Yevgeny Prigozhin

‘আল কায়দা, আইএসের বিরুদ্ধে এ বার লড়াই’, আফ্রিকা থেকে জীবিত ওয়াগনার প্রধানের বার্তা

তবে আফ্রিকার মরুভূমির ঠিক কোথায় তিনি রয়েছেন, সে বিষয়ে কিছু জানাননি একদা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ ওয়াগনার প্রধান অলিগার্চ ইয়েভজেনি প্রিগোঝিন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
মস্কো শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৩ ১৮:৩৯
Wagner chief Yevgeny Prigozhin posts first video since mutiny against Russia, hints he is in Africa

ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান অলিগার্চ ইয়েভজেনি প্রিগোঝিন। ছবি: রয়টার্স।

পুরোদস্তুর সামরিক সাজে মরুভূমিতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিনি। হাতে অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল। তাঁকে ঘিরে সশস্ত্র নিরাপত্তা রক্ষীরা। ‘নিখোঁজ’ হওয়ায় মাস দেড়েক পরে এ ভাবেই সমাজমাধ্যমে নিজের উপস্থিতি জানান দিলেন ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান অলিগার্চ ইয়েভজেনি প্রিগোঝিন। মঙ্গলবার রুশ ভাড়াটে যোদ্ধাদলের নেতা ভিডিয়ো বার্তায় জানিয়েছেন, এখন আফ্রিকার মরুভূমিই তাঁর ঠিকানা। ওয়াগনার বাহিনীতে নতুন করে যোদ্ধা নিয়োগের কথা ঘোষণা করে ‘ইচ্ছুকদের’ যোগাযোগের জন্য একটি ফোন নম্বরও দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

ভিডিয়ো দেখে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, প্রিগোঝিন এখন সাহারা মরুভূমি লাগোয়া কোনও দেশে রয়েছেন। তবে ঠিক কোথায় তিনি রয়েছেন, সে বিষয়ে কিছু জানাননি একদা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ ওয়াগনার প্রধান। ভিডিয়ো বার্তায় প্রিগোঝিন বলেন, ‘‘এখানে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রির বেশি। তবে আমরা খুশিতেই রয়েছি। ওয়াগনার এখন সব মহাদেশে রাশিয়ার গৌরব বাড়াতে অবদান রেখেছে। এ বার আফ্রিকার মানুষকে মুক্তি এবং আনন্দের স্বাদ দিতে এবং তাঁদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করব। আমরা ইসলামিক স্টেট (আইএস), আল কায়দা-সহ সব জঙ্গিদের দুঃস্বপ্নে পর

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে প্রিগোঝিন খুন করা হয়েছে বলে জুলাই মাসের গোড়ায় অভিযোগ উঠেছিল। মস্কোর বিরুদ্ধে ব্যর্থ বিদ্রোহের পর প্রিগোঝিন বেলারুশে আশ্রয় নিয়েছেন বলেও জল্পনা ছিল। প্রসঙ্গত, গত বছর কিভ, ডনবাস-সহ ইউক্রেনের একাধিক অঞ্চল দখলের গুরুদায়িত্ব তাঁরই বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। কিন্তু রুশ ধনকুবের প্রিগোঝিনের ভাড়াটে যোদ্ধাগোষ্ঠী ওয়াগনারের ‘বন্দুকের নল’ গত জুন মাসে ঘুরে যায় পুতিনেরই দিকে। রুশ প্রেসিডেন্ট সেই ‘বিদ্রোহ’ সফল ভাবে মোকাবিলার পর থেকেই প্রশ্ন উঠেছিল প্রিগোঝিনের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে। এর পর হঠাৎ তাঁর নিখোঁজ থাকার ঘটনায় নতুন করে জল্পনা ছড়ায়। তাঁকে খুন বা জেলবন্দি করা হয়েছে বলে ইঙ্গিত দেয় কয়েকটি পশ্চিমি সংবাদমাধ্যম।

জুন মাসে ওয়াগনার যোদ্ধারা ইউক্রেন সীমান্তবর্তী একাধিক এলাকার দখল নিয়েছিল। এর পর তারা রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর উদ্দেশে অভিযান শুরু করে। কিন্তু সে সময় পুতিন দ্রুত নিজের অনুগত রুশ সেনাকে সামনে রেখে ‘বিদ্রোহীদের’ নিরস্ত করেছিলেন। প্রিগোঝিন সে সময় রাশিয়া থেকে বেলারুশে চলে গিয়েছিলেন বলে বিভিন্ন পশ্চিমী সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল। পুতিন ঘনিষ্ঠ বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজ়ান্ডার লুকাশেঙ্কো দাবি করেছিলেন, তিনিই মস্কোর সঙ্গে ওয়াগনার বাহিনীর সমঝোতা করিয়েছেন। আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলি তরফে সে সময় শোনা গিয়েছিল, সমঝোতার শর্ত অনুযায়ী প্রিগোঝিনকে বেলারুশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ লুকাশেঙ্কো দাবি করেন, তাঁর দেশে প্রিগোঝিন নেই। ক্রেমলিনের তরফেও জানানো হয়, ওয়াগনার প্রধান কোথায় তারা জানে না।

সেই পরিস্থিতিতে প্রিগোঝিন বেঁচে আছেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছিল। ওয়াগনার বাহিনী ‘রণে ভঙ্গ’ দেওয়ার পরে ‘অজ্ঞাতবাসে’ যাওয়া প্রিগোঝিন অডিয়ো বার্তায় দাবি করেছিলেন, বিদ্রোহ নয়, প্রেসিডেন্ট পুতিনের সরকার এবং তাঁর সেনার আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে পথে নেমেছিলেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, একদা পুতিন-ঘনিষ্ঠ হোটেল ব্যবসায়ী প্রিগোঝিনের ওই ভাড়াটে বাহিনী রুশ সেনার অংশ নয়। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে ধারাবাহিক ভাবে তারা রুশ বাহিনীর সহযোগী হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। অতীতে লিবিয়া, সিরিয়া, মোজাম্বিক, সুদানের মতো দেশে গৃহযুদ্ধেও লড়েছে প্রায় ৪০ হাজার যোদ্ধার এই পেশাদার ভাড়াটে বাহিনী। ইউক্রেন যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণ নিয়ে চলতি বছরের গোড়া থেকে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভের সঙ্গে মতবিরোধ চলছিল প্রিগোঝিনের। রুশ সেনা পরিকল্পিত ভাবে‌ ওয়াগনার যোদ্ধাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি।

Advertisement
আরও পড়ুন