Tibet Earthquake 2025

দুয়ারে এভারেস্ট, রাতে তাপমাত্রা নামবে মাইনাস ১৮ ডিগ্রিতে! গৃহহীনদের উদ্ধারই চ্যালেঞ্জ তিব্বতে

ভূমিকম্পের উৎসস্থল তিব্বতের তিংরি। এখান থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে এভারেস্ট। এভারেস্টের উত্তরের প্রবেশদ্বার বলে এই অঞ্চলকে। ভূমিকম্পে এখানে হাজারের বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘরছাড়া হয়েছেন অনেকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:১৯
মঙ্গলবার সকালে তিব্বতে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজারেরও বেশি বাড়ি।

মঙ্গলবার সকালে তিব্বতে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজারেরও বেশি বাড়ি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

তিব্বতের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজারেরও বেশি বাড়ি। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তিব্বতের তিংরি প্রদেশ। ৭.১ মাত্রার জোরালো ভূমিকম্পের উৎসস্থল এখানেই। আর উৎসস্থলের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে তিনটি শহর এবং ২৭টি গ্রাম। জনসংখ্যা প্রায় সাত হাজার। ভূমিকম্পের ধাক্কা কাটাতে না কাটতেই এই অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। উৎসস্থল থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার উত্তরে রয়েছে মাউন্ট এভারেস্ট। এটিকে এভারেস্টের উত্তরের প্রবেশদ্বার বলা হয়। মঙ্গলবার রাতে এই অঞ্চলের তাপমাত্রা মাইনাস ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ধ্বংসস্তূপে ভরা শহরে ঘরছাড়া মানুষেরা কোথায় আশ্রয় নেবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু হয়েছে।

Advertisement

নেপাল সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলে ভূমিকম্পের সময়েও তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে ছিল। সকালে মাইনাস ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল তাপমাত্রা। এই পরিস্থিতির মধ্যেই চিনা ফৌজ তিব্বতের ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলিতে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। ভূমিকম্পের পর বেশ কিছু ভিডিয়োও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। তারা জানিয়েছে, ওই ভিডিয়োটি তিব্বতের লাৎসে শহরের কাছে। ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, রাস্তার ধারে দোকান ভেঙে পড়েছে। ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে রাস্তার উপর। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর এক প্রতিবেদন অনুসারে, ভূমিকম্পের উৎসস্থলের কাছাকাছি অঞ্চলে প্রচুর বাড়ি ভেঙে পড়েছে।

মাউন্ট এভারেস্টের পাদদেশে এই অঞ্চলটি পর্বতারোহীদের অন্যতম পছন্দের জায়গা। মঙ্গলবারের ভূমিকম্পে এই অঞ্চলে এখনও পর্যন্ত ৯৫ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১৩০ জন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় আট লক্ষ মানুষ। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, প্রথম জোরালো ভূমিকম্পের পরের তিন ঘণ্টায় প্রায় ৫০ বার কম্পন (আফটারশক) অনুভূত হয়েছে এই অঞ্চলে। যার জেরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, বাড়িগুলির দুর্বল গড়নের জন্যই এত বেশি পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছেন তিংরির বাসিন্দারা। তিংরিতে একটি সুপার মার্কেটের মালিক সাংজি দাংজ়ি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওই সুপার মার্কেটটিও। তিনি জানান, উদ্ধার অভিযান শুরুর পর থেকে সারা দিন ধরে আহতদের অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, “এখানকার অনেক বাড়িই মাটির তৈরি। ফলে ভূমিকম্পে প্রচুর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

এভারেস্টের কাছে এই হিমশীতল পরিবেশে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ সরবরাহ শুরু করেছে চিনা প্রশাসন। কাপড়ের তাঁবু, কম্বল এবং এই ধরনের শীতল জায়গার বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিলি করা হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায়। চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা জিনহুয়া জানিয়েছে, স্থানীয় দমকলকর্মী এবং উদ্ধারকারী মিলিয়ে দেড় হাজারেরও বেশি জনের একটি দলকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পাঠানো হয়েছে। ত্রাণের জন্য পাঠানো হয়েছে ২২ হাজার তাঁবু। এ ছাড়া শীতের পোশাক, কম্বল, ভাঁজ করা বিছানাও পাঠানো হয়েছে।

Advertisement
আরও পড়ুন