—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এখনও ভিন্ রাজ্যের কাজই সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের বহু যুবকের অন্যতম ভরসা। এলাকায় সে ভাবে কাজ নেই। একশো দিনের কাজও বন্ধ দীর্ঘ দিন ধরে। এরই মধ্যে আরও একটা লোকসভা নির্বাচন এসে পড়েছে। তবে দেশ গঠনের এই নির্বাচন নিয়ে যেন তেমন তাপ-উত্তাপ নেই পরিযায়ী শ্রমিকদের। ভোট দিয়ে যে আদৌ কী লাভ হবে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন অনেকেই।
প্রতি বছরই চাষের কাজে বাসন্তী, গোসাবা, ক্যানিং, কুলতলি, জয়নগর, পাথরপ্রতিমা সহ জেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে কয়েক হাজার শ্রমিক রওনা দেন তামিলনাড়ু, কেরালা, আন্দামান সহ অন্যান্য রাজ্যে। এ ছাড়াও, রাজমিস্ত্রির কাজ সহ অন্যান্য কাজের জন্যও দিল্লি, মুম্বইয়ের মতো শহরেও বহু মানুষ যান সারা বছর জুড়ে। ২০০৯ সালে আয়লার পর থেকে সুন্দরবন এলাকা ছেড়ে ভিন্ রাজ্যে কাজে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। মূলত, এলাকায় বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না থাকায় ভিন্ রাজ্যের কাজই ভরসা প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের। গত জুন মাসে ওড়িশার বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় বহু পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল। জখম হন বহু। বাইরে গিয়েও নানা বিপদের মুখে পড়েছেন এ রাজ্যের শ্রমিকেরা। মৃত্যুও হয়েছে। তবে তাতেও ভিন্ রাজ্যে যাওয়ার প্রবণতা কমেনি।
গোসাবার পাঠানখালির বাসিন্দা নুরউদ্দিন, সামসুল, লিয়াকতরা তামিলনাড়ুতে চাষের কাজ করেন। সম্প্রতি ইদে বাড়ি ফিরেছিলেন।
আবার রওনা দেবেন ক’দিন পরে। ভোট না দিয়েই চলে যাবেন?
নুরউদ্দিন বলেন, “না গেলে খাব কী? এখানে তো আর কাজ নেই, যা দিয়ে সংসার চলবে। ভোট দিয়ে পেট ভরবে না। ভোট হয়ে গেলে নেতারাও খোঁজ নেবেন না।”
সাতজেলিয়ায়ার বাসিন্দা সুদর্শন নায়েক বর্তমানে আন্দামানে রয়েছেন। ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন “এলাকায় কোনও কাজ নেই। তাই ভিন্ রাজ্যে কাজে আসতে বাধ্য হয়েছি। তবে ভোট দিতে যাব।” ঝড়খালির বাসিন্দা নিতাই জানা বলেন, “গ্রামে তো কোনও কাজ নেই, আছে শুধু রাজনীতি। বিরোধী দল করলে জবকার্ডও মেলে না। তা ছাড়া, জবকার্ড থেকেই বা কি লাভ? এখন তো সে ভাবে কোনও কাজই এলাকায় নেই। তাই ভিন্ রাজ্যের কাজই ভরসা। ক’দিন হল এলাকায় ফিরেছি। আবার চলে যাব।” বাসন্তীর নফরগঞ্জের পরিযায়ী শ্রমিক নিতাই রপ্তান, ক্যানিংয়ের গোলাবাড়ির বাসিন্দা রাম সর্দার সম্প্রতি ফিরেছেন মহারাষ্ট্র থেকে। তাঁরা বলেন, “ভিন্ রাজ্যে কাজ আছে বলেই আমরা বেঁচে আছি। এখানে কোনও কাজ নেই। দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে পরিযায়ী শ্রমিকের তালিকায় নাম নথিভুক্ত হলেও এখনও পর্যন্ত কিছুই সরকারি সাহায্য মেলেনি। ভোট নিয়ে অত ভাবছি না। ভোট দিতে হয় তাই দেব। তাতে আমাদের অবস্থার কোনও পরিবর্তন হবে না, সেটা এত দিনে বুঝে গিয়েছি।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে একশো দিনের কাজ রাজ্যজুড়েই বন্ধ। কিন্তু রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের মাধ্যমে যে সরকারি কাজ চলছে, সেখানে জব কার্ড হোল্ডারদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। নির্বাচন বিধি জারি হওয়ায় নতুন করে কাজ ঘোষণা হয়নি। আগের ঘোষিত কাজে জবকার্ডধারীরা কাজ করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy