বাগুরান হল পূর্ব মেদিনীপুরের কন্টাই মহকুমার অন্তর্গত একটি প্রায় অনাবিষ্কৃত এবং শান্ত সমুদ্র সৈকত। কলকাতা থেকে মাত্র ৪ ঘণ্টা দূরে ঝাউ গাছে ঘেরা, সোনালি বালির সৈকতটি সপ্তাহের শেষে আপনার একটু হাঁপ ছেড়ে বাঁচার মতো জায়গা হতেই পারে। সন্ধ্যা এখানে খুব সুন্দর সময়। সমুদ্র সৈকতে কিছু ক্ষণ থাকার পর আপনি জেলেদের গ্রামে যেতে পারেন এবং তাঁদের জীবনযাত্রার আভাসও পেতে পারেন। হাওড়া থেকে ট্রেনে করে কাঁথি যেতে হবে। কাঁথি স্টেশন বা বাস স্ট্যান্ড থেকে একটি গাড়ি বা অটো ভাড়া করে পৌঁছনো যায় এই অঞ্চলে।
বরন্তী
পুরুলিয়ার অন্যতম সুন্দর জায়গা বরন্তী। এক দিকে বিহারীনাথ পাহাড় এবং অন্য দিকে পঞ্চকোট পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত, শহরের বিশৃঙ্খলা থেকে দূরে প্রশান্তি খোঁজার জন্য আদর্শ। এখানকার মুরুদি হ্রদ তৈরি হয়েছে মাটির বাঁধ দিয়ে। এই হ্রদে সূর্যাস্তের দৃশ্য অপূর্ব বলে মনে হবে। বরন্তী থেকে আপনি পুরুলিয়ার অন্যান্য আকর্ষণ যেমন অযোধ্যা পাহাড়, বিহারীনাথ পাহাড় দেখে আসতে পারেন। হাওড়া স্টেশন থেকে আসানসোলের ট্রেন ধরে সেখান থেকে গাড়িতে ৪০ কিলোমিটার দূরে বরন্তী হতে পারে সাপ্তাহিক ছুটি কাটানোর জন্য উপযুক্ত।
কিরিবুরু এবং মেঘাতুবুরু
কিরিবুরু এবং মেঘাতুবুরু হল ওড়িশা-ঝাড়খণ্ড সীমান্তের কাছের যমজ শহর। একে অপরের থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। এই দু’টি পাহাড়ি গন্তব্য প্রধানত ‘সেল’-এর অধীনে খনির এলাকায় পড়ে। এখানে প্রায় সারা বছরই ঝকঝকে নীল আকাশের সঙ্গে পাহাড় এবং জঙ্গল বিশেষ ভাবে দ্রষ্টব্য। দু’টি শহরের যে কোনও একটিতে থাকতে পারেন আপনি। এখানে কয়েকটি সুন্দর জলপ্রপাত রয়েছে। কিরিবুরু ভিউপয়েন্ট থেকে আশেপাশের পাহাড় এবং উপত্যকার একটি স্মরণীয় প্যানোরামিক ভিউ পাবেন। সময় পেলে সারন্দার জঙ্গলেও ঘুরে আসতে পারেন। হাওড়া থেকে যে কোনও ট্রেন ধরুন চলে যান টাটানগর। সেখান থেকে কিরিবুরুর সরাসরি বাস পাবেন।
মৌসুনি দ্বীপ
মৌসুনি দ্বীপ হল কলকাতার কাছে নতুন তৈরি হওয়া সপ্তাহান্তের গন্তব্যগুলির মধ্যে একটি৷ এটি একটি বিস্ময়কর স্থান। নদীর সঙ্গে সমুদ্র, বালি এবং নির্জনতার নিখুঁত সংমিশ্রণ। সুন্দরবন ব-দ্বীপ সংলগ্ন নামখানায় অবস্থিত। স্থানটি পাখি প্রেমীদের জন্য আদর্শ। পাখি দেখার জন্য কাকরামারির চর সবচেয়ে ভালো জায়গা। সৈকত থেকে সূর্যাস্তও নিঃসন্দেহে সুন্দর। এখানকার সবচেয়ে আকর্ষণীয় যা, তা হল বাসস্থানের জন্য সৈকতে তাঁবু। সন্ধ্যায় সমুদ্র সৈকতে সুন্দর সূর্যাস্ত উপভোগ করুন এবং রাতে ক্যাম্প ফায়ারে কিছু চমৎকার মুহূর্ত কাটান। শিয়ালদহ দক্ষিণ থেকে নামখানা যাওয়ার লোকাল ট্রেন ধরুন। নামখানায় নেমে রিকশা/টোটো নিয়ে জেটি থেকে ফেরিতে হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদী পার হয়ে বাগডাঙ্গা খেয়া ঘাটে ম্যাজিক ভ্যান নিন। ফেরি করে নদী পার হয়ে বাগডাঙ্গায় নামুন। এখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে মৌসুনি পৌঁছে যাবেন অল্প সময়েই।
বাংরিপোশি
যদি আপনি এমন একটি পাহাড়ি জায়গায় ভ্রমণ করতে চান, যার সম্পর্কে অনেকেই জানেন না, তবে সাপ্তাহিক ছুটি কাটাতে চলে যান বাংরিপোশি। কলকাতা থেকে মাত্র ২২০ কিলোমিটার দূরে ওড়িশায় অবস্থিত পূর্ব ঘাটের এই ছোট্ট গ্রামটি আপনাকে সবুজের মাঝখানে আঞ্চলিক বন্যপ্রাণী এবং উপজাতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করাবে। দু’পাশে সবুজ গাছের সারিবদ্ধ প্রায় ফাঁকা রাস্তার মাঝখান দিয়ে গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতাও আপনার মনে থাকবে অনেক দিন। এই অঞ্চলে প্রচুর জলপ্রপাত, নদীখাত রয়েছে। ট্রেকিং করতে চাইলেও নিরাশ হতে হবে না আপনাকে। সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান, জোরান্ডা এবং বারহিপানি জলপ্রপাত, চাহালা, ঠাকুরানি পাহাড়, বাঁকাবল হ্রদ প্রভৃতি এই অঞ্চলের দর্শনীয় স্থান।