খুন করার অভিযোগে জেলে কাটিয়েছেন বছরের পর বছর। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর সেই অভিযোগের বোঝা মাথা থেকে নামাতে পেরেছেন চিনের বাসিন্দা এক তরুণ। নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার পর মুক্তি পেয়েই আসল খুনিকে ধরতে তৎপর হয়েছেন তিনি। খুনির সন্ধান দিতে পারলে ৬০ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেবেন বলে সমাজমাধ্যমে ঘোষণা করেছেন পেশায় ব্যবসায়ী ওই তরুণ। পূর্ব চিনের শানডং প্রদেশের চেন শিজিয়াঙের বয়স ৪৯ বছর। তিনি এমন একটি অপরাধের জন্য বেশ কয়েক বছর কারাগারে কাটিয়েছেন যা তিনি করেননি বলে পরে প্রমাণিত হয়েছে।
আরও পড়ুন:
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুসারে চেনকে ১৯৯৮ সালে তাঁর গ্রামেরই এক মহিলাকে হত্যা করার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২২ বছর। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রামের পঞ্চায়েতের হিসাবরক্ষকের ৫৬ বছর বয়সি স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ ওঠে। চেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, তিনি আসবাবপত্রের কারখানা খোলার পরিকল্পনা করছিলেন। সেই ব্যবসার প্রয়োজনে টাকা চুরি করার জন্য বৃদ্ধাকে হত্যা করেছিলেন। তাঁকে গ্রেফতার করার পর অপরাধ কুবল করানোর জন্য পুলিশ অকথ্য নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ তোলেন চেন। তিনি দু’বার আদালতে আবেদন করেছিলেন। প্রথম দু’টি রায়ে আদালত তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। তৃতীয় এবং শেষ রায়ে চিনের আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় চেনকে।
চেন এই রায় মেনে নিতে পারেননি। তিনি তাঁর মায়ের সাহায্যে ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যান। ২০০৬ সালে আদালতে মামলাটি নতুন করে উত্থাপিত হয় এবং আদালত স্বীকার করে যে মামলাটির বিচারে অসঙ্গতি রয়ে গিয়েছে। বিচারের পর চেনকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয় এবং মুক্তি দেওয়া হয়। তিনি ক্ষতিপূরণ হিসাবে ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ইউয়ান (২৭ হাজার ডলার) পেয়েছিলেন। চেন জানিয়েছিলেন, জেল থেকে বার হওয়ার পর নিজের পরিচয় পুনরুদ্ধার করতে বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে তাঁকে। ২০১৯ সালে চেন নিজের ব্যবসায়িক জগতে ফিরে যান। আপাতত তিনি সেই ঘটনার আসল খুনিকে খুঁজে বার করতে বদ্ধপরিকর, যার জন্য জীবনের মূল্যবান বছরগুলি গরাদের পিছনে নষ্ট হয়েছে তাঁর।