Neel Bhattacharya

কলকাতা ছাড়তে হবে বলে এমবিএ পড়তে বাইরে যাইনি

যখনই আমার স্কুলের সামনে দিয়ে যাই, আমি নস্টালজিক হয়ে পড়ি।

Advertisement

নীল ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২০ ১৪:২৪
Share:

‘ফুচকা ছাড়াও বিরিয়ানি খেতেও খুব ভালবাসি’

ছোটবেলা থেকে এই শহরে আমি বড় হয়েছি। সাউথ পয়েন্ট স্কুলে পড়েছি। তারপর সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ। এরকমও হয়েছে, এমবিএ করার জন্য বাইরে পড়ার সুযোগ পেয়েছি, কিন্তু কলকাতা ছাড়তে হবে, মা-বাবাকে ছাড়তে হবে বলে যাইনি।

Advertisement

কলকাতার বাইরে অনেক শহরেই আমি গিয়েছি। কিন্তু কলকাতার মানুষের মধ্যে যে আবেগ আছে, তা অন্য কোথাও পাইনি। সেজন্য আমার যে বন্ধুরা বাইরে গিয়েছে, তারা কলকাতাকে খুব মিস করে। আমি অনেক বার ভেবেছি মুম্বই যাব। কিন্তু কলকাতা ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট সহ্য করাটা খুব কঠিন। কলকাতাকে কখনও আমি ছাড়তে চাই না।

কলকাতার অনেক নিজস্বতা রয়েছে। যেমন কলকাতার খাওয়াদাওয়া। এখানকার মানুষরা যেভাবে খাওয়াদাওয়া উপভোগ করে, আর খাবারের টেস্ট এখানকার মানুষের কাছে যতটা ম্যাটার করে, তা হয়তো অন্য কোথাও পাওয়া মুশকিল। দক্ষিণ ভারতে গেলে আমি একেবারেই ওখানকার খাবার খেতে পারি না। কলকাতার রাস্তায় কত রকম খাবার পাওয়া যায়। আর আমি ভীষণ খাদ্য রসিক, ভীষণ খেতে ভালবাসি। অন্য কোনও শহরে এই ব্যাপারটা পাই না।

Advertisement

আরও পড়ুন: কলকাতা, ভেবে দেখো যাবে কি না আমার সাথে

‘আই রিয়েলি লভ কলকাতা’

প্রধানত আমি দক্ষিণ কলকাতায় বড় হয়েছি। দক্ষিণ কলকাতার একেকটা রাস্তার সঙ্গে আমার একেকটা ইমোশন জড়িয়ে আছে। তাই যখনই আমার স্কুলের সামনে দিয়ে যাই, আমি নস্টালজিক হয়ে পড়ি। আমি খেলতে যেতাম বিবেকানন্দ পার্কে। সেখানে গেলেও একই বিষয় হয়। কোথাও কোথাও প্রেম করতে যেতাম। সে সব রাস্তাগুলোর বিষয়ও একই অনুভূতি কাজ করে। এসব ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাওয়া খুব কঠিন। আই রিয়েলি লভ কলকাতা।

আরও পড়ুন: কলকাতার রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আমার প্রথম কবিতা লেখা

আসলে কলকাতার সবকিছুই আমার ভাল লাগে। যে কোনও জিনিসে খুঁত থাকেই। কিন্তু এখানে এত ভাল বিষয় আছে যে, ছোটখাটো বিষয়গুলোকে ভুলে গিয়ে সেগুলো মানিয়ে নিতে পছন্দ করি। কলকাতার অনেক জায়গা আছে, যেগুলোতে আমি অনেকক্ষণ কাটাতে পারি। যেমন গঙ্গার পাড়। তবে কিছু জায়গা আমার কাছে বেশি প্রিয়, যেগুলোতে আমার স্কুল জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছি। যেমন বিবেকানন্দ পার্ক, রবীন্দ্র সরোবরসংলগ্ন এলাকা।বিবেকানন্দ পার্কের সামনে বন্ধুদের সঙ্গে দিনের পর দিন কাটিয়েছি, থিয়েটার নিয়ে আড্ডা দিয়েছি, পার্কের ভেতরে ক্রিকেট খেলেছি। এইসব এলাকায় কত কিছু খেয়েছি। পার্কের একদিকে একটা জায়গা আছে যেখানে বিভিন্ন রকমের ফুচকা, চাট পাওয়া যায়।এখনও যখনই ওদিকে যাই, ফুচকা, দইবড়া খাই। এখানকার পাপড়ি চাটও একটা স্পেশাল ব্যাপার। কলকাতায় প্রচুর চায়ের দোকান আছে,সে সব দোকানে আড্ডা হয়। কিন্তু আমি নিজে যেহেতু চা খাই না,চায়ের দোকানগুলো ফুচকা স্টল হয়ে গেলে আমি বেশি খুশি হব। কারণ ফুচকার স্টল আমাকে ভীষণ আকর্ষণ করে। ‘কৃষ্ণকলি’র সেটে মাঝে মাঝেই আমরা বাইরে থেকে ফুচকা আনিয়ে সবাই মিলে খাই। খাওয়াদাওয়া আমাদের সেটে চলতেই থাকে।ফুচকা ছাড়াও বিরিয়ানি খেতেও খুব ভালবাসি।

কলকাতার বাইরে এখানকার মানুষদের অলস ভাবা হয়। আমার কিন্তু মনে হয়, একটু অলস হওয়া ভাল। অলস হলে মানুষ একটু বাড়িতে থাকে, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটায়। কিন্তু আমি নিশ্চিত যে, কলকাতার মানুষ যারা যা করতে চায় ঠিক সেটাই করতে পেরেছে। এটা তো নয় যে কেউ কিছু করেনি। অনেকে অনেক কিছুই করেছে, সেটা ভালভাবেই করেছে। কলকাতা ছাড়া অন্য শহরের মানুষরা সবাই কি সফল? তা তো নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement