US Tariff War

ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ থেকে কি বাদ যাবে না বৈদ্যুতিন পণ্য? শীঘ্রই আসছে বিশেষ মার্কিন শুল্ক!

দিন দুয়েক আগেই আমেরিকার শুল্ক এবং সীমান্ত সুরক্ষা দফতরের নতুন গাইডলাইনে বলা হয়েছিল, স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং কিছু বৈদ্যুতিন পণ্যের উপর নয়া শুল্কনীতি কার্যকর হবে না। তবে আমেরিকার বাণিজ্যসচিবের কথা অনেকের কাছেই স্পষ্ট নয়।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ২২:০৬
Smartphones, computers and some other electronics will come under separate tariffs said Donald Trump\\\\\\\\\\\\\\\'s aide

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল কম্পিউটার, মোবাইল এবং অন্য কিছু বৈদ্যুতিন পণ্যকে। অনেকেই ভেবেছিলেন, বাড়তি শুল্ক চাপানোর নীতি থেকে সরে আসতে চলেছে ট্রাম্প প্রশাসন। শুধু তা-ই নয়, এই ঘোষণায় হাঁপ ছেড়েছিল বিভিন্ন মোবাইল, কম্পিউটার প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোও! তবে এই স্বস্তি বেশি দিনের জন্য নয়, এমনই জানালেন আমেরিকার বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিক। রবিবার ‘এবিসি নিউজ়’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, কম্পিউটার, মোবাইল এবং অন্য কিছু বৈদ্যুতিন পণ্যের উপর আলাদা শুল্ক আরোপ করা হবে! কবে এই শুল্ক চাপানো হতে পারে, তার একটা সময়সীমাও জানিয়ে দেন আমেরিকার বাণিজ্যসচিব।

Advertisement

আমেরিকার শুল্ক এবং সীমান্ত সুরক্ষা দফতরের নতুন গাইডলাইনে বলা হয়েছিল, স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং কিছু বৈদ্যুতিন পণ্যের উপর নয়া শুল্কনীতি কার্যকর হবে না। কিন্তু সেই আবহেই রবিবার লুটনিক জানান, কিছু দিনের মধ্যেই ওই সব পণ্যের উপর আলাদা শুল্ক ধার্য করা হবে। তাঁর কথায়, ‘‘বিভিন্ন বৈদ্যুতিন পণ্যকে শুল্ক থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেবল একটি সাময়িক স্থগিতাদেশ।’’ তিনি আরও জানান, সম্ভবত ‘এক বা দুই মাসের’ মধ্যেই ওই সব পণ্যের উপর ‘সেমিকন্ডাক্টর শুল্ক’ আরোপ করা হবে।

কয়েক দিন আগেই আমেরিকার বাজারে চিনা পণ্যের উপর ট্রাম্প ১৪৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প। ঘটনাচক্রে, মার্কিন বহুজাতিক প্রযুক্তি সংস্থা ‘অ্যাপল’-এর আইফোন এবং অন্য পণ্যগুলির বেশির ভাগই উৎপাদিত হয় চিনে। শুধু ‘অ্যাপল’ নয়, অন্য অনেক সংস্থাও মোবাইল বা কম্পিউটার তৈরির জন্য বিভিন্ন অংশ চিন থেকে আমদানি করে। তবে লুটনিক মনে করেন, ‘‘আমরা সব সময় চিনের উপর নির্ভর করতে পারি না।’’ তিনি আরও জানান, শুল্কনীতি নিয়ে চিনের সঙ্গে ‘নরম মনোভাব’ রয়েছে আমেরিকার। লুটনিক জোর দিয়ে জানান, সেমিকন্ডাক্টর এবং ওষুধ শিল্পকে আমেরিকায় ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী ট্রাম্প প্রশাসন।

ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফেরার পরই নতুন শুল্কনীতির কথা জানান। তাঁর কথায়, যে দেশ মার্কিন পণ্যের উপর যত পরিমাণ শুল্ক আরোপ করে, আমেরিকাও সেই সব দেশের পণ্যের উপর তত পরিমাণ পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে। কোন দেশের উপর কত পরিমাণ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে, তারও তালিকা দেন ট্রাম্প। তাঁর ঘোষণার পরই বিশ্ব জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। তবে দিন কয়েক আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, ৯০ দিনের জন্য নয়া শুল্কনীতি স্থগিত রাখছেন। তবে সেই তালিকা থেকে বাদ শুধু চিন।

ট্রাম্প জমানায় চিনের সঙ্গে আমেরিকার কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানির দিকে। দু’দেশের শুল্ক সংঘাতের আবহে তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের শুরুর দিকেই চিনা পণ্যের উপর ২০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিল আমেরিকা। চিনা পণ্যের উপরেও ৩৪ শতাংশ শুল্ক চাপান ট্রাম্প। চিন পাল্টা শুল্ক চাপালে ট্রাম্প আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন এবং মোট শুল্কের পরিমাণ হয় ৮৪ শতাংশ। তার সঙ্গে পূর্বের ২০ শতাংশ শুল্ক যুক্ত করলে মোট শুল্ক দাঁড়ায় ১০৪ শতাংশে। থেমে থাকেননি ট্রাম্পও। তিনি দফায় দফায় চিনা পণ্যের উপর শুল্ক বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন। ১২৫ শতাংশ করা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার সেই শুল্কের পরিমাণ বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করা হয়। শুক্রবার শুল্ক বৃদ্ধি করে পাল্টা জবাব দেয় বেজিংও। শুক্রবার তারা ঘোষণা করে, ৮৪ নয়, এ বার থেকে মার্কিন পণ্যের উপর ১২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ধার্য করা হচ্ছে। একই সঙ্গে শেষ পর্যন্ত লড়াই করার কথাও শোনা যাচ্ছে চিন প্রশাসনের গলায়।

Advertisement
আরও পড়ুন