সালটা ২০১৪। কলকাতার পুরো পরিবহণ ব্যবস্থাটাই বদলে যায় ওই বছকে। তার আগে বাস, ট্রাম, হলুদ ট্যাক্সিতে যাতায়াত করাটাই রোজনামচা ছিল। ওই সময় জানা গেল, ফোনে ট্যাক্সি ডেকে নিয়ে কোনও ঝামেলা ছাড়াই যাতায়াত করা যাবে। এমন চলাচলের যানগুলিকে বলা হবে, ‘অ্যাপ ক্যাব’। পরিবর্তন তখন থেকেই শুরু।
এই নয় বছরে শহরের জীবনযাত্রা আরও দ্রুত এগিয়েছে। মানুষ অনেক বেশি অ্যাপ-ক্যাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। তাতে সমস্যা অন্য চেহারা পেয়েছে। ‘দাদাগিরি’ বেড়েছে ক্যাব-চালকদের। হয়রানি বাড়ছে ভোক্তাদের।
হাতে মাত্র কিছু দিন বাকি পুজোর। ব্যস্ততা বাড়ছে শহরের। কিন্তু কমছে না ক্যাবওয়ালার ‘মস্তানি’!
অভিযোগ উঠছে ক্যাব চালকরা মাঝে মধ্যেই বুকিং করা জায়গায় যেতে চাইছেন না। যেতে চাইলেও অতিরিক্ত ভাড়া চাইছ্নে। না দিলে পরামর্শ দিচ্ছেন মোবাইল থেকে ‘বুকিং’ বাতিল করতে। কিছু কিছু সময় চালক বলছেন, ‘অ্যাপে যাত্রা বাতিল করুন, আমি এমনি যাচ্ছি।’ বৃষ্টি হলে তো কথায় নেই। বুকিং করাই মহা মুশকিলের কাজ।
পুজোর বাজারে এই সমস্যা কী করে কমানো যাবে?
পু্জোর মণ্ডপে-মণ্ডপে ঘোরা বা উদ্যাপন করার পর রাতের শহরের মূল ভরসা এই ক্যাব-অ্যাপ। তবে তা কতটা ভরসাযোগ্য, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। এই বিষয়ে অবশ্য আলাদা মত প্রকাশ করছেন ‘অনলাইন ক্যাব অপারেটর গিল্ড’য়ের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দোপাধ্যায়। তাঁর মতে, চালকরা বাধ্য হয়ে এই রকম করছ্নে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেখানে সরকারের কাছে আমাদের দাবি একটা নির্দিষ্ট ভাড়া ঠিক করে দেওয়া হোক। সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বা এই রকম সময় একটা ভাড়া থাকুক। রাত বাড়লে কিলোমিটার হিসাবে ভাড়া করা হোক একটু বেশি। যাত্রীদের অসুবিধার কথা এক প্রকার মেনে নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যাত্রীদের সমস্যা আমরা বুঝতে পারি। আমি নিজে পরিবার নিয়ে বেরোলে ঠিক সময়ে গাড়ি না পেলে রাগ হয়। কিন্তু চালকদের বিষয়টাও দেখতে হবে। সেক্ষেত্রে ভাড়াজনিত সমস্যা মেটানো দরকার।’’
তবে যাত্রীদের কোনও সমস্যা হলে তারা কী করবেন। সেই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে যদি কোনও অভিযোগ আসে, সেই চালক যদি আমাদের সংগঠনের সদস্য হন, তা হলে নির্দিষ্ট চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিই আমরা।’’
অভিযোগ জানাতে ভোক্তারা কী করতে পারেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ‘‘আমাদের অফিসে ফোন করে অভিযোগ জানানো সম্ভব। ফোন নম্বর-৯৮০৪৪৫৮০৪৫। অফিসের ঠিকানা- ৬৪, চারুচন্দ্র অ্যাভিনিউ, কলকাতা ৩৩। এটি রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশনের কাছে। এখানে এসেও অভিযোগ জানানো যেতে পারে। অফিস সাধারণত সকাল ১১টা থেকে সন্ধে ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে।’’
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।