(বাঁ দিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ব্রুনেইয়ের সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়া (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
ঐতিহাসিক সফরে ব্রুনেই পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ব্রুনেইয়ের সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়া এবং রাজ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। মোদীকে অভ্যর্থনা জানাবেন সুলতান স্বয়ং। পৃথিবীর দীর্ঘতম একনায়ক শাসক হিসাবে পরিচিত তিনি। রাজকোষে রয়েছে অঢেল সম্পদ। বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য ‘বিখ্যাত’ কে এই হাজি হাসানাল বলকিয়া?
ইতিহাস বলছে, রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের পর বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে রাজত্ব করছেন হাসানালই। বিপুল পরিমাণ ধন সম্পদের মালিক তিনি। তাঁর জীবনধারাও দেখার মতো। গ্যারাজে রয়েছে ৭০০০ এরও বেশি বিলাসবহুল গাড়ি। যার মূল্য আনুমানিক ৪১ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে রয়েছে প্রায় ৬০০টি রোল্স রয়েস গাড়ি। রয়েছে ৪৫০টি ফেরারি এবং ৩৮০টি বেন্টলে গাড়িও। এ ছাড়াও তাঁর সংগ্রহে রয়েছে পোর্শে, ল্যাম্বরগিনি, জাগুয়ার, বিএমডব্লিউ এবং ম্যাকলারেন্স।
হাসানালের সংগ্রহে থাকা গাড়িগুলির মধ্যে সবচেয়ে চোখ ধাঁধানো হল তাঁর রোল্স রয়েস সিলভার স্পারটি। এটি আগাগোড়া ২৪ ক্যারাট সোনার পাতে মোড়া। গাড়ির ছাদটি খোলা, সেখানে রয়েছে সোনার একটি ছাতা। এ ছাড়াও ২০০৭ সালে মেয়ে মালদিহার বিয়ের উপহার স্বরূপ আরও একটি সোনার রোলস্ রয়েস কিনেছিলেন সুলতান।
ঐশ্বর্যের এখানেই শেষ নয়। সুলতানের প্রাসাদেও রয়েছে চমক। হাসানাল ও তাঁর পরিবার থাকেন ইস্তানা নুরুল ইমান প্রাসাদে। বর্তমানে এটিই বিশ্বের বৃহত্তম প্রাসাদ। ২০ লক্ষ বর্গফুট এলাকা নিয়ে তৈরি এই প্রাসাদও ২২ ক্যারাট সোনায় মোড়া। রয়েছে পাঁচটি সুইমিং পুল, ১৭০০টি শয়নকক্ষ, ২৫৭টি স্নানাগার এবং ১১০টি গাড়ি রাখার জায়গা। এ ছাড়াও সুলতানের একটি ব্যক্তিগত চিড়িয়াখানাও রয়েছে। সেখানে রয়েছে ৩০টি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। নিজস্ব বোয়িং ৭৪৭ বিমানও রয়েছে সুলতানের।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই ব্রুনেই পৌঁছেছেন মোদী। তিন দিনের এই সফরে ব্রুনেইয়ের পর সিঙ্গাপুরে যাবেন তিনি। দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘ ৪০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও এই প্রথম কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ব্রুনেইয়ে পা রাখলেন। দ্বীপরাষ্ট্র ব্রুনেই তেল সমৃদ্ধ দেশ। ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আসিয়ান-ভারত সম্পর্কের সমন্বয়ক রাষ্ট্র হিসাবে কাজ করেছে ব্রুনেই। সেখানে প্রায় ১৪ হাজার ভারতীয়ের বাস। এ ছাড়া ভারতের ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি এবং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় ভিশনেরও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ব্রুনেই। প্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশ মন্ত্রকের বিশ্বাস, মোদীর এই সফর ব্রুনেই, সিঙ্গাপুর-সহ বৃহত্তর আসিয়ান অঞ্চলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও পোক্ত করবে।