সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা তালিবান নেতৃত্বের। ছবি: সংগৃহীত।
সব জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে আফগানিস্তানে একটি তদারকি সরকার গড়তে চায় তালিবান। শুক্রবার কাতারের রাজধানী দোহায় তালিবান রাজনৈতিক দফতরের তরফে এ কথা জানানো হয়েছে।
গত ১৫ অগস্ট রাজধানী কাবুল দখলের পরেই দেশের নাম বদলে ‘আফগানিস্তান ইসলামি আমিরশাহি’ করেছেন তালিবান নেতৃত্ব। শুক্রবার সংগঠনের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, নয়া তদারকি সরকারের নেতৃত্বে দেবেন ‘আমির-উল-মোমিনিন’। প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় খলিফা উমর এই উপাধি গ্রহণ করেছিলেন। পরবর্তীকালে খিলাফত অনুসারী মুসলিম শাসকদের অনেকে ওই উপাধি ব্যবহার করেছেন।
তালিবানের এক নেতা বলেছেন, তদারকি সরকারে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, বিচার, অর্থ, তথ্য-সম্প্রচারের পাশাপাশি কাবুল বিষয়ক বিশেষ দফতরও থাকবে।
আফগানিস্তানে পরবর্তী সরকারের আমির পদে কে বসবেন, সে বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেননি তালিবান নেতৃত্ব। তবে সংগঠনের রাজনৈতিক শাখার প্রধান মোল্লা আব্দুল গনি বরাদর ওই পদে বসতে পারেন বলে ইঙ্গিত মিলেছে। সে ক্ষেত্রে সরাসরি সরকারি পদে না বসে ইরানের আয়াতুল্লা খামেইনির মতো ‘সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু’র মতো সংবিধান বহির্ভূত ক্ষমতা উৎস হতে পারেন বর্তমান তালিবান প্রধান হায়বাতুল্লা আখুন্দজাদা।
তালিবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে ইয়াকুব এবং হক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা সিরাজুদ্দিন হক্কানিরও নয়া সরকারের ঠাঁই পাওয়া পাকা। কিন্তু ঘটনাচক্রে এরা সকলেই আফগানিস্তানে সংখ্যাগুরু পাশতুন জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি। তালিবান বাহিনীর প্রায় সকলেই এই জনগোষ্ঠীর। এই পরিস্থিতিতে তদারকি সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে তাজিক, উজবেক, হাজারার মতো জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে তালিবান।
প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা তাজিক নেতা আবদুল্লা আবদুল্লা ইতিমধ্যেই কাবুলে বসে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই ও তালিবান নেতাদের সঙ্গে পরবর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় শামিল হয়েছেন। নতুন সরকারে তাঁর স্থান হতে পারে বলে খবর। অন্যদিকে, শিয়া ধর্মাবলম্বী হাজারা গোষ্ঠীর নেতা আব্দুল করিম খলিলি কাবুলের পতনের পর পাকিস্তানে ডেরা বেঁধেছেন। তাঁকেও নেওয়া হতে পারে সরকারে। উজবেক গোষ্ঠীর নেতা রশিদ দোস্তমকেও তদরকি সরকারে পেতে আগ্রাহী তালিবান। যদিও প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট দোস্তম এখনও তালিবান বিরোধী জোটেই রয়েছেন।