গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি সর্বশক্তি দিয়ে ইউক্রেনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল রাশিয়া। শুক্রবার সেই ঘটনারই বর্ষপূর্তি। ছবি: রয়টার্স।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের দাবিতে প্রস্তাব পাশ হল রাষ্ট্রপুঞ্জে। তবে ভোটদান প্রক্রিয়া থেকে নিজেদের বিরতই রাখল ভারত এবং চিন। ইউক্রেনের উপর মস্কোর আগ্রাসনের বর্ষপূর্তিতে রাশিয়াকে হামলা বন্ধ করতে এবং তার প্রতিবেশী থেকে সেনা প্রত্যাহার করার জন্য প্রস্তাব পাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভা। রাষ্ট্রপুঞ্জের ১৪১ সদস্য এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় এবং ৭ সদস্য এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। তবে ভারত এবং চিন-সহ ৩২টি সদস্য এই ভোটদান প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেনি।
রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রুচিরা কম্বোজ বলেন, ‘‘ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন। দু’দেশের সংঘাতের কারণে অগুণতি জীবন হারিয়েছে। মানুষের জীবনে দুর্ভোগ বেড়েছে এবং লক্ষাধিক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। সাধারণ মানুষের উপর হামলা গভীরভাবে উদ্বেগজনক।''
তিনি আরও বলেন, ‘‘ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদের নীতিগুলিকে সমর্থন করে। আমাদের দেশেও আমরা আলোচনা এবং কূটনৈতিক পদ্ধতিতে কোনও সমস্যার সমাধানে বিশ্বাসী। যদিও আমাদের মনে হয় এই প্রস্তাবে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি সুরক্ষিত করার যে পন্থার কথা বলা হয়েছে, তাতে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আর সেই কারণেই আমরা ভোটদান থেকে নিজেদের বিরত রাখছি।’’
অন্য দিকে, চিনও এই ভোটদান থেকে নিজেদের বিরত রেখে রাশিয়া এবং ইউক্রেনকে আবার নতুন করে আলোচনা শুরু করে শান্তিপূর্ণ ভাবে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। চিনের দাবি, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সংঘাতে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার এক বারেই উচিত নয়।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জ়েলেনস্কি বৃহস্পতিবার রুশ সেনার আক্রমণের বিরুদ্ধে দেশ যে ঠিক জয় হাসিল করবে, সেই বিষয়ে আস্থা প্রকাশ করেছেন। অন্য দিকে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বর্ষপূর্তির ঠিক আগে, বৃহস্পতিবার পরমাণু অস্ত্রসম্ভার বাড়ানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে তিনি জানান, পারমাণু অস্ত্রসম্ভার বাড়ানোর জন্য আরও ব্যয়বরাদ্দ করতে চলেছে তাঁর প্রশাসন।
গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি সর্বশক্তি দিয়ে ইউক্রেনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল রাশিয়া। শুক্রবার সেই ঘটনারই বর্ষপূর্তি। গত বছরের ফেব্রুয়ারির পর থেকে রাশিয়ার মুহুর্মুহু আক্রমণে ইউক্রেনের আকাশ যুদ্ধের কালো মেঘে ঢাকা পড়েছে। ক্রমাগত ‘রক্তক্ষরণে’ ধ্বংস হয়েছে সে দেশের একের পর আবাসন, হাসপাতাল, দোকানপাট। যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই পশ্চিমি নেতারা কিভকে সমর্থন করছেন। বহু আলাপ আলোচনা হয়েছে। উঠে এসেছে বিভিন্ন মতামত। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। ফলে রক্তপাতও বন্ধ হয়নি।