Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

চলন্ত ট্রেনে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যলয়ের ছাত্রীর শ্লীলতাহানি

ভোরের আলোয় ডাউন দুন এক্সপ্রেস আচমকাই থেমে গিয়েছিল ব্যান্ডেল স্টেশনের একটু আগে। একটি বাতানুকূল কামরা থেকে যাত্রীদের চিৎকার এবং দুই যুবককে নেমে পালাতে দেখে চোর বলে সন্দেহ করেছিলেন কর্তব্যরত রেল পুলিশের কর্মীরা। ধাওয়া করে তাঁরা এক জনকে ধরে ফেললেও অন্য জন পালায়। কিন্তু পরে আটক যুবককে নিয়ে ওই কামরায় গেলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী তার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলেন। রবি সোনকার নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়।

আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধৃতকে। ছবি: তাপস ঘোষ।

আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধৃতকে। ছবি: তাপস ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ব্যান্ডেল ও হাওড়া শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০০:০৭
Share: Save:

ভোরের আলোয় ডাউন দুন এক্সপ্রেস আচমকাই থেমে গিয়েছিল ব্যান্ডেল স্টেশনের একটু আগে। একটি বাতানুকূল কামরা থেকে যাত্রীদের চিৎকার এবং দুই যুবককে নেমে পালাতে দেখে চোর বলে সন্দেহ করেছিলেন কর্তব্যরত রেল পুলিশের কর্মীরা। ধাওয়া করে তাঁরা এক জনকে ধরে ফেললেও অন্য জন পালায়। কিন্তু পরে আটক যুবককে নিয়ে ওই কামরায় গেলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী তার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলেন। রবি সোনকার নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়।

বুধবার এই ঘটনার পরে হাওড়া রেল পুলিশ সুপার মেহমুদ আখতার জানান, ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বন্ধুর খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এ দিনই চুঁচুড়া হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার পর ধৃতকে চুঁচুড়া আদালতে হাজির করানো হয়। আদালতের সিজেএম প্রশান্ত মুখোপাধ্যায় তাকে ১৫০০ টাকার বন্ডে জামিন দেন।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ওই ছাত্রী রেল পুলিশকে অভিযোগে জানিয়েছেন, তিনি বেনারসের বাসিন্দা। যাদবপুরে হস্টেলে থেকে পড়াশোনা করেন। মঙ্গলবার বেনারস থেকে ওই ট্রেনের বাতানুকূল কামরায় (বি-১) ওঠেন। তাঁর সিট ছিল ১৫ নম্বর সাইড লোয়ার বার্থে। তাঁর পাশেই ২০ ও ২১ নম্বর বার্থে ছিলেন রবি ও তাঁর সঙ্গী। দু’জনেই উত্তরপ্রদেশের জৌনপুর স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠেন। ট্রেনটি বর্ধমান স্টেশন ছাড়ার পর মদ্যপ অবস্থায় রবি ও তার সঙ্গী সারারাত ধরে তাঁকে বিরক্ত করে। কটূক্তি এবং তাঁর প্রতি অশালীন অঙ্গভঙ্গি করতে থাকে। এ দিন ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ ট্রেনটি যখন ব্যান্ডেল স্টেশনে ঢুকছে, তখন রবি তাঁর শ্লীলতাহানিও করে।

রেল পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় ছাত্রীটির চেঁচামেচিতে অন্য যাত্রীরা এগিয়ে আসেন। ছুটে আসেন টিকিট পরীক্ষক এবং কোচ অ্যাটেন্ডেন্ট। স্টেশনে ঢোকার আগে ট্রেনটির গতি খুব কম থাকায় দুই যুবকই ঝাঁপ দেন। সঙ্গে সঙ্গে চেন টেনে ট্রেন থেকে নেমে পড়েন কোচ অ্যাটেনডেন্ট নিজেই। সকাল ৬টা নাগাদ রবিকে যখন পাকড়াও কর হয় ট্রেনটি তখন ব্যান্ডেল স্টেশনের ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল। ওই কামরায় নিয়ে আসা হলে ছাত্রীটি তাকে সঙ্গে সঙ্গে শনাক্ত করেন। কিন্তু সেই সময় ছাত্রীটি ব্যান্ডেল রেল পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাননি। কলেজে পরীক্ষায় থাকায় তিনি তাড়াতাড়ি হাওড়া পৌঁছতে চাইছিলেন। সেখানে পৌঁছনোর পরে তিনি অভিযোগ দায়ের করে সরাসরি কলেজে চলে যান।

তবে, কলকাতার বড়বাজারের ব্র্যাবোর্ন রোড এলাকার বাসিন্দা রবি তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানেনি। তার দাবি, ‘‘ওই ছাত্রীর সঙ্গে আমি কোনও খারাপ ব্যবহার করিনি। সেটা করেছিল আমার বন্ধু জাভেদ। ও মদ্যপ অবস্থায় ছিল। সে জন্য আমি ভয়ে ব্যান্ডেলে ঢোকার আগেই চেন টেনে পালাতে যাই। পুলিশ ধরে ফেলে।’’ রবি রেল পুলিশকে জানিয়েছে, সে বড়বাজারে একটি দোকানে কাজ করে। মাঝেমধ্যে প্রোমোটারের কাজও দেখাশোনা করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE