বৈদ্যুতিক বা ব্যাটারি চলিত গাড়ি বলতেই যদি টোটো বা ই-স্কুটারের কথা মনে হয়, তা হলে বলতেই হবে আপনি হালহকিকতের কোনও খবরই রাখেন না। এ গুলো পরিবেশের পক্ষেই শুধু ভাল নয়, শরীরের ধমণীতে অ্যাড্রিনালিন ছুটিয়ে দেওয়ারও ক্ষমতা রাখে। প্রথম প্রথম বৈদ্যুতিক বা ব্যাটারি চালিত গাড়ি গুলিকে পেট্রোল-ডিজেল চালিত গাড়ির অলস ভাই হিসেবে দেখলেও আজকাল এরা ‘বড়দাদা’কেও টেক্কা দিতে প্রস্তুত। ফর্মুলা-ই তার এক প্রতক্ষ প্রমাণ। আজ তারা গতির বাঁধ ভেঙে চটজলদি গতি তোলায় নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি করছে। দেখা যাক কয়েকটা সেরকম গাড়ি।
১. টেসলা মডেল এস প্লেইড
পোর্শে টাইকান টার্বো এস-কে পিছনে ফেলে মুকুট পরে নিয়েছে টেসলা মডেল এস প্লেইড। মোটামুটি ১.৯৯ সেকেন্ডে টেসলার এই গাড়ি শূন্য থেকে ৬০ মাইল প্রতি ঘণ্টা গতিতে পৌঁছে যায়। মডেল এস আসলে ১০০ কিলোওয়াট-আওয়ার ব্যাটারি ব্যবহার করে। ফলে ১০২০ হর্সপাওয়ার ক্ষমতা পেতে বেশি বেগ পেতে হয় না। আর এটা একটা অল-হুইল ড্রাইভ গাড়ি, মানে সব চাকাতে ইঞ্জিনের ক্ষমতা পৌছে যায়।
দাম : ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১.৫ কোটি টাকা।
০ থেকে ৬০ মাইল/ঘণ্টা (প্রায় ৯৬.৫ কিমি/ঘণ্টা) : ২ সেকেন্ডের মধ্যে।
সর্বোচ্চ গতি : ২০০ মাইল প্রতি ঘণ্টা (৩২২ কিমি/ঘন্টা)।
২. পোর্শে টাইকান টার্বো এস
একটা সময় ছিল যখন গতির রাজার আসনে জায়গা ছিল পোর্শে টাইকানের। সিংহাসনচ্যূত হলেও গতিতে অনেককেই টেক্কা দিতে পারে পোর্শের এই ব্যাটারি চালিত গাড়ি। গাড়িটা ২.৪ সেকেন্ডে ৬০ মাইল প্রতি ঘন্টা গতিতে ছুটতে পারে। আসলে এতে টেসলা মডেল এস-এর থেকে কিছুটা ছোট ব্যাটারি প্যাক রয়েছে।
দাম : ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২ কোটি টাকা।
০ থেকে ৬০ মাইল/ঘণ্টা (প্রায় ৯৬.৫ কিমি/ঘণ্টা) : ২.৬ সেকেন্ডে।
সর্বোচ্চ গতি: ১৬১ মাইল প্রতি ঘণ্টা (২৫৯ কিমি/ঘন্টা)।
৩. লুসিড এয়ার ড্রিম এডিশন পারফরম্যান্স
'লুসিড' একটা নতুন কোম্পানি। তবে বেশ কিছু চোখ ধাঁধিয়ে দেওয়া ফল দেখিয়েছে। লুসিড এয়ারের বেশ কয়েকটা মডেল পাওয়া যায়। দ্রুততম হল লুসিড এয়ার ড্রিম এডিশন পারফরম্যান্স। কিছু দিনের মধ্যে লুসিড স্যাফায়ার নামে একটা আরও দ্রুতগতির গাড়ি এরা আনতে চলেছে। অনেকে বলছেন, বৈদ্যুতিক বা ব্যাটারি চালিত গাড়ির জগতে সেটা আলোড়ন ফেলে দেবে। লুসিড এয়ার ড্রিম এডিশন পারফরম্যান্স ২.৭ সেকেন্ডে শূন্য থেকে ৬০ মাইল প্রতি ঘণ্টায় গতি তুলতে পারে।
দাম : ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১.৩ কোটি টাকা।
০ থেকে ৬০ মাইল/ঘণ্টা (প্রায় ৯৬.৫ কিমি/ঘণ্টা) : ২.৭ সেকেন্ডে।
সর্বোচ্চ গতি : ১৬৮ মাইল প্রতি ঘণ্টা (২৭০ কিমি/ঘন্টা)।
৪. অডি আরএস ই-ট্রন জিটি
অডি ই-ট্রনের দ্রুততম গাড়ি হল আরএস ই-ট্রন জিটি। এটা ২.৯ সেকেন্ডে শূন্য থেকে ৬০ মাইল প্রতি ঘণ্টা বেগে পৌঁছে যায়। তবে গতিতে অন্য গাড়ি একে টেক্কা দিলেও গাড়ির রূপে একে হারাতে পারবে, এমন ব্যাটারি চালিত গাড়ি এই সময় আর দুটো নেই।
দাম : ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১.৭ কোটি টাকা।
০ থেকে ৬০ মাইল/ঘণ্টা (প্রায় ৯৬.৫ কিমি/ঘণ্টা): ২.৯ সেকেন্ডে।
সর্বোচ্চ গতি : ১৫৫ মাইল প্রতি ঘণ্টা (২৫০ কিমি/ঘন্টা)।
৫. মার্সিডিজ এএমজি ইকিউএস
মার্সিডিজ এএমজি ইকিউএস দ্রুত গতির গাড়ির তালিকায় একমাত্র গাড়ি যার শূন্য থেকে ৬০ মাইল/ঘণ্টা গতি তুলতে ৩ সেকেন্ড লেগে যায়। তবে একে ঠিক ধীরগতির গাড়ি বলা যায় না। মার্সিডিজের এই ব্যাটারি চালিত গাড়ি অডির আরএস ই-ট্রন জিটি-এর মতো সুন্দর দেখতে না হলেও এটা অবিশ্বাস্যভাবে বিলাসবহুল এবং আরামদায়ক। আসলে গতি আর বিলাসিতার মেল বন্ধন বলা যেতে পারে মার্সিডিজ এএমজি ইকিউএস-কে।
দাম : ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২.৪ কোটি টাকা।
০ থেকে ৬০ মাইল/ঘণ্টা (প্রায় ৯৬.৫ কিমি/ঘণ্টা): ৩ সেকেন্ডে।
সর্বোচ্চ গতি : ১৩০ মাইল প্রতি ঘণ্টা (২১০ কিমি/ঘন্টা)।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।