ঐশ্বর্য লোধ
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টেছে চাহিদা। সেই অনুযায়ী একাধিক বদল এসেছে ফ্যাশনের দুনিয়াতেও। সে পুরুষ হোক বা মহিলা, বদলেছে পোশাক পরিধানের ধ্যান ধারণা। সাবেক কিংবা পশ্চিমি, কোন পোশাক কী ভাবে পরতে হবে, তা জানলেই কাজ হাসিল।
শুধু সৌন্দর্য বৃদ্ধিই নয়, সঠিক সাজ জোগায় আত্মবিশ্বাসও। এই ফ্যাশন দুনিয়ার একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছেন নারীরা। এই একটি জায়গায় তাদের হারাবে কার সাধ্য? প্রত্যেক নারীই চান ফ্যাশন জগতের মধ্যে নিজেকে পরিবেষ্টিত রাখতে। নারীর এই সাজ সজ্জাকে আরও সুগঠিত করে তোলার কথা মাথায় রেখেই ব্যবসা শুরু করেন ঐশ্বর্য লোধ।
নারী মানেই সৌন্দর্য। প্রত্যেক নারীই নিজস্ব সৌন্দর্য বহন করেন। প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য। নিজের সাজকে যিনি যত ভাল ভাবে বহন করতে জানবেন, তিনি তত বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবেন। সঠিক পোশাক বাছাই সৌন্দর্যকে কয়েক গুণ আরও বাড়িয়ে দেয়। এই বিষয়টিই বুঝতে পেরেছিলেন ঐশ্বর্য। আর ঠিক সেই কারণেই সাধারণ মানুষের চাহিদা অনুযায়ী নজরকাড়া পোশাকের সম্ভার নিয়ে হাজির হন তিনি। সব রকম চেহারার মহিলাদের জন্য একাধিক নকশার পোশাক রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ঐশ্বর্য। অতিমারির সময়ে অনলাইন বিকিকিনির হাত ধরেই শুরু হয় তাঁর পোশাকের ব্যবসা। নাম দেন ‘পাউট এন পোজ়’। সেই সময়ে সামাজিক মাধ্যমে তাঁর লাইভ সেলিং অনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। শুরুটা যদিও একেবারেই মসৃণ ছিল না। একের পর এক বাধা অতিক্রম করে তবেই আজ তিনি এই সাফল্যের মুখ দেখেছেন। এই লড়াইয়ে ঐশ্বর্যর একমাত্র ভরসা ছিল তাঁর কঠোর পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাস। আধুনিক ফ্যাশন ট্রেন্ডের কথা মাথায় রেখেই এমন পোশাক তৈরি করেছেন তিনি, যা রীতিমতো নজর কেড়েছে সাধারণ মানুষের। প্যাটার্ন থেকে কাটিং, স্লিভ থেকে পোশাকের রং— সব কিছুর পরতে পরতে লেগে রয়েছে গ্ল্যামার আর অভিনবত্বের ছোঁয়া।
বর্তমানে একটি সুপরিচিত ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে ‘পাউট এন পোজ়’। বেড়েছে বিক্রিও। একাধিক দেশি, বিদেশি, ব্র্যান্ডেড পোশাক, ডিজ়াইনার পোশাক, এমনকি সাধ্যের মধ্যে তারকাদের মতো পোশাকও সাধারণ মানুষের জন্য নিয়ে এসেছেন তিনি। শহর পেরিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও আজ পৌঁছে যাচ্ছে ঐশ্বর্যর তৈরি পোশাক। কোনও কোনও ক্ষেত্রে অনুষ্ঠান বিশেষে শিপিং চার্জ ছাড়াই প্রোডাক্ট ডেলিভারি করা হয়। তাঁর পোশাকের জনপ্রিয়তার মূল মন্ত্রই হল স্বাচ্ছন্দ্য ও নান্দনিকতা।
একজন সফল ব্যবসায়ী হওয়ার পরেও ঐশ্বর্য কিন্তু এতটুকু থেমে থাকেননি। বর্তমানে এই ব্র্যান্ডের সঙ্গে বহু মহিলাকে যুক্ত করেছেন তিনি। যাঁরা প্রত্যেকে আজ স্বাবলম্বী। ব্যবসার পাশাপাশি ঐশ্বর্য নারীর ক্ষমতায়নেও বিশ্বাসী। আর তাই তাঁর প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ভাবে মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত হয়। বিভিন্ন প্রদর্শনী থেকে মেলা, সব কিছুই নিজে হাতে আয়োজন করেন তাঁরা।
ধীরে ধীরে শুধু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নয়, বরং আত্মনির্ভরতা এবং স্বপ্নপূরণের এক উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে উঠেছে ‘পাউট এন পোজ়’। সংস্থার কর্ণধার ঐশ্বর্য লোধের মতে, “এই প্রতিষ্ঠান প্রমাণ করে দিয়েছে আধুনিক যুগে মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত কোনও ব্যবসা কোথায় পৌঁছে যেতে পারে। আগামী দিনে ‘পাউট এন পোজ়’ দেশের মধ্যে সব থেকে বড় মহিলা-পরিচালিত ব্র্যান্ডে পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে চলেছে।”
আরও অপরাজিতাদের গল্প জানতে ক্লিক করুন —অপরাজিতা ২০২৩