মুর্শিদাবাদের সুতির চাঁদড়া গ্রাম এখন শুনতাম তালামারা বাড়িতে। ছবি অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
নতুন করে বাজি বিস্ফোরণে আতঙ্কে কাঁপছে সুতির নতুন চাঁদরা গ্রাম। ‘বাজিগ্রাম’ বলে পরিচিত যে গ্রামে ২০১৫ সালের মে মাসে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় বিস্ফোরণে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের বিস্ফোরণের পরেও গ্রামের দশ জন নিখোঁজ। বিস্ফোরণের খবর জানাজানি হতেই সুতি থানার পুলিশও সতর্ক হয়ে নতুন চাঁদরার উপর নজরদারি চালাতে থাকে। দিনভর টহল দিতে শুরু করে পুলিশের গাড়ি।
জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার পিভিজি সতীশ বলেন, ‘‘হতাহতের তালিকায় থাকতে পারে সুতির কারও নাম। কিন্তু কোনও কনফার্মেশন নেই এখনও। আমরা যোগযোগ রাখছি দত্তপুকুরের সঙ্গে।”
বিস্ফোরণে যার নাম উঠে এসেছে সেই জেরাত আলি এই গ্রামেরই বাসিন্দা। গ্রামেই একটি কাপড়ের দোকান রয়েছে তার বাড়িতেই। রবিবার সকালেও সে দোকান খোলা হয়েছিল।দত্তপুকুরে বিস্ফোরণের খবর পেতেই বন্ধ হয়ে যায় দোকান। গ্রামবাসীরাই বলছেন, জেরাতের কাপড়ের দোকান চালান অন্য কেউ। প্রায় সারা বছরই বাইরে থাকে জেরাত। মাস খানেক আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে সে। একদিন গ্রামে এসে ফের চলে গেছে।রবিবার গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, জেরাতের বাড়ি ও দোকান তালাবন্ধ।
নিমতিতা রেল গেট থেকে দক্ষিণে রেল লাইন বরাবর মাইল দেড়েক গেলেই নতুন চাঁদরা গ্রাম। ২০১৫ সালের মে মাসে মেদনিপুরের পিংলায় বাজি কারখানায় কাজে গিয়েছিল এই বাজিগ্রামেরই ১৩ জন কিশোর দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরির শর্তে। বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল যে ১৩ জনের তার ১০ জনই এই গ্রামের।
দীর্ঘ দিন ধরে অরঙ্গাবাদ লাগোয়া এই গ্রামটি বাজি তৈরির জন্য পরিচিত। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে মেয়ে, কিশোরেরাও একসময় হাত লাগাত বাজি তৈরিতে। পরে অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছিল বলে দাবি করা হলেও, এখন আপাতত আর সে কথা বলা যাচ্ছে না।
জঙ্গিপুরের তৃণমূল সভাপতি খলিলুর রহমান বলছেন, ‘‘এই সব কাজ দল সমর্থন করে না। তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে সাজা দেওয়া উচিত।’’