Afghanistan Situation

পাকিস্তানের মদতে আফগানিস্তান আবার রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধের পথে? হক্কানির বিদ্রোহে চাপে তালিবান

পাক সেনার মদতপুষ্ট তালিবান নেতা সিরাজুদ্দিন হক্কানি ইতিমধ্যেই আফগান সরকারের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তামন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে রাজধানী কাবুল ছেড়েছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৫ ১৪:৫৮
Rumors of Sirajuddin Haqqani resignation from Taliban Ministry aim to destabilize Afghanistan

সিরাজুদ্দিন হক্কানি। —ফাইল ছবি।

বালোচিস্তান এবং খাইবার পাখতুনখোয়ায় ধারাবাহিক হামলায় বিপর্যস্ত পাকিস্তান এ বার প্রত্যাঘাতের পথে। আর তাদের প্রাথমিক নিশানায় আফগানিস্তানের তালিবান সরকার। পাক সেনার মদতপুষ্ট তালিবান নেতা সিরাজুদ্দিন হক্কানি ইতিমধ্যেই আফগান সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে রাজধানী কাবুল ছেড়েছেন বলে কয়েকটি পাক সংবাদমাধ্যমের দাবি। প্রকাশিত কয়েকটি খবরে জানানো হয়েছে, নিজস্ব যোদ্ধাবাহিনীকে নিয়ে খোস্ত প্রদেশে ঘাঁটি গেড়েছেন তিনি।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে অদূর ভবিষ্যতে পাকিস্তানের মদতে আফগানিস্তানে আবার রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। তালিবানপ্রধান হায়বাতুল্লা আখুন্দজাদা বর্তমানে অসুস্থ। নেতৃত্বের রাশ প্রধানমন্ত্রী হাসান আখুন্দ, উপপ্রধানমন্ত্রী আব্দুল গণি বরাদর এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মহম্মদ ইয়াকুবের হাতে। তালিবানের প্রতিষ্ঠাতা এবং ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তালিবান সরকারের নেতা মোল্লা ওমরের পুত্র মধ্য তিরিশের ইয়াকুবের সঙ্গে সিরাজুদ্দিনের সংঘাত ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে।

২০১৬ সালে যখন তালিবানের নতুন নেতা খোঁজা শুরু হয়, ইয়াকুব খুব একটা জোরের সঙ্গে নিজেকে সামনে আনেননি। কিন্তু ২০২১ সালের অগস্টে তালিবানের কাবুল পুনর্দখলের পরে ধীরে ধীরে শক্তি সংহত করতে শুরু করেন তিনি। আর তা নিয়ে সংঘাত বাধে সিরাজুদ্দিনের সঙ্গে। সিরাজুদ্দিন তাঁর বাবা জালালুদ্দিনের পরে হক্কানি গোষ্ঠী হস্তগত করেছিলেন। একদা তাঁর মাথার দাম ৫০ লক্ষ ডলার পর্যন্ত হেঁকেছিল আমেরিকা। হক্কানি নেটওয়ার্ক একটি জঙ্গি সংগঠন কিন্তু তার অস্তিত্ব তালিবানের থেকে আলাদা। তারা অনেকটাই বেশি ঘনিষ্ঠ পাক গুপ্তচর সংগঠন আইএসআই-এর সঙ্গে।

পাকিস্তানের উত্তরে ওয়াজ়িরিস্তান হক্কানি নেটওয়ার্কের মূল ঘাঁটি। আফগানিস্তানে পূর্বতন গণতান্ত্রিক সরকারের জমানায় একাধিক বার কাবুলের ভারতীয় দূতাবাসে হামলা চালিয়েছে হক্কানি নেটওয়ার্ক। গত ডিসেম্বরে সিরাজুদ্দিনের কাকা তথা তালিবান সরকারের শরণার্থী বিষয়ক মন্ত্রী খলিল হক্কানি কাবুলে এক আত্মঘাতী হামলায় নিহত হয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে, তার পর থেকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি সিরাজুদ্দিনকে। ওই ঘটনার পিছনে তালিবান নেতৃত্বের একাংশের মদত রয়েছে বলেও জল্পনা তৈরি হয়েছিল।

বালোচিস্তানে সম্প্রতি ট্রেন অপহরণের ঘটনার পরেই ইসলামাবাদ অভিযোগ তুলেছিল, আফগান তালিবানের একাংশের মদতে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং বালোচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্ট (বিএলএ) একের পর এক নাশকতা ঘটাচ্ছে। ২০২৩ সালে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পরে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছিল টিটিপি। বিদ্রোহী ওই পাশতুন গোষ্ঠীর অভিযোগ ছিল, সংঘর্ষবিরতি ভেঙে পাক সেনা এবং ‘কাউন্টার টেররিজ়ম ডিপার্টমেন্ট’ (সিটিডি)-এর যৌথবাহিনী অভিযান শুরু করার ফলেই অশান্তি ছড়িয়েছে খাইবার-পাখতুনখোয়ায়। এর পরে গত বছর পাক বায়ুসেনা আফগান মাটিতে টিটিপির শিবিরে হামলা চালানোয় সীমান্তে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।

Advertisement
আরও পড়ুন