Monsoon Session of Parliament

অনাস্থা সত্ত্বেও হট্টগোলে বিল পাশ কেন্দ্রের

বেলা তিনটেয় অধিবেশন শুরু হলে ঝড়ের গতিতে ‘জনবিশ্বাস বিল’ পাশ করিয়ে নেয় সরকার। ছোটখাটো অপরাধে কারাদণ্ডের ব্যবস্থা রয়েছে, এমন কিছু আইনের সংশোধন ওই বিলের লক্ষ্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৩ ০৯:০৭
Share:

—প্রতীকী ছবি।

বিরোধীদের হট্টগোলের মধ্যেই সংসদের দু’কক্ষে একাধিক বিল পাশ করিয়ে নিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। লোকসভায় আজ ‘জনবিশ্বাস বিল’ পাশ করানো হয়। সামান্য অপরাধের জন্য জেল খাটার মতো ‘গুরুতর’ শাস্তির বদলে শুধু জরিমানার ব্যবস্থা করতে বিলটি আনা হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় আইন বাতিল করার লক্ষ্যে আনা ‘রিপিলিং অ্যান্ড অ্যামেন্ডিং’ বিলটিও আজ লোকসভায় পাশ হয়েছে। স্বচ্ছতা বজায় রেখে সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় খননের বরাত দেওয়া সংক্রান্ত ‘অফশোর এরিয়া মিনারেল বিল’-টি আজ পেশ হয়েছে লোকসভায়। ও দিকে, রাজ্যসভায় আজ পাশ হয়েছে সংশোধিত সিনেমাটোগ্রাফ বিল, যেখানে জাল সিনেমা (পাইরেসি) হটিয়ে লাইসেন্সিংয়ের প্রক্রিয়া সহজতর করার কথা বলা হয়েছে।

Advertisement

মণিপুর কাণ্ড ও তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতার প্রতিবাদ জানাতে আজ কালো পোশাক পরে সংসদে এসেছিলেন অধিকাংশ বিরোধী সাংসদ। পুরুষেরা আসেন কালো শার্ট-প্যান্ট বা কালো পাঞ্জাবি পরে। মহিলারা কালো শাড়ি বা কালো সালোয়ার পরেছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়ের মতো দু’-এক জন সাদা পাঞ্জাবি পরে এলেও তাঁদের হাতে ছিল কালো ব্যান্ড। এই আবহে জনবিশ্বাস বিল নিয়ে বলতে উঠে প্রথমেই বিরোধীদের পোশাকের কালো রংকে তাঁদের মনের রংয়ের সঙ্গে তুলনা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। বিরোধীরা একজোট হলেও তাঁদের হার নিশ্চিত বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘এঁদের অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ অন্ধকার।’’ এর পরেই প্রবল হট্টগোলের জেরে অধিবেশন সাময়িক ভাবে মুলতুবি করে দেন ডেপুটি স্পিকার।

বেলা তিনটেয় অধিবেশন শুরু হলে ঝড়ের গতিতে ‘জনবিশ্বাস বিল’ পাশ করিয়ে নেয় সরকার। ছোটখাটো অপরাধে কারাদণ্ডের ব্যবস্থা রয়েছে, এমন কিছু আইনের সংশোধন ওই বিলের লক্ষ্য। নতুন আইনে সামান্য অপরাধে জেল খাটার শাস্তি তুলে দিয়ে শুধুমাত্র জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যাতে মামলার পাহাড় কমে। গত বছর এই বিল সংসদে পেশের পরে যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল। সামান্য কিছু সংশোধনের পরে আজ ওই বিলটি লোকসভায় পাশ করিয়ে নেয় সরকার। যদিও বিরোধীদের মতে, অনেক ক্ষেত্রে গুরু পাপে লঘু দণ্ডের ব্যবস্থা হচ্ছে। অপরাধীদের ভয় থাকবে না। যদিও পীযূষের দাবি, এক বার বা দু’বার কোনও অপরাধ করলে জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। একই অপরাধ বার বার করলে তখন ফৌজদারি অপরাধ হিসেবেই তা গণ্য হবে।

Advertisement

অনাস্থা প্রস্তাব আসা সত্ত্বেও কেন সরকার একের পর এক বিল পাশ করাচ্ছে, সেই প্রশ্নে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস সাংসদ কার্তি চিদাম্বরম বলেন, ‘‘সংসদীয় কার্যপ্রণালীতে স্পষ্ট বলা রয়েছে, সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব স্পিকার গ্রহণ করলে ভোটাভুটি না হওয়া পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি বিল পাশ করানো যায় না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে একের পর এক বিল পাশ করানো হচ্ছে, যা সংসদীয় প্রথার বিরুদ্ধে।’’ জনবিশ্বাস বিল নিয়ে আলোচনার শুরুতেও বিল আনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী। তিনি ১৯৭৮ সালের মোরারজি দেশাই সরকারের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের উদাহরণ তুলে বলতে গেলে কার্যত ওয়েলে নেমে তাঁকে বলতে বাধা দেন বিজেপির একাধিক মন্ত্রী-সাংসদেরা। নেতৃত্বে ছিলেন সেই পীযূষই। অধীরের বক্তব্যের পাল্টা সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বলেন, ‘‘অনাস্থা প্রস্তাব স্পিকার গ্রহণ করেছেন। সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দশ দিন সময় রয়েছে। ওই দশ দিনের যে কোনও দিন স্পিকার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সরকার প্রস্তুত। আমাদের কাছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement