জ়িম্বাবোয়েতে পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হল মৃত্যুদণ্ড। — প্রতীকী চিত্র।
জ়িম্বাবোয়েতে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হল মৃত্যুদণ্ড। প্রায় দু’দশক আগে আফ্রিকার দক্ষিণাংশের এই দেশে শেষ বার কোনও আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ বার সে দেশের পার্লামেন্ট বিল পাশ করে নতুন আইন নিয়ে আসা হয়েছে। জ়িম্বাবোয়েতে ৬০ জন আসামির মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকর হওয়া বাকি ছিল। তাঁদের প্রত্যেকের প্রাণদণ্ড রদ করা হয়েছে এবং কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে।
জ়িম্বাবোয়েতে শেষ মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় ২০০৫ সালে। তার পর থেকে আর কোনও আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি সে দেশে। সম্প্রতি কেনিয়া, লাইবেরিয়া এবং ঘানার মতো কিছু দেশেও আইন করে পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়েছে মৃত্যুদণ্ড। ২০১৭ সালেই জ়িম্বাবোয়েতে মৃত্যুদণ্ড বন্ধ করার প্রস্তাব দেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট এমারসন মানগাগওয়া। তাঁর সেই প্রস্তাবের সাত বছর পর অবশেষে পাকাপাকি ভাবে মৃত্যুদণ্ড বন্ধ হল।
জ়িম্বাবোয়ের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে একটি ট্রেন উড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে ১৯৬০-এর দশকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল এমারসনকে। পরে অবশ্য তা বদলে ১০ বছরের কারাদণ্ড করা হয়। এ বার সেই এমারসনের হাত ধরেই জ়িম্বাবোয়েতে মৃত্যুদণ্ডের প্রথা বন্ধ হল।
বর্তমানে রাষ্ট্রপুঞ্জ স্বীকৃত ১৯৩টি দেশ রয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১১৩টি দেশে মৃত্যুদণ্ড পাকাপাকি ভাবে বন্ধ করা হয়েছে, যার মধ্যে আফ্রিকা মহাদেশের ২৪টি দেশ রয়েছে। এ ছাড়া পর্তুগাল, ডেনমার্ক, নরওয়ে, কাজ়াখস্তানের মতো দেশগুলিও রয়েছে তালিকায়।
বেশিরভাগ দেশেই মৃত্যুদণ্ড ধীরে ধীরে উঠে যেতে শুরু করেছে। ভারত, পাকিস্তান, আমেরিকা, চিন, ভিয়েতনাম, উত্তর কোরিয়া, ইরান, সৌদি আরব, আফগানিস্তানের মতো দেশগুলিতে এখনও মৃত্যুদণ্ড চালু রয়েছে।
অ্যামনেস্টির দাবি, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া দেশগুলির মধ্যে অন্যতম উত্তর কোরিয়া, ভিয়েতনাম এবং চিন। তবে এই তিন দেশের মৃত্যুদণ্ডের তথ্য নেই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের কাছে। এই তিনটি দেশের হিসাব বাদে ২০২৩ সালে বিশ্বে ১১৫৩ জনের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে বলে তথ্য রয়েছে অ্যামনেস্টির কাছে। এই ১১৫৩টি মৃত্যুদণ্ডের মধ্যে ৯০ শতাংশই হয়েছে ইরান এবং সৌদি আরবে। এর পরেই রয়েছে সোমালিয়া এবং আমেরিকা।