Follow us on

Download the latest Anandabazar app

© 2021 ABP Pvt. Ltd.

Advertisement

৩০ অক্টোবর ২০২৪ ই-পেপার

Anglo Indian Recipes: ইতিহাস ধরা পড়ে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান রান্নায়, জেনে নিন জিঞ্জার কেকের গল্প

পুরনো কলকাতার খাবারে লেগে রয়েছে নানা রকম স্বাদ। জেনে নিন কিছু অ্যাংলো রেসিপির গল্প।

সায়ন্তনী মহাপাত্র
কলকাতা ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৭:০১
ছবি: সায়ন্তনী মহাপাত্র

বো ব্যারাকের বড়দিনের টেবিলে এই পুডিং তাই শুধু একটি বহমান একটি প্রথা নয় বরং তাঁদের গৌরবময় অতীতের একটি প্রামাণ্য দলিল।
ছবি: সায়ন্তনী মহাপাত্র

স্টিমড পুডিং শুধু অ্যাংলো ইন্ডিয়ান একটি রেসিপি-ই না, এতে ধরা আছে ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ সময়। একটা সময়, যেখানে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে লন্ডনের পরেই আসত কলকাতার নাম। সাম্রাজ্য বাড়ানোর তাগিদে ফি হপ্তায় খোদ ইংল্যান্ড থেকে তখন কলকাতার বন্দরে সপরিবারে এসে পৌঁছতেন ইংরেজ অফিসাররা। সদ্য যুবতী তাঁদের স্ত্রীদের হাতে পড়ত সংসার সামলানোর ভার।

কিন্তু কলকাতার গরম, প্রতিকূল পরিবেশ, রান্নার সঠিক সামগ্রী ও সরঞ্জামের অভাবে অচিরেই তাঁরা নাজেহাল হয়ে পড়তেন। তখন তাদের মুশকিল আসান হয়ে দেখা দিতেন মেদিনীপুর, চিটাগং, ওড়িশা থেকে আসা তাঁদের দেশি খানসামারা। মেমসাহেবের কাছে শিখে কাঠের চুলায় কেক পাউরুটি রোস্ট থেকে শুরু করে মাথা খাটিয়ে ভাপে সেদ্ধ করে বানাতেন এই বিশেষ বড়দিনের পুডিং। মেমসাহেবের খুশির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে, দেশি খানসামার স্বাদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুডিংএ বাড়তে থাকত মিষ্টির পরিমাণ, আদার গন্ধ আর অবশ্যই পড়ত এক চিমটে গরম মশলা। এ ভাবেই ফিরিঙ্গি রান্নায় দেশি উপকরণের ফোড়নে জন্ম নিত এক অভিনব ফিউশন রান্না। কলকাতার অ্যাংলো ইন্ডিয়ান ইতিহাসের মতই যা এ পার ও পারের এক বৈচিত্রময় মিশেল। বো ব্যারাকের বড়দিনের টেবিলে এই পুডিং তাই শুধু একটি বহমান একটি প্রথা নয় বরং তাঁদের গৌরবময় অতীতের একটি প্রামাণ্য দলিল।

Advertisement


ছবি: সায়ন্তনী মহাপাত্র


স্টিমড জিঞ্জার পুডিং আর কাস্টার্ড সস

উপকরণ:

পুডিংয়ের জন্য—

ময়দা: ১ কাপ

ব্রাউন সুগার: ১/২ কাপ

মাখন: ১০০ গ্রাম

ডিম: ২টি

আদার ক্যান্ডি: ৪-৫ টি

আদার গুঁড়ো: ১/২ চা চামচ

জায়ফল গুঁড়ো: এক চিমটি

নুন:এক চিমটি

গরম মশলার গুঁড়ো: ১/৩ চা চামচ

পদ্ধতি:

ওভেন প্রিহিট করুন ১৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে।

একটা মাঝারি মাপের পুডিংয়ের বাটি নিন। মাপ মতো কেটে বাটির নীচের অংশে দিয়ে দিন বাটার পেপারের টুকরো। পুরো বাটিতে ভাল করে মাখন মাখিয়ে নিন।

আদার ক্যান্ডি দিয়ে মিক্সার গ্রাইন্ডেরে চিনি গুঁড়ো করে নিন.

একটা বড় বাটিতে গুঁড়ো চিনি, নুন, বাটার, গুঁড়ো আদা, জায়ফল আর গরম মশলার গুঁড়ো ভাল করে ফেটিয়ে নিন।

একে একে ডিম মেশান।

ময়দা মিশিয়ে মসৃণ গোলা তৈরি হলে ঢেলে দিন তৈরি করে রাখা পুডিংয়ের পাত্রে।

এক টুকরো ফয়েল দিয়ে টাইট করে মুখটা ঢেকে সুতো দিয়ে বেঁধে নিন.

ভাপে রান্না করার জন্য বেশ গভীর একটি পাত্রে একটি ছোট পাত্র দিন। পুডিংয়ের বাটির উপরে বসিয়ে সাবধানে ধার থেকে গরম জল ঢেলে দিন। জলের পরিমাণ বাটির উচ্চতার মাঝামাঝি হলে শক্ত করে পাত্রটি ঢেকে দিন। আঁচের পরিমাণ একদম কমিয়ে দিয়ে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পুডিংটি ভাপান। এক ঘণ্টা সময় শেষ হওয়ার পরে প্রতি ১৫ মিনিট অন্তর টুথপিক গুঁজে দেখে নেবেন পুডিং রান্না হয়েছে কি না। যখন টুথপিকটি একদম শুকনো বেরোবে তখন সাবধানে পাত্রটি বার করে আনুন।

ফয়েল খুলে ঠান্ডা হতে দিন। তার পর সাবধানে ছাঁচ থেকে বার করে পরিবেশন করুন কাস্টার্ড সস দিয়ে।

কাস্টার্ড সস—

উপকরণ:

ক্রিম: ১/২ কাপ

দুধ: ১/৩ কাপ

ডিমের কুসুম: ৩ টি

চিনি: ১/৪ কাপ

ভ্যানিলা এসেন্স: ১ চা চামচ

পদ্ধতি:

অর্ধেক চিনি দিয়ে ডিমের কুসুম ভাল করে ফেটিয়ে নিন.

একটি পাত্রে দুধ, ক্রিম, বাকি চিনি নিয়ে গরম করুন। ফুটে ওঠার আগে আঁচ বন্ধ করে অর্ধেক দুধ ডিমের কুসুমে দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ফেটিয়ে নিন। যে পাত্রে দুধ গরম করেছেন সেই পাত্রে কুসুমের মিশ্রণ দিয়ে ভাল করে ফেটিয়ে নিন। এটি আবার আঁচে বসান। কম আঁচে ধীরে ধীরে ক্রমাগত নেড়ে এটিকে ঘন করুন। নামিয়ে ভ্যানিলা মেশান।

ঠান্ডা করে পুডিংয়ের উপরে ঢেলে পরিবেশন করুন।

Advertisement