মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কয়েক দিন পরেই শুরু হচ্ছে গঙ্গাসাগর মেলা। প্রস্তুতি ঘিরে শেষ মুহূর্তের তৎপরতা তুঙ্গে। দফায় দফায় প্রস্তুতি খতিয়ে দেখছেন পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকেরা। এর মধ্যেই কাল, সোমবার গঙ্গাসাগরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সফরের আগে শনিবার সাগরে আসেন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ও দফতরের সচিব প্রভাতকুমার মিশ্র, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুলক রায়। মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখান তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা ও প্রশাসনের আধিকারিকেরা।
প্রশাসন সূত্রের খবর, সোমবার দুপুরে হেলিকপ্টারে গঙ্গাসাগরে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী। পুজো দেবেন কপিলমুনির মন্দিরে। যাবেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্যালয়ে। কপিলমুনি মন্দিরের প্রধান পুরোহিত জ্ঞানদাস মোহন্তের সঙ্গেও তিনি দেখা করবেন। এ ছাড়া, সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের মাধ্যমে পাথরপ্রতিমা ও নামখানা ব্লকে দু’টি সেতুর উদ্বোধন করবেন। সাগরে এসে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ভবন ‘ঊর্মিমুখর’-এ থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই মেলার প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করবেন। বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রীরা ছাড়াও জেলা প্রশাসনের কর্তারা থাকবেন সেই আলোচনায়। এ দিন হেলিপ্যাডে ওঠা-নামার মহড়া দেয় হেলিকপ্টার।
মন্ত্রী, আধিকারিকেরা এ দিন কাকদ্বীপের লট-৮, কচুবেড়িয়া বাসস্ট্যান্ড, বেনুবন লঞ্চ ঘাট, গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন। মুড়িগঙ্গা নদীতে ড্রেজ়িংয়ের কাজ কেমন চলছে, তা-ও ঘুরে দেখেন। বার বার ভাঙনে গঙ্গাসাগরের সমুদ্রতট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেখানে পুণ্যার্থীদের স্নান করতে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তা খতিয়ে দেখেন আধিকারিকেরা।
প্রশাসন জানিয়েছে, মন্দিরের সোজাসুজি সমুদ্রতটে ধস নেমেছিল। নতুন করে সমুদ্রতট গড়ে তোলা হয়েছে। বাফার জ়োন তৈরি হয়েছে তীর্থযাত্রীদের থাকার জন্য। কচুবেড়িয়া বাসস্ট্যান্ড ও গঙ্গাসাগর বাসস্ট্যান্ড থেকে মেলা চত্বরে ১ নম্বর থেকে ৫ নম্বর রাস্তা পর্যন্ত আলোর কাজও শেষ হয়েছে।
এ বছর গঙ্গাসাগর মেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘কিউআর কোড’-ও চালু করা হচ্ছে। এই ‘কিউআর কোড’ মোবাইলে স্ক্যান করে পুণ্যার্থীরা পানীয় জল, শৌচালয়, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বাসস্ট্যান্ড, জেটি ঘাট-সহ বিভিন্ন পরিষেবার ব্যাপারে তথ্য পেয়ে যাবেন। মেলায় করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী সব ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে বলেও জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।
সেচমন্ত্রী বলেন, “শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি ঘুরে দেখলাম। মুড়িগঙ্গা নদীতে ড্রেজ়িয়ের কাজ আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। আশা করছি, মেলার সময়ে ১৫-২০ ঘণ্টা ভেসেল চলাচল করবে।” সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রীর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো পুণ্যার্থীদের জন্য সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যাতে তাঁরা সাগরে এসে পুণ্যস্নান সেরে সুষ্ঠ ভাবে ফিরতে পারেন। প্রস্তুতি প্রায় শেষ।”