Gurugram Hospital Incident

বাংলার বিমানসেবিকাকে ‘ডিজিটাল ধর্ষণ’-এর আগে ও পরে পর্নোগ্রাফি দেখেছিলেন অভিযুক্ত! জানাল পুলিশ

পুলিশ সূত্রে খবর, হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেই অভিযুক্তকে পাকড়াও করা হয়। তিনি ওই হাসপাতালেরই প্রযুক্তিকর্মী। তাঁর বাড়ি বিহারের মুজফ্‌ফরপুরে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:১৯

— প্রতীকী চিত্র।

গুরুগ্রামের এক নামী হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে ‘ডিজিটাল ধর্ষণ’-এর শিকার হন এক বিমানসেবিকা। ওই বিমানসেবিকা বাংলারই মেয়ে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই পুলিশ হাসপাতালের এক কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, কুকীর্তির আগে এবং পরে অভিযুক্ত মোবাইলে পর্নোগ্রাফি দেখেন!

Advertisement

সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, অভিযুক্তকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পুলিশ তাঁর মোবাইল খতিয়ে দেখেছে। সেই সঙ্গে কথা বলছেন হাসপাতালের অন্য কর্মীদের সঙ্গেও। পুলিশ সূত্রে খবর, অপরাধের আগে এবং পরে অভিযুক্ত কী কী করেছেন, কাদের কাদের সঙ্গে কথা বলেছে, তাঁর গতিবিধি জানতেই মোবাইলে খতিয়ে দেখা হয়। জানা যায়, মোবাইলের ‘সার্চ হিস্ট্রি’তে বেশ কিছু পর্নোগ্রাফির ভিডিয়োর লিঙ্ক মিলেছে, যা থেকে অভিযুক্তের মানসিক অবস্থারও আভাস মিলেছে।

গুরুগ্রামের একটি হোটেলের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে কাটতে অসুস্থ হয়ে পড়েন ৪৬ বছরের বিমানসেবিকা। ট্রেনিংয়ের জন্য তিনি গুরুগ্রামে ছিলেন। গত ৫ এপ্রিল মহিলাকে ভর্তি করানো হয় সেখানকার নামী একটি হাসপাতালে। ১৩ এপ্রিল তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে স্বামীর মাধ্যমে থানায় যোগাযোগ করেন মহিলা। ১৪ এপ্রিল তিনি ‘ডিজিটাল ধর্ষণের’ অভিযোগ করেন। ‘নির্যাতিতা’ জানান, ওই হাসপাতালের কয়েক জন কর্মী আইসিইউ কেবিনে তাঁকে যৌন নির্যাতন করেছেন। সেই অভিযোগ পাওয়ার পরই পুলিশ ঘটনার তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করে। শুক্রবার তারা অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ সূত্রে খবর, হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেই অভিযুক্তকে পাকড়াও করা হয়। তিনি ওই হাসপাতালেরই প্রযুক্তিকর্মী। তাঁর বাড়ি বিহারের মুজফ্‌ফরপুরে। চাকরির সুবাদে বেশ কিছু দিন ধরে তিনি গুরুগ্রামে ছিলেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, জেরায় নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত।

পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সিট গঠন করা হয়েছিল। তারা ওই হাসপাতালের চিকিৎসক-সহ কর্মীদের টানা জিজ্ঞাসাবাদ করে। একই সঙ্গে হাসপাতালের সব সিসি ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখা হয়। সেই ফুটেজ দেখেই অভিযুক্তকে শনাক্ত করা হয়।

বিমানসেবিকা তাঁর অভিযোগে বলেন, তিনি আইসিইউ কেবিনে যখন কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না, সেই সময়ে তাঁকে যৌন নির্যাতন করা হয়। সেই সময় দু’জন নার্স উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তাঁরা অভিযুক্তদের বাধা তো দেননি, বরং সাহায্য করেছিলেন! পুলিশের কাছে ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে ‘নির্যাতিতা’ জানান, ৬ এপ্রিল রাত ৯টা নাগাদ দু’জন নার্স তাঁর পোশাক পরিবর্তন করতে যান। তখন তিনি অর্ধচেতন অবস্থায় ছিলেন। ওই সময়ে পুরুষকণ্ঠ শুনতে পান। মহিলার কথায়, ‘‘আমার শরীরের মাপ জানতে চাইছিলেন এক জন লোক। নার্সেরা তাঁকে সেই তথ্য দিচ্ছিলেন। তার পর আমি শুনতে পেলাম, লোকটি নার্সকে আমার কোমরের আকার জানতে চাইছে। তার পর সে বলে, নিজেই পরীক্ষা করবে। এর পর আমার ডান দিকে চাদরের তলা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দেয়।’’

প্রসঙ্গত, ভিআর প্ল্যাটফর্ম, সমাজমাধ্যমের মতো ভার্চুয়াল কোনও জায়গায় যৌন হেনস্থা ‘ডিজিটাল ধর্ষণ’-এর আওতায় পড়ে। ভারতীয় আইনে এই ধরনের যৌন নির্যাতনকে ‘ডিজিটাল ধর্ষণ’ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। ডিজিটাল শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘ডিজিটাস’ থেকে, যার অর্থ আঙুল। কোনও মহিলার যোনিতে হাত বা পায়ের আঙুল প্রবেশ করানো ‘ডিজিটাল ধর্ষণ’-এর আওতায় পড়ে। অতীতে আইনের বইয়ে ডিজিটাল ধর্ষণের উল্লেখ না থাকলেও ২০১২ সালের দিল্লিতে প্যারা মেডিক্যাল ছাত্রীর ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর থেকে এই শব্দবন্ধ আইনে চালু হয়। যদিও ২০১২ সালের পকসো আইনেও সরাসরি তা উল্লেখ করা হয়নি।

Advertisement
আরও পড়ুন