কলকাতা বললেই আমার প্রথমেই মনে পড়ে মোহনবাগানের কথা। আমি থাকতাম শ্যামনগরে। সেখান থেকে ট্রেনে শিয়ালদহ। তারপর বাসে মোহনবাগান মাঠ। অনুশীলন শেষ করেই আবার বাস ধরে শিয়ালদহ হয়ে ফের শ্যামনগর। এ ছিল আমার রোজকার রুটিন। প্রতিদিন ট্রেনে যাতায়াত করলে ফুটবলার হওয়া মুশকিল। এই কথা বুঝতে পেরে মোহনবাগান কর্তা ধীরেন দে আমাকে মহম্মদ হাবিব, আকবরদের সঙ্গে রয়েড স্ট্রিটের মেসে থাকতে বলেন। সেই থেকেই কলকাতার প্রেমে পড়ে যাই। তবে, খেলা আর তারপর অফিস করে মেসে ফিরে আসা এটাই ছিল রোজকার রুটিন। সঙ্গে ছিল হাবিবদার কড়া শাসন।
সাতের দশকের অশান্ত সময়ে কলকাতায় অনেক সমস্যা থাকলেও মোহনবাগানের ফুটবলার বলে সবকিছু থেকেই ছাড় পেয়ে যেতাম আমরা। খেলা আর মেসের বাইরে খুব বেশি বেরতাম না। মেসের আশেপাশের পরিবেশ যে খুব ভাল ছিল তেমনটাও নয়। তবে কাছের একটা স্কুলের ছাত্ররা আমাদের চিনত। আমাদের দেখলেই ওরা আনন্দ পেত। ছুঁতে চাইত।
পরের দিকে মাঝে মধ্যেই পার্ক স্ট্রিটের বিভিন্ন রেস্তরাঁয় ঊষা উত্থুপের গান শুনতে যেতাম। ব্যাস ওইটুকুই। রাত সাড়ে ৮টার আগেই ফিরতাম মেসে। তবে পার্ক স্ট্রিটের ফ্লুরিজ আমার সবসময়ই প্রিয়। বন্ধুদের সঙ্গেএখনও নিয়মিত ওখানে যাই। এখন আর পার্ক স্ট্রিটের অন্য রেস্তরাঁয় যাওয়া হয় না। গেলেও নৈশভোজ করি না।
খারাপ লাগত যখন হেরে যাওয়ায় সমর্থকরা আমাদের কটূক্তি করত। তবে বড় দলের হয়ে খেলতে গেলে এগুলো মেনে নিতেই হবে। জিততে পারলে সম্মানও পেতাম খুব। অনেক সম্মান পেয়েছি কলকাতার মানুষদের থেকে।