Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Adani Group

আদানিতে বিদেশি লগ্নির বিধিভঙ্গ, সরব বিরোধীরা

গত বছরের গোড়ায় আদানিদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট প্রকাশ করে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। তাতে বলা হয়, তাদের বিভিন্ন সংস্থায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শেয়ারের দামে কারচুপি চলেছে।

গৌতম আদানি

গৌতম আদানি —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৫১
Share: Save:

শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থায় ১২টি বিদেশি লগ্নির ক্ষেত্রে নিয়ম ভাঙার প্রমাণ পেয়েছে বলে সম্প্রতি সামনে এসেছে খবর। মঙ্গলবার সেই প্রেক্ষিতেই ফের কেন্দ্রকে বিঁধলেন বিরোধীরা। এক্স-এ একের পর এক বার্তায় দাবি করলেন, এতে প্রমাণ হল আমেরিকার হিন্ডেনবার্গের তোলা আদানিদের সংস্থায় বেআইনি লেনদেন এবং শেয়ার দরে কারচুপির অভিযোগ সত্যি। বিধিভঙ্গের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। কংগ্রেসের বার্তা, নির্বাচনে জিতে আগামী জুনে ক্ষমতায় আসার পরে যৌথ সংসদীয় কমিটিকে দিয়ে আদানি-কাণ্ডের তদন্ত শুরু করবে তারা। তখনই সামনে আসবে লুঠের পুরো ছবিটা। সূত্রের খবর, ওই বিদেশি লগ্নিকারীদের মধ্যে আটটি ফান্ড সংস্থা ইতিমধ্যেই জরিমানা দিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে চেয়েছে। তবে অভিযোগ স্বীকার করেনি তারা।

গত বছরের গোড়ায় আদানিদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট প্রকাশ করে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। তাতে বলা হয়, তাদের বিভিন্ন সংস্থায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শেয়ারের দামে কারচুপি চলেছে। তাই ফুলেফেঁপে উঠেছে কর্ণধার গৌতম আদানির সম্পত্তি। মরিশাস, আরব আমিরশাহীর মতো দেশে আদানি পরিবারের মালিকানাধীন কিছু ভুয়ো সংস্থা মারফত বেআইনি আর্থিক লেনদেন চালানোর কথাও বলা হয়। যার অন্যতম কারিগর গৌতমের দাদা বিনোদ ছিলেন বলে অভিযোগ। পরবর্তীতে আরও কিছু রিপোর্টেও দাবি করা হয়, দেশ থেকে আদানিদের টাকা বিদেশে পাচার হয়ে ফের ঘুরপথে সংস্থায় ঢুকে শেয়ার দর বাড়িয়েছে।

সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রের খবর হিসেবে জানিয়েছে, আদানিদের সংস্থায় ১২টি বিদেশি তহবিলের লগ্নির তথ্য ঠিকমতো প্রকাশ করা হয়নি বলে জানতে পেরেছে সেবি। যা তাদের নথিবদ্ধ সংস্থার তথ্য প্রকাশের বিধি ভেঙেছে। মানা হয়নি বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমার নিয়মও। এর সঙ্গে সরাসরি আদানিদের কোনও শেয়ারহোল্ডারের যোগসাজশ রয়েছে কি না, সেটাই খতিয়ে দেখছিল সেবি। বছরের শুরুতে তাদের সংস্থাগুলিকে নোটিসও পাঠানো হয়। সূত্রের দাবি, বিদেশি ফান্ডগুলি ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে আদানির সংস্থায় লগ্নির তথ্য জানাচ্ছিল। কিন্তু সেবি জানতে চাইছিল গোষ্ঠী হিসেবে লগ্নির তথ্য। এই সব সংস্থার মধ্যে আটটি বেআইনি লেনদেনের অভিযোগ না মানলেও, জরিমানা দিয়ে বিষয়টি মিটমাট করে নিতে চেয়েছে।

কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের তোপ, সেবি জানিয়েছে এক ডজন বিদেশি সংস্থা লগ্নির নিয়ম ভেঙেছে। এর সঙ্গে যুক্তদের মধ্যে রয়েছেন নাসের আলি শাহবান আলি এবং চ্যাং চুং-লিং। যাঁদের বিরুদ্ধে আগেই তদন্ত চালাচ্ছিল নিয়ন্ত্রকটি। চড়া দামে আমদানিকৃত কয়লায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ক্রেতার আর্থিক বোঝা বৃদ্ধি, ইডি-সিবিআই-আয়কর দফতরকে ব্যবহার করে ‘প্রধানমন্ত্রীর বন্ধু শিল্পপতি’ গৌতম আদানির সংস্থাগুলিকে পরিকাঠামো নির্মাণের বরাত পাওয়ানো এবং কূটনৈতিক সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা-সহ বিভিন্ন দেশের প্রকল্পে আদানিদের শামিল করানোর মতো অভিযোগও এই সূত্রে ফের তুলেছেন তিনি।

আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ এবং শিবসেনার প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীর অভিযোগ, হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের মূলে ছিল এই ১২টি বিদেশি ফান্ড সংস্থাই। প্রমাণ হল, আমেরিকার শেয়ার গবেষণা সংস্থাটিই ঠিক। প্রিয়ঙ্কার প্রশ্ন, সেবি কি এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবে, নাকি স্রেফ সতর্ক করে ছেড়ে দেবে? ইডি-কে দিয়ে তদন্ত করানো হবে? শুধু একটি গোষ্ঠীতে লগ্নির জন্যই ফান্ডগুলি তৈরি কি না, সেই তদন্তের সওয়ালও করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Adani Group Gautam Adani Foreign investment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE