ড্যাশবোর্ড এই বিষয়গুলিকে ভাল করে দেখে নিতে হবে। এ ছাড়াও বাইরের দিক থেকে গাড়িতে কোনও দাগ আছে কিনা তা দেখা উচিত। টুকটাক দাগ নিয়ে চিন্তা না করাই ভাল। কিন্তু বড় কোনও দাগ থাকলে অবশ্যই তা চিন্তার বিষয়।
বাজারে কম বিক্রি হওয়া গাড়ি: অনেক কোম্পানির বিভিন্ন মডেলের গাড়ি বাজারে অনেক সময় চলে না। বিক্রি কম হওয়ায় এই গাড়িগুলিকে কোম্পানি তুলে নেয়। পরবর্তীকালে খুব কম দামে 'সেকেন্ড হ্যান্ড' হিসেবে বিক্রি করে তারা। এই ধরনের গাড়িকে ‘স্ক্র্যাপ’ গাড়ি বলা হয়। ‘স্ক্র্যাপ’গাড়ি থেকে দূরে থাকাই ভাল। কারণ বাজারে কম বিক্রি হওয়ায় এর যন্ত্রপাতি পাওয়া যায় না। অল্প দামে কিনলেও পরে অনেক টাকা খসে যেতে পারে। ঝুঁকি অনেক পোহাতে হতে পারে।
গাড়ির ইঞ্জিন: 'সেকেন্ড হ্যান্ড' গাড়ি কেনার সময় অন্তত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে গাড়ির ইঞ্জিন কেমন তা দেখে নেওয়া। অবশ্যই একজন মেকানিককে দিয়ে এই পরখটা করানোই বুদ্ধিমানের হবে। বিক্রেতার কথা সত্যি বলে মেনে নেওয়ার কোনও কারণ নেই।
গাড়িটির 'রেজিস্ট্রেশন': কাগজপত্র দেখার সময়ই 'রেজিস্ট্রেশন' সম্পর্কে জানতে পারবেন। তবে খুব পুরনো 'রেজিস্টার' হওয়া গাড়ি না কেনাই ভাল। দেখা যাচ্ছে, গাড়িটি খুব বেশি চলেনি, অবস্থাও ভাল আছে, কিন্তু রেজিস্ট্রেশন অনেক দিনের। তা হলে সেটিকে এড়িয়ে যাওয়ায়ই শ্রেয়। কারণ পুরনো 'রেজিস্ট্রেশন' যে কোনও দিন বাতিল হয়ে যেতে পারে। অনেক রাজ্য সরকার পুরনো গাড়ি চালানোর ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে।
ডিজেলে চলা গাড়ি: ইলেকট্রনিক গাড়ির যুগে ডিজেলের গাড়ি অনেক পুরনো। নতুন হোক বা সেকেন্ড হ্যান্ড ডিজেলের গাড়ি এখন কেনা উচিত নয়। কারণ ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ডিজেলের গাড়ি তুলে নেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বেশ কিছু দিন ধরেই। কেন্দ্রীয় সরকারের একটি কমিটি ২০২৭ সাল থেকে ভারতে ডিজেল গাড়ি চালানো বন্ধ করার জন্য একটি সুপারিশ এনেছে। তাই এই গাড়ি এড়িয়ে যাওয়াই উচিত।
গাড়িটির রেকর্ড: অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে গাড়িটির রেকর্ড কেমন তা জেনে নেওয়া। অর্থাৎ গাড়িটি আগে কোনও সময় অ্যাক্সিডেন্টের মুখোমুখি হয়েছিল কিনা। মাইলেজ কেমন দিতে পারছে। এইসব বিষয়েই জেনে রাখা দরকার।
কম বিক্রি হওয়া সংস্থার গাড়ি: বাজারে এমন অনেক সংস্থা আছে, যাদের তৈরি করা গাড়ি তুলনামূলক কম বিক্রি হয়। এই কম বিক্রি হওয়া গাড়িগুলোর সেকেন্ড হ্যান্ড না কেনায় ভাল। কারণ যে কোনও দিন ওই সংস্থাটি গাড়ি বাজারে ছাড়া বন্ধ করে দিতে পারে। ফলে আগামীতে কোনও সমস্যা হলে আপনি তার সমাধান করতে পারবেন না।
একটি লম্বা টেস্ট ড্রাইভ করুন: সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কেনার আগে অবশ্যই গাড়িটি চালিয়ে দেখুন। শুধু চালানোর জন্য চালানো নয়। ভিড় জায়গায়, ফাঁকা রাস্তায়, ভাল এবং খারাপ সব রাস্তাতে গাড়িটি চালান। তা হলে কোনও সমস্যা থাকলে অবশ্যই নজরে আসবে। সঙ্গে সঙ্গে মাইলেজ, গাড়ির ব্রেক সব কিছু সম্পর্কেই ধারণা পেয়ে যাবেন।