মেয়রের বাড়িতে গাড়ি নিয়ে ধাক্কা বিক্ষোভকারীদের। ছবি: টুইটার।
ক্রমেই বিক্ষোভ আরও জোরালো হচ্ছে ফ্রান্সে। এ বার প্যারিসের দক্ষিণে এক শহরের মেয়রের বাড়িতে গাড়ি নিয়ে সজোরে ধাক্কা দিলেন বিক্ষোভকারীরা। লে-লে-রোসে শহরের মেয়র ভ্যাঁসঁ জঁব্রু জানিয়েছেন, এই ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর স্ত্রী এবং এক সন্তান। তিনি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, শনিবার রাতে বাড়ির ভিতর ঘুমিয়ে ছিল তাঁর পরিবার। তখন গাড়ি চালিয়ে বাড়িতে সজোরে ধাক্কা দেন বিক্ষোভকারীরা। তার পর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন।
সম্প্রতি প্যারিসে ট্রাফিক আইন ভাঙার জন্য ১৭ বছরের এক কিশোরকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। তার পর থেকেই উত্তাল ফ্রান্স। রবিবার সকালে সে দেশে আরও ৭১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যেই শনিবার রাতে প্যারিসের দক্ষিণের এক শহরের মেয়রের বাড়িতে চড়াও হলেন বিক্ষোভকারীরা। মেয়র সমাজমাধ্যমে এই ঘটনাকে ‘কাপুরুষোচিত খুনের চেষ্টা’ বলে জানিয়েছেন।
ফ্রান্সের এই পরিস্থিতি এমানুয়েল মাকরঁ সরকারের সামনে বড়সড় চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেছে। তুলনামূলক কম রোজগেরে মানুষদের ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। প্রশাসনের বিরুদ্ধে বর্ণবৈষম্য-সহ একাধিক অভিযোগ এনেছেন তাঁরা।
প্যারিসের পরিস্থিতি লক্ষ করে জার্মান সফরে যাওয়ার দিন পিছিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল মাকরঁ। জার্মান সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে যে মাকরঁ তাদের প্যারিসের পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন। সফরের দিন পিছিয়ে যাওয়ায় দুঃখপ্রকাশও করেছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফ্রান্সের রাস্তায় মাকরঁ সরকারের তরফে নতুন করে ৪৫ হাজার পুলিশ এবং আধাসেনা মোতায়েন করা হয়েছে। তার মধ্যে শুধুমাত্র প্যারিসেই পাঁচ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। রাস্তায় সাঁজোয়া গাড়িও নামানো হয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। সরকারি সূত্রের খবর, বহু দোকান, ইমারত জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। লুট করা হয়েছে বন্দুকের দোকানও। ৪৯২টি সরকারি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয় প্রায় দু’হাজার গাড়ি। এ ছাড়াও প্রায় চার হাজার জায়গায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মার্সেই শহরের বৃহত্তম গ্রন্থাগারও। পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে সেই গ্রন্থাগারের বেশির ভাগ বই। ঘটনাটির ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যাসত্য যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্যারিসে ছড়িয়ে পড়া হিংসার ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় ৩০০ পুলিশ আধিকারিক। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বেশির ভাগই তরুণ প্রজন্ম বলে জানিয়েছে মাকরঁ সরকার। সে কারণেই নিজের সন্তানদের হিংসা থেকে দূরে রাখার জন্য অভিভাবকদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল মাকরঁ।
Cette nuit, un cap a été franchi dans l'horreur et l'ignominie. Mon domicile a été attaqué et ma famille victime d'une tentative d’assassinat.
— Vincent Jeanbrun (@VincentJeanbrun) July 2, 2023
Ma détermination à protéger et servir la République est plus grande que jamais. Je ne reculerai pas. #PasPourRien #Emeutes ⤵️ pic.twitter.com/9HW1eAFCXN