তাই পৌষালীর মত হল, ভাল ব্র্যান্ডের স্মাজ ফ্রি এবং ওয়াটার প্রুফ লিপস্টিক পরুন। এতে আপনার সাজও অটুট থাকবে। আবার স্বাস্থ্যবিধিও রক্ষিত হবে। তবে লিপস্টিক শুধু পরলেই হবে না। সঠিক নিয়ম মেনে পরতে হবে। লিপস্টিকের আগে ঠোঁটে প্রাইমার লাগানো অবশ্যকর্তব্য। মুখে লাগানোর প্রাইমার নয় কিন্তু। কিনতে হবে লিপ প্রাইমার। প্রাইমার লাগানোর পরে লাগিয়ে নিন লিপস্টিক।
অনেকেরই অভ্যাস আছে লিপস্টিকের পরে কমপ্যাক্ট বা সাধারণ পাউডারের একটা স্পর্শ দেওয়া। পৌষালীর কথায়, এ সব বিগত দিনের অভ্যাস। নামী ব্র্যান্ডের লিপস্টিকের সঙ্গে এখন পাউডার বা ক্রিম কিছুই ব্যবহার করতে হয় না। কারণ লিপস্টিকের সঙ্গেই সব দেওয়া থাকে। তাই এখন লিপস্টিকের আগে প্রাইমারই যথেষ্ট। এখন লিক্যুইড লিপস্টিক তো খুবই জনপ্রিয়। তবে অনেকেই লিক্যুইড লিপস্টিক পরতে চান না, কারণ পরার পরে ঠোঁট খুব শুকনো হয়ে যায়। সেই সমস্যার সমাধানও লুকিয়ে আছে প্রাইমারেই।
আরও একটা লিপস্টিক-অভ্যাসকে বাতিলের দলে ফেলতে চান পৌষালী। তা হল, লিপস্টিক ফ্রিজে রাখা। তাঁর কথায়, “এখন ভাল ব্র্যান্ডের লিপস্টিকে প্রিজারভেটিভ থাকেই। তাই ফ্রিজের ভিতরে রাখার কোনও প্রয়োজন নেই।’’
তবে লিপস্টিক শুধু পরলেই হবে না। বছরভর ঠোঁটের যত্নও নিতে হবে। কারণ, লিপস্টিক যত দামিই হোক না কেন, ঠোঁটের স্বাস্থ্য ভাল না হলে, সব মাটি। তাই নিয়মিত স্ক্রাবিং করুন ঠোঁটে। বাজারে বিভিন্ন সংস্থার লিপ স্ক্রাবার পাওয়া যায়। বাজেট অনুযায়ী কিনে নিন। তবে প্রসাধনীর গুণমানের জন্য আপস না করাই ভাল। স্ক্রাবিং করে লাগিয়ে নিন বাম। কারণ ফুটিফাটা ঠোঁটে লিপস্টিক দেখতে একটুও ভাল লাগে না।
যাঁদের ঠোঁট শুষ্ক, পৌষালীর মতে তাঁরা বেছে নিতে পারেন ক্রেয়ন। ঠোঁটে শুষ্কতার সমস্যা না থাকলে ব্যবহার করাই যায় সুপারম্যাট লিপকালার। এখন এমনিতে ন্যুড শেড এবং সুপারম্যাটের দিন। গ্লসি লিপস্টিক অতটাও পছন্দ করছেন না সাজ সচেতন মহিলারা। লিপস্টিক যা-ই হোক না কেন, স্কিনটোনের সঙ্গে ম্যাচ করা সাজসজ্জার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাই লিপস্টিক কেনার ব্যাপারে পৌষালী এখনও পুরনোপন্থী। তাঁর মতে, দোকানে গিয়ে স্যাম্পল লিপস্টিক হাতে ঘষে তার পরই শেড নির্বাচন করা উচিত। কারণ অনলাইনে শেড বোঝা যায় না অনেক সময়েই। কয়েক দিন আগেও তো দোকানে যাওয়া সম্ভব ছিল না। তখন অনলাইন ছাড়া গতি ছিল না। কিন্তু এখন সাবধানতা নিয়ে ক্রেতারা পা রাখছেন দোকানে। কেনার সময়ে দেখে নিন লিপস্টিকের উপকরণ এবং এক্সপায়ারি ডেট। দোকানে লিপস্টিকের শেড পছন্দ করার সময় টেস্টার কখনওই ঠোঁটে লাগাবেন না। বরং, তা কব্জির কাছে লাগিয়ে রং পছন্দ করে নিন।
ঠোঁট যদি শুকনো হয়, তা হলে ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার না করাই ভাল। বেছে নিন এমন লিপস্টিক, যা আপনার ঠোঁটকে আর্দ্র রাখবে। পাতলা, আকারে ছোট ঠোঁট হলে ব্যবহার করুন হাল্কা রং। গাঢ় শেডে ঠোঁট আরও ছোট দেখাবে। ঠোঁট চওড়া, মোটা হলে সঙ্গে রাখুন হালকা শেডের লিপস্টিক। মনে রাখবেন, লিপস্টিক গাঢ় হলে লিপলাইনার হবে হালকা। আর হাল্কা শেডের লিপস্টিকের জন্য আদর্শ ডার্ক শেডের লিপলাইনার। এই কম্বিনেশন না থাকলে ঠোঁটের পুরো সাজ মাটি। লিপস্টিক পরার পরে সব সময় টিসু দিয়ে বাড়তি রং তুলে দিন। লিপস্টিক পরার ব্রাশ হবে কৌণিক। গোল ব্রাশ দিয়ে লিপস্টিক লাগালে সেই রং ভাল আসবে না।
সবার শেষে, যত্ন নিন লিপস্টিকেরও। খেয়াল রাখুন খোলা বা বন্ধের সময় যাতে সেটি ভেঙে না যায়। বন্ধ করার সময় দেখবেন যেন ভিতরে বাতাস না প্রবেশ করে। অর্থাৎ লিপস্টিক রাখবেন বায়ু নিরোধক করে।
নিয়মিত যত্ন নিন আপনার ঠোঁট এবং লিপস্টিকের। রঞ্জিত অধর এবং ওষ্ঠ কথা বলবে আপনি নীরব থাকলেও।