(বাঁ দিক থেকে) শাহবাজ় শরিফ, ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি।
দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণের প্রযুক্তির গোপন লেনদেনের কারণেই পাকিস্তানের চারটি সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পেন্টাগন। পাক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কমপ্লেক্স’ (এনডিসি)-সহ চারটি সংস্থা রয়েছে এই তালিকায়। বুধবার আমেরিকার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে এই দাবি করা হয়েছে।
প্রকাশিত খবরে দাবি, ঘটনার সূত্রপাত আড়াই দশক আগে। পাক-আফগানিস্তান সীমান্তে সক্রিয় সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে দু’টি আধুনিক টোমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল আমেরিকা সেনা। তার একটিতে বিস্ফোরণ ঘটেনি। সেটি গোপনে পাক ফৌজ পাচার করে চিনে। বেজি়ং ‘রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং’ প্রযুক্তির সাহায্যে টোমাহকের আদলে বানায় ডিএইচ-১০ ক্ষেপণাস্ত্র। যা পরে পাকিস্তানকে দেওয়া হয়ে ‘বাবর’ নামে।
গত ১৯ ডিসেম্বর পাক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির উপর আমেরিকার বিধিনিষেধ আরোপের নেপথ্যে সম্প্রতি প্রকাশিত ওই ঘটনাই অনুঘটকের ভূমিকা নিয়েছে বলে মনে করা হয়েছে। জো বাইডেনের বিদায়ী সরকার জানিয়েছে, পাকিস্তান ১২ হাজার কিলোমিটার পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে। যা আমেরিকার নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক। কিন্তু ওই পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বানাতে পারলে ভারতের প্রতিটি শহর ইসলামাবাদের নিশানায় চলে এলেও আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানা সম্ভব হবে না। ফলে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে ওয়াশিংটনের উদ্বেগকে ‘অমূলক’ মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনেকেই।
আমেরিকার উপ-জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (ডেপুটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইসর) জন ফিনার। সম্প্রতি ‘কর্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস’ শীর্ষক আলোচনাচক্রে বক্তৃতা দেন তিনি। সেখানেই পাক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে প্রথম উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন আমেরিকার নিরাপত্তা নিয়ে। তার পরেই প্রশাসনিক ভাবে পদক্ষেপ করে বাইডেন সরকার। ইসলামাবাদস্থিত এনডিসি এবং করাচির তিনটি সংস্থা— আখতার অ্যান্ড সন্স প্রাইভেট লিমিটেড, অ্যাফিলিয়েটস ইন্টারন্যাশনাল এবং রকসাইড ইন্টারপ্রাইজ় আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে।
ওই সংস্থাগুলি পাক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। চিনা প্রতিরক্ষা উৎপাদন সংস্থার সঙ্গেও তাদের ‘যোগাযোগ’ রয়েছে বলেও প্রকাশিত খবরে দাবি। এই প্রথম কোনও পাক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল ওয়াশিংটন। চিনের প্রযুক্তিগত সহায়তা পেলেও ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার জেরে ইসলামাবাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বড় ধরনের ধাক্কা খেল বলে মনে করা হচ্ছে। যা নিশ্চিত ভাবেই কিছুটা স্বস্তি দেবে নয়াদিল্লিকে।