শর্মিলা মাইতি
বিনোদনের দুনিয়া মানে কি শুধুই রুপোলি পর্দা, লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশন আর টিভি স্ক্রিনে ভেসে ওঠা নায়ক-নায়িকারা? আর যাঁরা এই দুনিয়াকে দর্শকদের আরও কাছে নিয়ে আসেন? ছবির চুলচেরা বিশ্লেষণ, গল্পে-আড্ডায় তুলে ধরেন প্রিয় তারকার হাঁড়ির খবর। গত দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে সেই কাজটাই করে যাচ্ছেন শর্মিলা মাইতি।
শর্মিলা পেশায় সাংবাদিক। কাজ করেছেন প্রায় সবক’টি বড় সংবাদমাধ্যমেই। যে মধ্যবয়সীরা খবরের চ্যানেলগুলিতে নিয়মিত চোখ রাখেন, তাঁরা শর্মিলাকে কখনও না কখনও টিভির পর্দায় অবশ্যই দেখেছেন। সংবাদজগতে বেশ পরিচিত নাম তিনি। মূলত বিনোদনমূলক সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন শর্মিলা।
সময় বদলেছে। বদলে গিয়েছে সংবাদ পরিবেশনের ধরনও। যেখানে একটা বড় ভূমিকা পালন করেছে সোশ্যাল মিডিয়া। সেই পরিবর্তনের ভেলায় যাঁরা জায়গা করে নিয়েছিলেন, তাঁদের অন্যতম শর্মিলা। দীর্ঘদিন বিনোদন জগতের কাছাকাছি কাজ করার দরুণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন দর্শক কী চায়। অথচ সংবাদমাধ্যমের নিয়মের বেড়াজালে থেকে অনেক কিছু চাইলেও করা সম্ভব হচ্ছিল না। তা ছাড়া নিজের মতো করে কিছু করার চেষ্টা তো ছিলই।
যেমন ভাবা, তেমন কাজ। মেইনস্ট্রিম সাংবাদিকতা ছেড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় খুলে ফেললেন নিজের চ্যানেল। শুরু হল শর্মিলা শো হাউজ়, বাংলার প্রথম ‘সিগনেচার ডিজিটাল সেলেব্রিটি প্ল্যাটফর্ম’। নিজের নামাঙ্কিত মিডিয়া হাউস।
গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে বিনোদন জগৎকে দর্শকদের আরও কাছাকাছি নিয়ে এলেন শর্মিলা। টলিউড থেকে বলিউড হয়ে হলিউড, একের পর এক তারকার সাক্ষাৎকার দেখা গিয়েছে এই চ্যানেলে। কখনও তিনি পৌঁছে গিয়েছেন শ্যুটিংয়ের সেটে। কখনও বা তারকার বাড়িতে। শর্মিলার তৈরি প্রত্যেকটি ভিডিয়ো দর্শকদের থেকে অঢেল ভালবাসা পেয়েছে।
মাত্র ৫ বছরের মধ্যেই সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছে এই প্ল্যাটফর্ম। চ্যানেলের পরিসংখ্যানও নজরকাড়া। ১৬৭টিরও বেশি দেশে প্রায় ৬০ কোটি মানুষের ভালবাসা পেয়েছে এই প্ল্যাটফর্ম। এমনকি ফেসবুকে এই পেজের ফলোয়ার্স ১.৬ মিলিয়নেরও বেশি। শুধু তাই-ই নয়, ইউটিউবেও ৯ লক্ষ ছাড়িয়েছে সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা।
যাদবপুর এবং পুণে ফিল্ম ইনস্টিটিউটের স্কলার শর্মিলা ২টি ছবিও বানিয়েছেন। একটি ভারতী দেবীকে নিয়ে এবং অন্যটি 'মেঘে ঢাকা তারা'-র ৫০ বছরে ডকু-ছবি সুপ্রিয়া দেবী, গীতা ঘটক, গীতা দে-কে নিয়ে। দু’টি ছবিই কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হয়েছে। এ ছাড়াও বার্লিন, লন্ডন, বাংলাদেশের ফিল্মোৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে সেগুলি। শর্মিলার এই সাফল্যকে সম্মান জানিয়ে সম্প্রতি দুবাইতে ‘উমা অ্যাওয়ার্ডস’ (UMA) তুলে দেওয়া হয়েছে তাঁর হাতে।
মাধ্যম বদলেছে। তবে বদলাননি শর্মিলা। শুরুটা করেছেন তিনিই। বাকিরা ওঁর দেখানো পথে, ওঁকে অনুসরণ করেই এগিয়ে গিয়েছেন নিজেদের মতো করে। এ ভাবেও করে দেখানো যায়? হ্যাঁ, যায়। নবীন সাংবাদিকদের পথ দেখাচ্ছেন মিডিয়া উদ্যোগপতি শর্মিলা মাইতি। তাঁর স্বপ্ন, এই প্ল্যাটফর্মকে বিশ্বের সেরা ‘ডিজিটাল সেলেব্রিটি অ্যান্ড লাইফস্টাইল প্ল্যাটফর্মে’ পরিণত করা। সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছেন তিনি।
আরও অপরাজিতাদের গল্প জানতে ক্লিক করুন —অপরাজিতা ২০২৩