Inspirational Story

গানের সুরেই ভুবন মাতিয়েছেন আরিয়সী

গানের তালে নাচ দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের মন জিতে নিয়েছেন বনগাঁর ২৩ বছরের মেয়ে আরিয়সী সিন্থিয়া। বনগাঁর এই শিল্পীকে ঘিরে বর্তমানে কৌতুহলের শেষ নেই মানুষের। বর্তমানে তাঁর গান ও নাচের বিভিন্ন ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে চলেছে নেট মাধ্যমে।

সংগৃহীত প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৩ ০২:২৯
Share:

আরিয়সী সিন্থিয়া

গ্রাম্য পরিবেশ থেকে উঠে এসে মেঠো কণ্ঠে গান এবং সেই গানের তালে নাচে লক্ষ লক্ষ মানুষের মন জিতে নিয়েছেন ২৩ বছরের আরিয়সী সিন্থিয়া। বনগাঁর এই শিল্পীকে ঘিরে কৌতূহলের শেষ নেই মানুষের। ইদানীং তাঁর গান ও নাচের বিভিন্ন ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে চলেছে সামাজিক মাধ্যমে। দুই বাংলাতেই তাঁর গানের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। গায়িকাকে সামনাসামনি এক বার দেখার জন্য তাঁর লক্ষ লক্ষ ভক্ত অপেক্ষা করে থাকেন। তাঁকে দেখলে ফেটে পড়েন উচ্ছ্বাসে। এমনকি তাঁর সঙ্গে তোলা ছবিও এখন অনেকের প্রোফাইল পিকচার।

উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম আরিয়সীর। আসল নাম প্রতিভা পাল। পরিবারে আছেন তাঁর বাবা, মা, ভাই , দাদু আর সদ্য বিবাহিত স্বামী। বনগাঁ কুমুদিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে কল্যাণী মহাবিদ্যালয় থেকে এডুকেশনে স্নাতক আরিয়সী।

তৃতীয় শ্রেণি থেকেই গানের সঙ্গে তাঁর পথচলা শুরু। আরিয়সী কত্থক নাচে পঞ্চম বর্ষ উত্তীর্ণ করেছেন। সেই সঙ্গে রবীন্দ্রনৃত্য এবং রবীন্দ্রসঙ্গীতেও পঞ্চম বর্ষ উত্তীর্ণ। মায়ের কাছ থেকেই প্রথম গান শেখা। এর পরে তাঁর 'গুরুজি', তপন কুমার সেনের কাছে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন তিনি। আরিয়সীর কথায়, “আমার অনুপ্রেরণা আমার মা সুমনা পাল।" প্রথম দিকে বিভিন্ন জায়গায় , বিভিন্ন জলসায় সমবেত নাচের অনুষ্ঠান করতেন আরিয়সী। সেখান থেকে আজকের সঙ্গীতশিল্পী হয়ে ওঠার শুরুটা কিছুটা আচমকাই। হাবরায় একটি অনুষ্ঠানে দলের সঙ্গে নাচতে গিয়েছিলেন তিনি। অনুষ্ঠানের সংগঠক জানতেন, আরিয়সী গানটাও ভাল গান। তাই মঞ্চে একটা গান গাওয়ার অনুরোধ করেন। সেই প্রথম মঞ্চে অনুষ্ঠান। তাঁর প্রথম গান ছিল 'উরি উরি বাবা'। এর পরে ২০১৭ সালে প্রথম ইউটিউব চ্যানেল খোলেন আরিয়সী। সেখানেই মঞ্চের সমস্ত অনুষ্ঠান আপলোড করতেন। ওই চ্যানেল থেকে ধীরে ধীরে সাবস্ক্রাইবার বাড়তে থাকে। তবে তা ব্যাপক হার নেয় কোভিডের সময়ে।

২০২০ সালে তাঁর গাওয়া প্রথম কভার সং হল ‘গাওয়া হে’। তবে সেই গানটি আরিয়সী গেয়েছিলেন তাঁর মায়ের ইচ্ছেয়। তার পরে তাঁর আর একটি জনপ্রিয় গান, ‘কবে তুমি নাম ধরে ডাকবে’। তাঁর এই গানগুলি ঝড়ের গতিতে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হতে থাকে। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে সাবস্ক্রাইবার, ফলোয়ার্স। এর পরে তাঁকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

জীবনে চলার পথে নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছেন আরিয়সী। আঘাত পেয়েছিলেন খুব কাছের মানুষের থেকেও। সেই ক্ষত নিয়েই উঠে দাঁড়িয়েছেন। এখনকার সময়ে যখন সামান্য হোঁচট খেলেই নিমেষে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার কথা ভাবেন অনেকে, সেই সময়ে আরিয়সী এক উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। তাঁর সুপার হিট গানের কথা তিনি নিজেও মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন। কী সেই কথা? আরিয়সী হাসতে হাসতে বলেন "যতই করিস হিংসা তোরা, আমি বড়ই বেপরোয়া, ভয়ডর নেই যে যা বলুক বলবে.. তোদের জ্বলবে, আমার তাতেই চলবে।" এখন তাঁর ফেসবুক পেজে প্রায় ৩ মিলিয়ন ফলোয়ার্স রয়েছে। আর ইউটিউব চ্যানেলে ১৭ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার। ভারতে হোক বা বাংলাদেশে, এখন বহু মানুষ চেনেন বনগাঁর সঙ্গীতশিল্পী আরিয়সী সিন্থিয়াকে। তাঁর গাওয়া প্রথম নিজের গান 'তোদের জ্বলবে, আমার তাতেই চলবে' ইউটিউবে দেখেছেন প্রায় ১১কোটিরও বেশি মানুষ, যা বাংলা গানের ক্ষেত্রে রীতিমতো বিরল ঘটনা। অনেকে বলেন, এই গান এখন লাখ লাখ মেয়ের নিজের মত করে সফল হওয়ার অনুপ্রেরণা। আরিয়সীর স্বপ্ন-- এই বাংলা থেকেই এক দিন উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো তিনি জ্বলজ্বল করবেন সারা ভারতে। আর আর তার পরে গোটা বিশ্বকে নিজের গানের সুরে মাতিয়ে দেবেন।

আরও অপরাজিতাদের গল্প জানতে ক্লিক করুন —অপরাজিতা ২০২৩

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন