Sindhudesh Revolutionary Army

এ বার কি বালোচিস্তান, খাইবার পাখতুনখোয়ার পথে সিন্ধুও? চার গোষ্ঠীর নতুন জোটে চিন্তায় পাক-চিন

বালোচিস্তানে ট্রেন অপহরণের আগেই তিন বালোচ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সিন্ধুতে সক্রিয় সশস্ত্র সংগঠন ‘সিন্ধুদেশ রেভনিউশনারি আর্মি’ (এসআরএ) হাত মেলানোর

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫ ১৫:৪১

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বালোচিস্তান, খাইবার পাখতুনখোয়াই শেষ নয়। পাকিস্তান জুড়ে পঞ্জাবি আধিপত্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আঁচ ছড়াতে পারে এ বার সিন্ধুপ্রদেশেও! যার জেরে অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে চিনা বিনিয়োগের ‘ভবিষ্যৎ’। সম্প্রতি তিন বালোচ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সিন্ধুতে সক্রিয় সশস্ত্র সংগঠন ‘সিন্ধুদেশ রেভলিউশনারি আর্মি’ (এসআরএ) হাত মেলানোর এমনই সম্ভাবনা দেখছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের অনেকে।

Advertisement

গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ৪৪০ জন সওয়ারি সমেত বালোচিস্তানের রাজধানী কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস কব্জা করেছিল বিদ্রোহী বালোচ গোষ্ঠী বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। ঘটনাচক্রে, তার ঠিক এক সপ্তাহ আগেই আরও দুই সশস্ত্র বালোচ গোষ্ঠী, বালোচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্ট (বিএলএফ) এবং বালোচ রিপাবলিকান গার্ডস (বিআরজি)-এর সঙ্গে দীর্ঘ মতবিরোধে ইতি টেনে নতুন যৌথবাহিনী গড়ার ঘোষণা করেছিল বিএলএ।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ‘ন্যাশনাল আর্মি অফ বালোচিস্তান’ (স্থানীয় ভাষায় নাম, ‘বালোচ রাজ়ি আজ়োই সিঞ্জর’ বা ব্রাস) নামে ওই যৌথবাহিনীতে শামিল হওয়ার কথা জানিয়েছিল এসআরএ-ও। পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম বার বালোচ এবং সিন্ধু বিদ্রোহীদের হাত মেলানোর ঘটনা ইসলামাবাদের পাশাপাশি বেজিংকেও চাপে ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। গত বছর আফগানিস্তানের মাটিতে তালিবান নেতৃত্বের একাংশের মদতে বালোচ বিদ্রোহীদের সঙ্গে খাইবার পাখতুনখোয়ায় সক্রিয় দুই গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি), জইস-উল ফুরসানের সমঝোতার খবর প্রকাশ্যে এসেছিল।

ঘটনাচক্রে, তার পরেই ওই দুই প্রদেশে পাক সেনা এবং ফ্রন্টিয়ার কোর আধাসেনা বাহিনীর উপর বিদ্রোহীদের হামলা ক্রমশ বাড়ছে। বালোচিস্তানে জাফর এক্সপ্রেস অপহরণের রেশ কাটতে না কাটতেই শুক্রবার খাইবার পাখতুনখোয়ার দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের একটি মসজিদে বিস্ফোরণে কয়েক জন হতাহত হয়েছেন। ঘটনার জন্য টিটিপিকে দুষেছে পুলিশ। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে কুনরি এবং গাদালারের মাঝামাঝি এলাকায় মাশকাফের আট নম্বর পাহাড়ি সুড়ঙ্গের সামনে জাফর এক্সপ্রেস কব্জায় আনার পরেই ঘটনার দায় স্বীকার করেছিল বিএলএ। বালোচিস্তান থেকে পাকিস্তান এবং চিনকে হাত গোটানোর শর্ত দেওয়ার পাশাপাশি বালোচ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির শর্ত রেখেছিল তারা। কিন্তু সেই দাবি না মেনে, পাক সেনার ‘স্পেশ্যাল সার্ভিস গ্রুপ’ (এসএসজি)-এর কমান্ডো অভিযানের ফলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

বালোচ বিদ্রোহীরা আগেই গ্বদর বন্দর এবং চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (সিপিইসি) প্রকল্প থেকে চিনকে দূরের সরানোর দাবি তুলেছে। চিনের শিনজিয়াং প্রদেশের কাশগড় থেকে শুরু হওয়া রাস্তা কারাকোরাম পেরিয়ে ঢুকেছে পাকিস্তানে। ১৩০০ কিলোমিটার ছুটে গিয়ে রাস্তা শেষ হয়েছে বালোচিস্তান প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তের গ্বাদর বন্দরে। সুদীর্ঘ বাই-লেন মহাসড়কের পোশাকি নাম সিপিইসি। এই সুদীর্ঘ সড়ক পথ চিনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ কর্মসূচির অন্যতম প্রধান অঙ্গ তো বটেই, চিন-পাকিস্তান সম্পর্কের ক্ষেত্রেও সিপিইসি এক মাইলফলক— দাবি বেজিং‌-ইসলামাবাদের। কিন্তু এর সাহায্যে চিন বালোচিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদ লুট করছে বলে অভিযোগ বিএলএর। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, সিন্ধুর করাচি বন্দরে চিনা ‘হস্তক্ষেপের’ বিরুদ্ধে সরব হয়েছে এসআরএ-ও।

Advertisement
আরও পড়ুন