যতই বহুতলে মুখ ঢাকুক না কেন, কলকাতা জুড়ে এখনও একটা পাড়া সংস্কৃতি ছড়িয়ে আছে। এটাই আমার সবথেকে ভাল লাগে। হতে পারে, আগের থেকে সেটা অনেক কমে গিয়েছে। কিন্তু তাও আছে। দেশের অন্য মেট্রো শহরে কিন্তু এটা আমি পাইনি। এখন না হয় গুগল ম্যাপ হয়ে গিয়েছে। আগে তো অচেনা জায়গায় ঠিকানা খুঁজতে সেই পাড়ার লোকই ছিলেন ভরসা। তাঁদের জিজ্ঞাসা করলে পথনির্দেশ তো দিয়েই দিতেন। পারলে, অতিথিকে সঙ্গে করে পৌঁছে দিতেন সে বাড়ির সদরদরজায়। এই জিনিসটা পৃথিবীর কোনও শহরে নেই। হ্যাঁ, অনেকের মনে হতে পারে কলকাতার লোকের কৌতূহল বেশি। বা, এখানকার পাড়া সংস্কৃতিতে ব্যক্তিগত ‘স্পেস’ থাকে না। কিন্তু আমি বলব, এটা যার যার দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে। অন্য শহরে তো রাস্তায় দেহ পড়ে থাকলেও কেউ ফিরে তাকায় না। কিন্তু কলকাতার রাজপথে সামান্য কিছু একটা হলেই পাঁচজন লোক জুটে যাবেন। নিন্দুকরা বলবেন, এ শহরের লোকের হাতে অঢেল সময়। আমিতো বলব, এই শহর ইট-বালি-পাথরের জঙ্গল নয়। এখানে কিছুটা হলেও এখনও প্রাণ আছে।
খাবারের দিকে তো আমার শহরকে কেউ কোনওদিন টেক্কা দিতে পারবেন না। কলকাতার মতো ফুচকা আর বিরিয়ানির স্বাদ ভারতের অন্য কোনও শহর করে দেখাক দেখি! গোলগাপ্পা, পানিপুরি—যে নামেই ডাকো না কেন, কলকাতার মতো স্বাদ সেখানে নেই। আমি যখন ফুচকা খেতে শুরু করি, তখন ৪ আনায় ৬টা পাওয়া যেত। এখন তো স্বপ্নের মতো মনে হয়। মাঝে মাঝে মনে হয়, আগের মতো ফুচকাওয়ালার পাশে দাঁড়িয়ে পড়ি।এখন মাস্কের সময়, চিনে ফেলারও সম্ভাবনা কম।